রম্য-ভিক্ষাবৃত্তির হাট-বাজারে by সাইফুল আলম
'এই গাধা, বাবা না, আব্বা ক। ক, আব্বা গো, আমি অচল বান্দা। কাম-কাজ করবার পারি না। কিছু খয়রাত দ্যান। আব্বা গো_ ও আব্বা।' কথাগুলো কানে যেতেই আমি আর আমার বন্ধু কিসমিস আলী চমকে উঠে রাস্তার ধারে থমকে দাঁড়ালাম। জনগণের গামছা বাঁধা ঘনত্বটাকে ঠেলে ঠেলে আমরা দু'জন নিউমার্কেটের এক নম্বর গেট দিয়ে ভেতরে
ঢোকার চেষ্টা করছিলাম। এরই মধ্যে দৃশ্যটা আমাদের যেন মাধ্যাকর্ষণ শক্তিতে আটকে দিল। লক্ষ্য করলাম, গেটের একটু দূরে রাস্তার ধারে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি ১৩ কি ১৪ বছরের একটি অর্ধ বিকলাঙ্গ বালককে পথচারীদের কাছ থেকে ভিক্ষা আদায় করার সিস্টেম শেখাচ্ছে। আমরা নিজেদের আড়াল করে বিষয়টা উপলব্ধি করতে লাগলাম। মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিটি একজন অভিজ্ঞ অধ্যাপকের মতো তার শিক্ষানবিশটিকে শেখাতে লাগল, 'এই ব্যাটা এইভাবে কবি_ আব্বা গো সারাডা দিন কিছু খাই নাই। কিছু দ্যান, একডা রুটি কিনা খাব।' তার কথা শুনে বালকটি বলল, 'সে কি ওস্তাদ, আমি দুইবার রুটি আর ডাল ভুনা খাইছি। মিছা কমু ক্যান?' এবার লোকটি ধমক দিয়ে বলল, 'বেশি কথা কবি না কইলাম।'
ইতিমধ্যে জনস্রোতের চাপ সহ্য করতে না পেরে আমরা আমাদের দেহযুগলকে কোনো রকমে রক্ষা করে মার্কেটের মধ্যে প্রবেশ করলাম। শুক্রবারের বিকেল তখন সন্ধ্যার দিকে গড়াচ্ছে। আমরা অতিকষ্টে একটা নিম্নমানের ফাঁকা স্থানে অবস্থান নিলাম। কারও মুখে কোনো কথা নেই। খানিক বাদে কিসমিস আলাপের মুখবন্ধটা উন্মোচন করে বলল, 'দোস্ত, লক্ষ্য করেছ লোকটা ওই বাচ্চাটাকে শুধু ভিক্ষাবৃত্তিই রপ্ত করাচ্ছে না বরং তার শিশু মানসিকতায় প্রতারণার বীজ বুনে দিচ্ছে।' আমি ওর মন্তব্যটাকে আরও পুষ্টিকর করার জন্য বললাম, দোস্ত, তুমি যথার্থই বলেছ। আমাদের দেশে আজকাল ভিক্ষাবৃত্তি পেশাটা যেন মহামারির আকার ধারণ করেছে। আর একটা বিশেষ চক্র নানা ঢঙে ব্যবসাটাকে ব্র্যান্ডে পরিণত করেছে। আমার কথায় বয়সের ভারে ডুবে যাওয়া কিসমিসের গাল দুটি যেন পুলকিত হয়ে কিঞ্চিৎ ভেসে উঠল। ও এবার আমার কাছে কিছুটা নিবিড় হয়ে বলল, দোস্ত, তুমি যেন সমস্যাটার শিকড়ে বাক্য নিক্ষেপ করলে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এক বিশেষ চক্র দেশের নানা স্থান থেকে বিকলাঙ্গ নারী-পুরুষদের সংগ্রহ করে শহরাঞ্চলে বিশেষ করে রাজধানীতে এনে এ বাণিজ্যে পোস্টিং দিয়ে বেশ দু'পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে। আমি তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর না দিয়ে চারপাশের চলমান বিশৃঙ্খল মানবগোষ্ঠীকে অবলোকন করছিলাম। কিসমিস এবার তার তর্জনীটাকে তুলে সামনের একটা দৃশ্যে দৃষ্টি ফেলার জন্য আমাকে ইঙ্গিত করল। আমি সেদিকে চেয়ে দেখলাম, ময়লা-ছিন্ন শাড়ি পরিহিত এক মধ্যবয়সী মহিলার কাঁধে, কোলে আর এক হাতে টিকটিকি সদৃশ ক'টি অর্ধ-উলঙ্গ মানবসন্তান কিলবিল করছে। মহিলাটির