কাপাসিয়ার জনসভায় তোফায়েল আহমেদ- আওয়ামী লীগ আমার জীবন মন্ত্রিত্ব আমার কাছে বড় নয়
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ আমার জীবন। বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে যা পেয়েছি তার কোনো তুলনা হয় না। বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে আমি কাজ করি, সারা জীবন কাজ করে যাব। মন্ত্রিত্ব আমার কাছে বড় বিষয় নয়। বিএনপি রাজনৈতিক কোনো ইস্যু পাচ্ছে না।
তাই মন্ত্রিত্ব না নেওয়া নিয়ে রাজনীতি করছে। এটা ঠিক নয়।’
গতকাল সোমবার বিকেলে গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমির পক্ষে আয়োজিত এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তোফায়েল এসব কথা বলেন।
কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রানীগঞ্জ বাজারে ওই জনসভা হয়। নির্বাচনে সিমিন হোসেনের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তোফায়েল।
তোফায়েল আহমেদ আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন দক্ষতার সঙ্গে উপনির্বাচন পরিচালনা করবে এবং সরকার তাতে সর্বাত্মক সহায়তা করবে বলে জানান তোফায়েল।
দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিনোদ সরকারের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভূমি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ক ম মোজামেঞ্চল হক, শিশু ও মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ, গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক আক্তারুজ্জামান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোমতাজ উদ্দিন, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন মোল্লা।
প্রার্থীদের গণসংযোগ: প্রার্থী সিমিন হোসেন এর আগে সকাল থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের কোট বাজালিয়া, বড়পুশিয়া, চাঁদপুর বাজার, ধরপাড়া, চামুরখি, ভাকোয়াদী, তিলশুনিয়া ও কাজাহাজি এলাকায় গণসংযোগ করেন।
ভোট চাইতে গিয়ে ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি। আগে ছোট পরিসরে দায়িত্ব পালন করেছি। এখন বড় পরিসরে আপনাদের জন্য কাজ করতে চাই।’ ৩০ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে সিমিন হোসেনের চাচা স্বতন্ত্র প্রার্থী আফসারউদ্দীন আহমদ গতকাল সকাল থেকে কাপাসিয়ার বটতলা মোড়, সিংহশ্রী বাজার, বড়িবাড়ী, সোহাগপুর, কপালেশ্বর, নামিলা, কাজল দীঘি, বড়টেক, কুড়িয়াদী, বিবাদিয়া এলাকায় মোরগ মার্কায় ভোট চান।
সিপিবির প্রার্থী আসাদুল্লাহ বাদল মৈশন, খালের ঘাট, বাঘেরহাট, দরদরিয়া, দরগাঁ বাজার, জলপাইতলা, বারাব বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় কাস্তে মার্কায় ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেন।
জবাব দিলেন সিমিন: নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে লিখিত জবাব দিয়েছেন সিমিন হোসেন। উপনির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মিহির সারওয়ার মোর্শেদের কাছে গতকাল বিকেলে ওই জবাব দেন তিনি।
জবাবে সিমিন বলেন, নির্ধারিত সময়সীমার তিন সপ্তাহ আগে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ‘মা’ সমাবেশ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কোনো নির্বাচনী প্রচার চালাননি। তবে ওই দিন স্থানীয় লোকজন তাঁর বাসায় এসেছিলেন।
প্রতীক বরাদ্দের দুই দিন আগে নির্বাচনী এলাকায় প্রতীকসহ পোস্টার লাগানো, প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আফসারউদ্দীনের মাইক ছিনতাই ও তাঁর কর্মী-সমর্থকদের হামলা, মারধরের অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেন সিমিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ দিয়ে আমাকে হয়রানি ও আমার জনপ্রিয়তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। নির্বাচনী কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্যই এ ধরনের অভিযোগ করা হয়েছে।’
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান: রোববার ভ্রাম্যমাণ আদালত কাপাসিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৫টি মামলা ও তিন হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করেন। মোটরসাইকেল আরোহীর হেলমেট, লাইসেন্স ও কাগজপত্র না থাকা এবং দুইয়ের বেশি আরোহী বহনের অভিযোগে ওই সব মামলা ও জরিমানা করা হয়।
নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ওই অভিযান চলছে। একই সঙ্গে তাঁরা নির্বাচনী আচরণবিধির বিষয়টিও দেখভাল করছেন।
সত্যতা নিশ্চিত করে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহনেওয়াজ দিলরুবা খান বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচনের পরদিন পর্যন্ত অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে।
No comments