চীন-জাপান বাণিজ্যিক সম্পর্কে টানাপোড়েন

চীন-জাপান ব্যবসায়িক সম্পর্কে এবার টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। জাপানের একাধিক প্রতিষ্ঠান চীনে তাদের বেশ কয়েকটি কারখানার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। প্যানাসনিকসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদমাধ্যম সূত্র গতকাল সোমবার এ খবর জানিয়েছে।


চীনের বিভিন্ন স্থানে জাপানবিরোধী সহিংস বিক্ষোভকালে এসব কারখানায় হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পূর্ব চীন সাগরে অবস্থিত বিরোধপূর্ণ দ্বীপ এলাকা নিয়ে চীন ও জাপানের মধ্যে সম্প্রতি উত্তেজনা দেখা দেয়। এলাকাটি চীনে দিয়াওউ এবং জাপানে সেনকাকু নামে পরিচিত। জাপান ওই এলাকার তিনটি দ্বীপ সম্প্রতি কিনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এরপর পাল্টা ওই এলাকায় নজরদারির জন্য জাহাজ পাঠায় চীন। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ ওই দ্বীপ এলাকা তাইওয়ানও নিজেদের বলে দাবি করে।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, জাপানি ইলেকট্রনিক সামগ্রী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্যানাসনিক চীনের কিংদাও শহরে তাদের কয়েকটি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। ক্যামেরা ও প্রিন্টার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ক্যানন চীনে তাদের মূল চারটি কারখানার মধ্যে তিনটির কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে। প্যানাসনিকের একজন মুখপাত্র বলেন, পরিস্থিতির ওপর তাঁরা আরও দুই দিন নজর রাখবেন।
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেট্টা কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে চলমান চীন-জাপান বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানান। ভুল বোঝাবুঝিতে পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নিতে পারে বলে এর আগে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি।
জাপানের ওপর অবরোধ আরোপের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র পিপলস ডেইলির এক মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিরোধের মুখে জাপান যদি উসকানিমূলক অবস্থান থেকে সরে না আসে, তাহলে পাল্টা জবাব দেওয়া চীনের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়বে। জাপানের অর্থনীতি চীনের তুলনায় নাজুক।
জাপানের ওপর বাণিজ্যিক অবরোধ আরোপ করা হলে দেশটির অর্থনীতি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। জাপানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। এশিয়ার এই শীর্ষ দুই অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক অবরোধ আরোপিত হলে গোটা মহাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই সুযোগে পশ্চিমা দেশগুলো বৈশ্বিক মন্দা কাটিয়ে পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। চীনে বেশ কয়েকটি জাপানি প্রতিষ্ঠানের বড় অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা এবং গত বছরের ভূমিকম্পের কারণে জাপানের অর্থনীতি বর্তমানে সংকটকাল অতিক্রম করছে। ২০১০ সালে দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অথনীতির অবস্থান হারায় এবং চীন ওই মর্যাদা অর্জন করে।
জাপানি নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি: জাপানি নাগরিক ও বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে চীন কর্তৃপক্ষ গতকাল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হং লেই বলেন, গোটা পরিস্থিতির উন্নতির বিষয়টি এখন জাপানের ওপর নির্ভর করছে। এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.