পুষ্টিহীন দেহবৃক্ষটি ভরাক্রান্ত হয়ে নুয়ে নুয়ে পড়ছে। সে অন্য হাতে তালুটি সামনের দিকে প্রসারিত করে রেখেছে ভিক্ষা পাওয়ার আশায়। আমরা দূর থেকে মহিলাটির চোখ-মুখের কাতরতা লক্ষ্য করলাম বটে, তবে তার নাট্য সংলাপটা কর্ণগোচর হলো না। আমি এবার বললাম, দোস্ত, মাঝে মধ্যে এটাও শোনা যায় যে, ছোট ছোট বাচ্চাকে ভাড়া করে অনেক মহিলা ভিক্ষাবৃত্তির হাট-বাজারে বিনোদিনী সেজে অভিনয় করছে।
_'হ্যাঁ, বিষয়টা নিয়ে অনেক মুখরোচক ঘটনাও ঘটেছে'_ কিসমিস আমার পানে দৃষ্টি ফেলে বলল। আমি বললাম, 'ক'দিন আগে পত্রপত্রিকায় একটি লোমহর্ষক অমানবিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল, তা কি তোমরা স্মৃতিতে অমলিন আছে?' কিসমিস আমার ইঙ্গিতটাকে খপ করে আঁকড়ে ধরে বলল, থাকবে না কেন? ছোট ছোট শিশুদের চুরি করে নানা নিষ্ঠুর পদ্ধতিতে শারীরিক পঙ্গু করে ভিক্ষা ব্যবসায় পুঁজি হিসেবে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। অধুনা বিশ্বে এ ধরনের অমানবিক এবং পশুর চেয়েও অধম কার্যকলাপ মধ্যযুগীয় বর্বরতার পশ্চাতে যেন লাথি মারে। কিসমিস যেন হান্ড্রেড ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড দমে তার এ ফুটন্ত মন্তব্যটা পরিবেশন করল। আমি ওর বিষোদ্গারে খানিকটা দমকলের পানি ছিটিয়ে শীতল করার প্রয়াসে বললাম, বিভিন্ন সমাজসেবামূলক ও মানবাধিকার সংস্থা বিষয়টি আমলে নিয়েছে বলে জেনেছি। আমার মন্তব্যের কোনো উত্তর প্রসব না করে কিসমিস এবার সামনের দিকে দু'কদম এগিয়ে জনস্রোতের ককটেলে নিজেকে যেন ব্লেন্ডিং করতে উদ্যত হলো। আমিও সচল হয়ে ওর পিছু নিলাম। খানিকটা অবৈধ ধস্তাধস্তির পর আমরা একটা উন্নতমানের ফাঁকা স্থানে অবস্থান নিলাম। কিসমিস এবার তার প্রাচীন ফুসফুস দুটোয় একটা লম্বা নিঃশ্বাস চালান দিয়ে বলল, 'দোস্ত, একটা বিশেষ দৃশ্য আমার মনটাকে বিচলিত করে, যা আমাদের ভবিষ্যতের হুমকির শামিল।' আমি মুখের বাক্য ক্ষয় না করে জিজ্ঞাসা সংবলিত দৃষ্টিতে ওর পানে তাকাতেই বলল, নগরীতে প্রায়ই দেখা যায় অনেক শারীরিক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুককে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে বেশ গাইড করে নিয়ে বেড়াচ্ছে আবার নিজেরাও নানা ভঙ্গিতে পথচারীদের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করছে। আমি এই সাধারণ দৃশ্যটা নিয়মিত অবলোকন করলেও প্রতিক্রিয়াটাকে মনের বেদিতে কখনও স্থান দিইনি। কিন্তু কিসমিসের অন্তর্দৃষ্টিটা যেন ভবিষ্যতের অবক্ষয়টাকে পিছু ধাওয়া করতে ছাড়েনি। আমি ওকে প্রশংসিত করে বললাম, 'দোস্ত, অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়ে যাওয়া এসব শিশু দেশের জন্য বিপজ্জনক।' আমার কথা কিসমিস তার স্বাস্থ্যবান ভাবনাটায় যেন দ্রুত সঞ্চালন করে বলল, 'দোস্ত, তোমার মন্তব্যটি প্রাচীন হলেও চিরঞ্জীবী সুধার মতো।' আমি এবার প্রসঙ্গ পাল্টে বললাম, কিন্তু দেশের এ মহামারি আকারের সমস্যাটার সমাধান কী?
