এইডস সারল স্টেম সেলে!

স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের পাঁচ বছরের মাথায় টিমোথি রে ব্রাউন নামে যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিক মরণব্যাধি এইডস থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে দাবি করেছেন তাঁর চিকিৎসক। গত বুধবার ওয়াশিংটন ইউনি-ভার্সিটিতে এক সিম্পোজিয়ামে ব্রাউনের জার্মান চিকিৎসক ড. গেরো হাটার এ কথা জানান।


ওই অনুষ্ঠানে ব্রাউনও উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ড. হাটারের দাবি সঠিক হয়ে থাকলে এখন পর্যন্ত এইডস থেকে পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করা প্রথম ব্যক্তি টিমোথি রে ব্রাউন। মানুষ মরণব্যাধি এইডস থেকে বাঁচার উপায় খুঁজছে অনেক দিন ধরে। এ ক্ষেত্রে ড. হাটারের চিকিৎসায় প্রথম সাফল্য এলো বলে জানান ব্রাউনও। চিকিৎসাবিজ্ঞানের এ যুগান্তকারী অগ্রগতির কল্যাণে ভবিষ্যতে এইডস আক্রান্ত অন্যরা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এইডস আক্রান্ত টিমোথি ব্রাউনকে নিয়ে কয়েক বছর ধরেই গবেষণা চলছিল। জার্মানির বার্লিনে ড. হাটারের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলায় আগে থেকেই তিনি 'দ্য বার্লিন পেশেন্ট' নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন। বর্তমানে ব্রাউনের বয়স ৪৬ বছর।
ব্রাউনের শরীরের এইডসের জন্য দায়ী এইচআইভি ভাইরাস ধরা পড়ে ১৯৯৫ সালে। ২০০৬ সালে তিনি আবার লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হন। কেমোথেরাপি দেওয়ার পর ব্রাউনের রক্তে স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন দেখা দেয়। ওই পর্যায়ে তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন জার্মানির হেইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ ড. গেরো হাটার।
রক্তে এইচআইভি ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে এমন বিরল বৈশিষ্ট্যের এক রক্তদাতাকে খুঁজে বের করেন ড. হাটার। তাঁর দেহের কোষ নিয়ে ব্রাউনের শরীরে প্রতিস্থাপন উপযোগী স্টেম সেল তৈরি করা হয়। প্রসঙ্গত, উত্তর ইউরোপের কেবল ১ শতাংশ ব্যক্তির শরীরে এইচআইভি প্রতিরোধী এমন বিরল ব্যবস্থা দেখা যায়।
২০০৭ সালে ব্রাউনের শরীরে ওই বিশেষ স্টেম সেল প্রতিস্থাপন করা হয়। এর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি সুস্থ হতে শুরু করেন। সেই থেকে কোনো ওষুধ সেবন ছাড়াই এইচআইভির সংক্রমণ ঠেকিয়ে বেঁচে আছেন ব্রাউন। আর এ কারণে ড. হাটার বলেন, 'এখন নিশ্চিত করে বলা যায় যে এইচআইভি ভাইরাস থেকে ব্রাউন পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করেছেন।'

No comments

Powered by Blogger.