‘আলোক শিখা জ্বলুক প্রাণে’ গান ও কথায় আব্দুল আলীম স্মরণ- সংস্কৃতি সংবাদ

উপমহাদেশের দ্যুতিময় মরমী কণ্ঠশিল্পী আব্দুল আলীম। বাংলা লোকগানের কিংবদন্তি এ শিল্পী জীবন ভাবনা ও ভাববাদী চিন্তার মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন সুরের মায়াজালে। বাংলা লোকগীতির পথিকৃৎ এ শিল্পীকে স্মরণ করা হলো সোমবার। ‘আলোক শিখা জ্বলুক প্রাণে’ সেøাগানে শরতের সন্ধ্যায় এ স্মরণের আয়োজন করে ইউনিভার্সিটি


কালচারাল ফাউন্ডেশন। শিল্পকলা একাডেমীর সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে গান ও কথায় প্রশস্তি জানানো হয় শিল্পীকে। এ আয়োজনে আব্দুল আলীমের বিখ্যাত কিছু গান শোনান উদীয়মান দুই নবীন শিল্পী মাহফুজার রহমান ও ইউনুছুর রহমান। আর আলোচনায় অংশ নেন আব্দুল আলীমের শিষ্য লোকসঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী ও শিল্পীর ছেলে জহির আলীম।
দুই শিল্পী দরদী কন্ঠে গেয়ে শোনান আব্দুল আলীমের গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় ১৬টি গান। মাটির গানের এ আসর শুরু হয় পদ্ম নদীরে গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে। দ্বিতীয় গানে সৃষ্টিকর্তাকে বন্দনা করে গাওয়া হয় আল্লাহু আল্লাহু তুমি জানলে জালালু। এরপর শিল্পীদ্বয় শ্রোতাদের অন্তরে সুরের অনুরণন ছড়িয়ে একে একে গেয়ে যান মনে বড় আশা ছিল যাবো মদিনায়, আমার দেশের মতো, উজান গাংয়ের নাইয়া, পরের জায়গা পরের জমিন, হলুদিয়া পাখি সোনার বরণও, এই যে দুনিয়া, ও আমার পঙ্খীরাজ, প্রেমের মরা জলে ডোবে না, বধূর বাড়ি মধুপুরে, নোঙর ছাড়িয়া নায়ের দেরে দে মাঝি ভাই, আর কতকাল ভাসবো, রূপসী নদীরে, যারে ছেড়ে এলাম ও পদ্মা নদীরে। গানের সুরে যন্ত্রাণুষঙ্গে বাঁশিতে সঙ্গত করেন গাজী আব্দুল হাকিম, তবলায় দেবেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, দোতারায় এস এম রেজা বাবু ও কি-বোর্ডে সুশীল কুমার সরকার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রুমানা শারমীন।
গানের আগে কথামালায় স্মরণ করা হয় মরমী শিল্পীকে। শিল্পীর মূল্যায়ন করে ইন্দ্রমোহন রাজবংশী বলেন, অসম্ভব গানপ্রিয় মানুষ ছিলেন আব্দুল আলীম। সুর ছাড়া তিনি আর কিছুই ভাবতেন না। তাঁর সবচেয়ে বড় সম্পদ ছিল কণ্ঠসম্পদ। নব্বইটির বেশি চলচ্চিত্রে তিনি গান গেয়েছেন। গানের গ্রামোফোন রেকর্ডের সংখ্যা ছিল ছয় শ’র ওপরে। তাঁর গান যাঁরা সরাসরি শুনেছেন তাঁরা ভাগ্যবান। তিনি শিল্পীর গান ভুলভাবে গাওয়ার তথ্য তুলে ধরে বলেন, আব্দুল আলীমকে জানতে হলে তাঁর গান সংগ্রহ করতে হবে। এখন অনেকেই ভুল বাণী ও সুরে তাঁর গান গাইছেন। এমনকি ভুলভাবে আব্দুল আলীমের গান পরিবেশন করে প্রতিযোগিতার বিজয়ীও হচ্ছেন। এ অবস্থায় শিল্পকলা একাডেমীর উদ্যোগে শিল্পীর গানের শুদ্ধ বাণীসমৃদ্ধ বই প্রকাশ করা উচিত। তাহলে হয়ত এই মরমী শিল্পীর গান আর ভুলভাবে উপস্থাপিত হবে না।
গ্যালারি কায়াতে ১৬ শিল্পীর চিত্রকলা প্রদর্শনী
উত্তরার গ্যালারি কায়াতে গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ১৬ শিল্পীর যৌথ চিত্রকলা প্রদর্শনী। প্রদর্শনীর শিরোনাম পানির ছন্দ (ওয়াটার রিদম)। ষোলো শিল্পীর জলরঙে আঁকা ৫৬টি চিত্রকর্মা দিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া শিল্পীরা হলেন কাইয়ুম চৌধুরী, মুর্তজা বশীর, হাশেম খান, রফিকুন নবী, হামিদুজ্জামান খান, চন্দ্র শেখর দে, তরুণ ঘোষ, রতন মজুমদার, কাজী রাকিব, রণজিৎ দাস, মাসুদা কাজী, শিশির ভট্টাচার্য, সমীরণ চৌধুরী, নগরবাসী বর্মণ, কামালুদ্দিন ও সোহাগ পারভেজ। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

No comments

Powered by Blogger.