_'সত্যিকারের নিঃস্ব, দরিদ্র আর শারীরিক প্রতিবন্ধীরা সামর্থ্যবানদের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার অধিকার রাখে। তবে বিষয়টাকে হীন মনোবৃত্তির সঙ্গে জড়ানো ঠিক নয়।'
_'তা যথার্থ বলেছ।'
_'হ্যাঁ, তাই সরকারিভাবে এদের পুনর্বাসন এবং হাতের কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা একটি উত্তম পন্থা।'
কথাগুলো যেন বাতাসের বুকে ছুড়ে দিয়ে কিসমিস এবার আমাকে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে পা ফেলল।
ডা. সাইফুল আলম : ডেন্টাল সার্জন, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ইতিমধ্যে জনস্রোতের চাপ সহ্য করতে না পেরে আমরা আমাদের দেহযুগলকে কোনো রকমে রক্ষা করে মার্কেটের মধ্যে প্রবেশ করলাম। শুক্রবারের বিকেল তখন সন্ধ্যার দিকে গড়াচ্ছে। আমরা অতিকষ্টে একটা নিম্নমানের ফাঁকা স্থানে অবস্থান নিলাম। কারও মুখে কোনো কথা নেই। খানিক বাদে কিসমিস আলাপের মুখবন্ধটা উন্মোচন করে বলল, 'দোস্ত, লক্ষ্য করেছ লোকটা ওই বাচ্চাটাকে শুধু ভিক্ষাবৃত্তিই রপ্ত করাচ্ছে না বরং তার শিশু মানসিকতায় প্রতারণার বীজ বুনে দিচ্ছে।' আমি ওর মন্তব্যটাকে আরও পুষ্টিকর করার জন্য বললাম, দোস্ত, তুমি যথার্থই বলেছ। আমাদের দেশে আজকাল ভিক্ষাবৃত্তি পেশাটা যেন মহামারির আকার ধারণ করেছে। আর একটা বিশেষ চক্র নানা ঢঙে ব্যবসাটাকে ব্র্যান্ডে পরিণত করেছে। আমার কথায় বয়সের ভারে ডুবে যাওয়া কিসমিসের গাল দুটি যেন পুলকিত হয়ে কিঞ্চিৎ ভেসে উঠল। ও এবার আমার কাছে কিছুটা নিবিড় হয়ে বলল, দোস্ত, তুমি যেন সমস্যাটার শিকড়ে বাক্য নিক্ষেপ করলে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এক বিশেষ চক্র দেশের নানা স্থান থেকে বিকলাঙ্গ নারী-পুরুষদের সংগ্রহ করে শহরাঞ্চলে বিশেষ করে রাজধানীতে এনে এ বাণিজ্যে পোস্টিং দিয়ে বেশ দু'পয়সা কামিয়ে নিচ্ছে। আমি তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর না দিয়ে চারপাশের চলমান বিশৃঙ্খল মানবগোষ্ঠীকে অবলোকন করছিলাম। কিসমিস এবার তার তর্জনীটাকে তুলে সামনের একটা দৃশ্যে দৃষ্টি ফেলার জন্য আমাকে ইঙ্গিত করল। আমি সেদিকে চেয়ে দেখলাম, ময়লা-ছিন্ন শাড়ি পরিহিত এক মধ্যবয়সী মহিলার কাঁধে, কোলে আর এক হাতে টিকটিকি সদৃশ ক'টি অর্ধ-উলঙ্গ মানবসন্তান কিলবিল করছে। মহিলাটির পুষ্টিহীন দেহবৃক্ষটি ভরাক্রান্ত হয়ে নুয়ে নুয়ে পড়ছে। সে অন্য হাতে তালুটি সামনের দিকে প্রসারিত করে রেখেছে ভিক্ষা পাওয়ার আশায়। আমরা দূর থেকে মহিলাটির চোখ-মুখের কাতরতা লক্ষ্য করলাম বটে, তবে তার নাট্য সংলাপটা কর্ণগোচর হলো না। আমি এবার বললাম, দোস্ত, মাঝে মধ্যে এটাও শোনা যায় যে, ছোট ছোট বাচ্চাকে ভাড়া করে অনেক মহিলা ভিক্ষাবৃত্তির হাট-বাজারে বিনোদিনী সেজে অভিনয় করছে।
