সংঘাত এড়াতে সংলাপের আহ্বান ইউরোপীয় পার্লামেন্টের, অ্যামনেস্টির ৪ দফা সুপারিশ
বাংলাদেশের
রাজনৈতিক সহিসংতার মহামারী গত কয়েকদিনে চরম আকার ধারণ করায় গভীর উদ্বেগ
প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক প্রতিনিধি দল। ইপি’র
বিবৃতিতে বলা হয়, বাকস্বাধীনতা, সভা-সমাবেশ ও আন্দোলনের অধিকারসহ মৌলিক
অধিকারসমূহকে নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক শক্তিকে শ্রদ্ধা করতে হবে। ইউরোপীয়
পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দল এ পরিস্থিতিতে সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম
প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। ইপি দৃঢ়ভাবে আশা পোষণ করে, বাংলাদেশের
গণতান্ত্রিক ধারা ও উন্নয়নকে আরও বিপদের সম্মুখীন না করতে সরকারি ও বিরোধী
উভয় দলই প্রকৃত সংলাপে বসবে।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অ্যামনেস্টির ৪ দফা সুপারিশ
লন্ডনভিত্তিক
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দেয়া এক
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক সহিংসতা তীব্রতর হওয়ায়, বাংলাদেশের
মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। গত মঙ্গলবার দেয়া ওই বিবৃতিতে
বৃটেনভিত্তিক এ সংগঠনটি বলেছে, গত তিন সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও
গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য শহরের রাজপথে সরকারি ও বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকরা
সহিংস সংঘাতে জড়িয়ে পড়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের চলমান
রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারকে মূলত ৪টি বিষয়
নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বাংলাদেশ সরকারের
প্রতি জানানো আহ্বানে অ্যামনেস্টি বলেছে, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকান্ডের সব ঘটনার
পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে এবং নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়ার আওতায়
দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। কেবল স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও
শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার চর্চার জন্য যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের
মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা যাতে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয়
বলপ্রয়োগ না করেন এবং যেখানে তারা শক্তি প্রয়োগ করবেন, তা যাতে আন্তর্জাতিক
মানদন্ড হয়, তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।
রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান যাতে মানবাধিকার ইস্যুতে বাধ্যবাধকতাসমূহ মেনে
চলে, যার জন্য বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ তা নিশ্চিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান
জানানো হয়েছে। ওই বিবৃতির শুরুতে বলা হয়, রাজপথে অব্যাহত সহিংসতায়
প্রাণহানি বাড়ছেই এবং আহত হচ্ছে মানুষ। এর মধ্যে বিরোধী দলের চাপিয়ে দেয়া
সড়ক অবরোধও চলছে। একই সময়ে সহিংসতার সঙ্গে কোন সম্পৃক্ততার প্রমাণ না থাকা
সত্ত্বেও, বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে সহিংসতা উস্কে দেয়ার
অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারের অনুকূলে নয়, এমন সংবাদ প্রকাশের জন্য
গণমাধ্যমের সম্পাদক ও নির্বাহীদের বিরুদ্ধে হয়রানি অব্যাহত রয়েছে।
সন্দেহভাজন যে কোন বোমা বহনকারীকে গুলি করার ঘোষণা দিয়েছে নিরাপত্তা
বাহিনীসমূহ। এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আদালত
অবমাননা আইনকে দৃশ্যত যেভাবে ব্যবহার করছে, তাতে মানুষের মত প্রকাশের
স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে।
No comments