ত্রয়োদশ সংশোধনী রাষ্ট্রের ভিত্তি ও মূল কাঠামো খর্ব করেছে by এম বদি-উজ-জামান ও আশরাফ-উল-আলম

ত্রয়োদশ সংশোধনী রাষ্ট্রের ভিত্তি ও সংবিধানের মূল কাঠামো খর্ব করেছে বিধায় তা বাতিল করা হয়েছে। গত রবিবার রাতে প্রকাশিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বেআইনি ঘোষণা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে এ কথা বলা হয়েছে।


দেশ-বিদেশের বিভিন্ন আইন ও মামলার নজির তুলে ধরে রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে কেন সাংঘর্ষিক তা তুলে ধরা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যাখ্যা।
রায়ে বলা হয়েছে, ১৯৯৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনী কিভাবে রাষ্ট্রপতির কার্যক্রমে পরিবর্তন এনেছে তা রায়ে আলোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান নন। প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির নিয়োগ ও পদত্যাগপত্র গ্রহণ ব্যতিরেকে অন্য সব দায়িত্ব পালনে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেবেন। এটাই সাংবিধানিক পরিকল্পনা। কিন্তু ত্রয়োদশ সংশোধনী কার্যকর হলে তাঁর ভূমিকার আমূল পরিবর্তন হয়। সাধারণভাবে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়ক হলেও আইন দ্বারা তাঁর প্রয়োগ নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রকৃত নির্বাহী ক্ষমতা রাজনৈতিক সরকারের ওপরই ন্যস্ত থাকে। কিন্তু ত্রয়োদশ সংশোধনী কার্যকর থাকাকালীন তিনি সরকারের নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী হন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। অথচ সাধারণ সময় দায়িত্ব পালনরত প্রতিরক্ষামন্ত্রী একজন জনপ্রতিনিধি। রাষ্ট্রপতি দেশের সর্বোচ্চ পদের অধিকারী হলেও তিনি সরাসরি প্রজাতন্ত্রের নির্বাচিত প্রতিনিধি নন। মূল সংবিধান প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত করেনি। কাজেই ত্রয়োদশ সংশোধনী এ ক্ষেত্রে সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যকালে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী বা তাঁর প্রতিস্বাক্ষর গ্রহণান্তে কাজ করার বিধানসমূহ অকার্যকর করেছে। কাজেই ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
রায়ে বলা হয়েছে, মৌলিক অধিকার মানুষের অমূল্য সম্পদ ও সভ্যতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কখনো কখনো মৌলিক অধিকার স্থগিত করতে হয়। রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে এই মৌলিক অধিকার স্থগিত করেন। সংবিধানের ১৪১ক(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা জারির ক্ষমতা রয়েছে। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, অনুরূপ ঘোষণার বৈধতার জন্য ঘোষণার আগেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষর প্রয়োজন হবে। এই বিধানটি রাখার কারণ প্রধানমন্ত্রী একজন জনপ্রতিনিধি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জরুরি অবস্থা ঘোষণার পূর্বে সাধারণত অন্য জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন। যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের দ্বারা বাংলাদেশ বা যেকোনো অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন হলে প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ প্রদান করবেন। কিন্তু সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর ৫৮ঙ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে তাঁর স্বীয় বিবেচনা অনুসারে একক সিদ্ধান্তে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই একক ক্ষমতা সাংবিধানিক নিয়মতান্ত্রিক অবস্থানের পরিপন্থী। একই সঙ্গে সংবিধানের ৪৮(৩) ও ১৪১ক(১) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ত্রয়োদশ সংশোধনীর পর ৫৮খ অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুযায়ী নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার যৌথভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে দায়ী থাকবেন। কিন্তু সাধারণ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রিসভার সদস্যরা তাঁদের কাজের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে দায়ী থাকেন না। তাঁরা দায়ী থাকেন সংসদের কাছে। অর্থাৎ জনগণের কাছে দায়ী থাকেন। এটাই গণতান্ত্রিক রীতি ও নীতি। এ অবস্থায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে মূল সংবিধানের শর্ত বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌমত্ব খর্ব হয় এবং জনগণের সার্বভৌমত্বের পরিবর্তে রাজার ন্যায় রাষ্ট্রপতি সার্বভৌম হন। এটা সংবিধানের মৌলিক নীতির পরিপন্থী ও সাংঘর্ষিক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে সংবিধানের ৫৮খ(৪) অনুচ্ছেদের আওতায় নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর তথা জনগণের ভূমিকা অনুপস্থিত থাকে। এটা মূল সংবিধানের মৌলিক আদর্শ ও নীতির সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। গণতন্ত্রকে অনুপস্থিত রেখে তা যত স্বল্প সময়ের জন্যই হোক না কেন, কোনো ব্যবস্থাই সাংবিধানিক হবে না বলে মনে করেন রায় প্রদানকারী বিচারকরা।
সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা রয়েছে। সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় বা এর অধিবেশনকাল ব্যতীত অন্য কোনো সময় আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে বলে সন্তোষজনক মনে হলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করেন। অধ্যাদেশ জারি করতে হলে মন্ত্রিপরিষদে খসড়া অনুমোদন করতে হয়। মন্ত্রিপরিষদ জনগণের প্রতিনিধি। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে উপদেষ্টারা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করেন। তাঁরা জনগণের প্রতিনিধি নন। কাজেই এটা মূল সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ক্ষেত্রে রায়ে বলা হয়েছে, অর্থসংক্রান্ত কোনো অধ্যাদেশ জারি করতে অবশ্যই সংবিধান অনুসরণ করতে হয়। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন মামলার নজির উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়েছে, জনপ্রতিনিধির সম্মতি ব্যতিরেকে কখনোই অর্থসংক্রান্ত কোনো আইন করা যায় না। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে রাষ্ট্রপতি এ ধরনের অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন, যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
রায়ে আরো বলা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে তর্কিত সংশোধনীতে (ত্রয়োদশ সংশোধনী) রাষ্ট্রের প্রজাতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক চরিত্র যেভাবে লুপ্ত হয় তার সঙ্গে মূল সংবিধানের অধীনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আদর্শিক চরিত্রের কোনো সামঞ্জস্য নেই। তর্কিত সংশোধনী মূল সংবিধানের ভিত্তি দুই প্রধান মূল কাঠামো প্রজাতন্ত্র ও গণতন্ত্রের পরিবর্তে গোষ্ঠীতন্ত্র আনয়ন করেছে, যার প্রধান রাষ্ট্রপতি নিজে। এরূপ গোষ্ঠীতন্ত্রের সঙ্গে মূল সংবিধানের স্বতঃসিদ্ধ নীতিগুলো একবারেই অসংগতিপূর্ণ ও সাংঘর্ষিত এবং সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। তা ছাড়া, রাষ্ট্রপতি যদি সংবিধানের ৫৮গ অনুচ্ছেদের (৬) দফা অনুযায়ী স্বীয় দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন তাহলে বাংলাদেশ একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এটিও মূল সংবিধানের স্বতঃসিদ্ধ আদর্শিক নীতিগুলোর সম্পূর্ণ পরিপন্থী ও সাংঘর্ষিক।
সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদ বিশ্লেষণ করে রায়ে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্যরা যদিও পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন, কিন্তু কোনো যুদ্ধ বা জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হলে সেই অবস্থা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংসদ সদস্যরা তাঁদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। এতে প্রতীয়মান হয়, নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ গ্রহণ না করা পর্যন্ত পূর্বের সংসদ সদস্যরা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য মোটেই বিলীন হবে না। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে সংবিধানের ৫৭(৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে তাঁর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি শুধু স্বীয় পদে বহাল থাকেন না, তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্বও করেন। সর্বোপরি প্রাক ত্রয়োদশ সংশোধনীর ক্ষেত্রে মূল ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ অনুসারে সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে মেয়াদান্তে, সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে। এই বিধান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সে ক্ষেত্রে নতুন সংসদ সদস্যরা শপথগ্রহণ না করা পর্যন্ত পূর্বতন সংসদ সদস্যরা নিজেদের অধিকার বলে স্বাভাবিক নিয়মে জনপ্রতিনিধি থাকবেন এবং তাঁদের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন বিরতিহীনভাবে চলমান থাকবে।