_'হ্যাঁ, বিষয়টা নিয়ে অনেক মুখরোচক ঘটনাও ঘটেছে'_ কিসমিস আমার পানে দৃষ্টি ফেলে বলল। আমি বললাম, 'ক'দিন আগে পত্রপত্রিকায় একটি লোমহর্ষক অমানবিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল, তা কি তোমরা স্মৃতিতে অমলিন আছে?' কিসমিস আমার ইঙ্গিতটাকে খপ করে আঁকড়ে ধরে বলল, থাকবে না কেন? ছোট ছোট শিশুদের চুরি করে নানা নিষ্ঠুর পদ্ধতিতে শারীরিক পঙ্গু করে ভিক্ষা ব্যবসায় পুঁজি হিসেবে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। অধুনা বিশ্বে এ ধরনের অমানবিক এবং পশুর চেয়েও অধম কার্যকলাপ মধ্যযুগীয় বর্বরতার পশ্চাতে যেন লাথি মারে। কিসমিস যেন হান্ড্রেড ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড দমে তার এ ফুটন্ত মন্তব্যটা পরিবেশন করল। আমি ওর বিষোদ্গারে খানিকটা দমকলের পানি ছিটিয়ে শীতল করার প্রয়াসে বললাম, বিভিন্ন সমাজসেবামূলক ও মানবাধিকার সংস্থা বিষয়টি আমলে নিয়েছে বলে জেনেছি। আমার মন্তব্যের কোনো উত্তর প্রসব না করে কিসমিস এবার সামনের দিকে দু'কদম এগিয়ে জনস্রোতের ককটেলে নিজেকে যেন ব্লেন্ডিং করতে উদ্যত হলো। আমিও সচল হয়ে ওর পিছু নিলাম। খানিকটা অবৈধ ধস্তাধস্তির পর আমরা একটা উন্নতমানের ফাঁকা স্থানে অবস্থান নিলাম। কিসমিস এবার তার প্রাচীন ফুসফুস দুটোয় একটা লম্বা নিঃশ্বাস চালান দিয়ে বলল, 'দোস্ত, একটা বিশেষ দৃশ্য আমার মনটাকে বিচলিত করে, যা আমাদের ভবিষ্যতের হুমকির শামিল।' আমি মুখের বাক্য ক্ষয় না করে জিজ্ঞাসা সংবলিত দৃষ্টিতে ওর পানে তাকাতেই বলল, নগরীতে প্রায়ই দেখা যায় অনেক শারীরিক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুককে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে বেশ গাইড করে নিয়ে বেড়াচ্ছে আবার নিজেরাও নানা ভঙ্গিতে পথচারীদের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করছে। আমি এই সাধারণ দৃশ্যটা নিয়মিত অবলোকন করলেও প্রতিক্রিয়াটাকে মনের বেদিতে কখনও স্থান দিইনি। কিন্তু কিসমিসের অন্তর্দৃষ্টিটা যেন ভবিষ্যতের অবক্ষয়টাকে পিছু ধাওয়া করতে ছাড়েনি। আমি ওকে প্রশংসিত করে বললাম, 'দোস্ত, অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়ে যাওয়া এসব শিশু দেশের জন্য বিপজ্জনক।' আমার কথা কিসমিস তার স্বাস্থ্যবান ভাবনাটায় যেন দ্রুত সঞ্চালন করে বলল, 'দোস্ত, তোমার মন্তব্যটি প্রাচীন হলেও চিরঞ্জীবী সুধার মতো।' আমি এবার প্রসঙ্গ পাল্টে বললাম, কিন্তু দেশের এ মহামারি আকারের সমস্যাটার সমাধান কী?
_'সত্যিকারের নিঃস্ব, দরিদ্র আর শারীরিক প্রতিবন্ধীরা সামর্থ্যবানদের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার অধিকার রাখে। তবে বিষয়টাকে হীন মনোবৃত্তির সঙ্গে জড়ানো ঠিক নয়।'
_'তা যথার্থ বলেছ।'
_'হ্যাঁ, তাই সরকারিভাবে এদের পুনর্বাসন এবং হাতের কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা একটি উত্তম পন্থা।'
কথাগুলো যেন বাতাসের বুকে ছুড়ে দিয়ে কিসমিস এবার আমাকে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে পা ফেলল।
ডা. সাইফুল আলম : ডেন্টাল সার্জন, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
No comments