পরবর্তী দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক
আগামী দুই মেয়াদে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে, না তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এ ক্ষেত্রে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্যদের দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। এই সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে বিচার বিভাগের কাউকে রাখা যাবে না। রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি ও সংবিধানের মৌল ভিত্তি ক্ষুণ্ন বা খর্ব হয়_এমন কিছু করা যাবে না। ক্ষমতাসীন সরকারই হোক আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারই হোক, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের সময় রাষ্ট্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবেন। ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সে ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভা ছোট (সংক্ষিপ্ত) করতে হবে। মন্ত্রিসভা শুধু দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করবে। এসবের পাশাপাশি জাতীয় সংসদের মেয়াদ (পাঁচ বছর) পূর্ণ হওয়ার ৪২ দিন আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবলিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের অভিমতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির মধ্যে পাঁচজনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সংসদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। সে সময়কার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চারজনের দেওয়া অভিমতে বলা হয়, সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯৬, অসাংবিধানিক ও অবৈধ হলেও জাতীয় সংসদ এর বিবেচনা ও সিদ্ধান্ত অনুসারে বর্ণিত নির্দেশাবলি সাপেক্ষে দশম ও একাদশ সাধারণ নির্বাচনকালীন প্রয়োজনমতো নতুনভাবে ও আঙ্গিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। একজন বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখা-না রাখার এখতিয়ার সংসদের। অপর দুই বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ বলেছেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার গোষ্ঠীতন্ত্র
বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের লেখা রায়ের অভিমতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গঠন পদ্ধতি বর্ণনা করে বলা হয়, সন্দেহ নেই যে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য ১০ জন উপদেষ্টা সবাই অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি এবং জ্ঞানে-গুণে ও শিক্ষায় তাঁরা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অন্যতম। কিন্তু তাঁরা অনির্বাচিত। তাঁরা কোনোভাবেই দেশের জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করেন না। স্বল্প সময়ের জন্য হলেও তাঁরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। তাঁরা সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও সর্বগুণান্বিত হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় এরূপ রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে গোষ্ঠীতন্ত্র (ঙষরমধৎপযু) বলে। অতি স্বল্প সময়ের জন্য হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা একটি গোষ্ঠীতন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়। গোষ্ঠীতন্ত্রের ইতিহাস সভ্যতার মতোই পুরনো। কিন্তু এই রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে আড়াই হাজার বছর আগের গ্রিসের নগরকেন্দ্রিক সভ্যতাও গ্রহণ করেনি। মধ্যযুগের প্রারম্ভে ইউরোপের কোনো কোনো দেশে এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রচলনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ১৮শ শতাব্দী থেকেই প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রের উন্মেষ। অথচ ২১ শতকের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়ে বাঙালি জাতিকে এখন এই গোষ্ঠীতন্ত্রকে গলাধঃকরণ করতে হচ্ছে। উপলক্ষ হচ্ছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ব্যর্থতা।

No comments

Powered by Blogger.