বাচ্চাটাকে ওরা বাঁচতে দিল না ক্যান? by মানসুরা হোসাইন
‘আমার
বাচ্চাটার কী অপরাধ ছিল? আমি বাচ্চাটাকে নিয়া বাঁচতে চাইছিলাম। সেই
বাচ্চাটাকে ওরা বাঁচতে দিল না ক্যান? আমি খুনিদের ন্যায্যবিচার চাই। আমার
মতন আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। ধাপে ধাপে ওপরে ওঠার বয়স ছিল, আর
এখনই সে ফুরাইয়া গেল।’
আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে বসে এসব কথা বলেন নূরজাহান বেগম। তাঁর বুকভরা বেদনা থেকে যেন নীল টুকরোর মতো পড়ে হাহাকার ও ক্ষোভে ভরা কথাগুলো।
তিনি সানজিদ হোসেন অভির (১৯) মা। গতকাল বুধবার রাত দেড়টার দিকে অভি মারা যান। মর্গে ছেলের লাশের ময়নাতদন্ত চলছিল। মা কিছুতেই তা চাননি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, মামলার প্রয়োজনে এটা করতে হবে।
নূরজাহান বেগম নর্দমার পাশে একটি সিঁড়িতে বসে আছেন সকাল থেকে। ছেলের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুরে যেতে হবে। এর আগে ছেলের লাশ যাবে কবি নজরুল কলেজে। অভি ওই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাতটার দিকে অবরোধে দুর্বৃত্তদের ককটেল হামলায় রাজধানীর বঙ্গবাজারের এনএক্স টাওয়ারের সামনে আহত হন অভি। ককটেল হামলায় তাঁর মুখের আশপাশের অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত হওয়ার পর থেকে অভির পাশেই ছিলেন মা। আশঙ্কায় তাঁর মনটা দুরুদুরু করছিল। কিন্তু সবাই ভরসা দিচ্ছিল অভি সেরে উঠবেন। কিন্তু অভি এখন সব ভরসা আর আশ্বাসের ঊর্ধ্বে।
নূরজাহান বেগম কাঁদতেও পারছিলেন না। বিলাপ করে বলেন, ‘ও তো বলত, “মা, তুমারে রাইখ্যা আমি কোথাও যাইবো না।” কিন্তু ও তো চইল্যা গেল। ও আমারে কোথায় রাইখ্যা গেল? সরকার বলে এসব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। কী আর ব্যবস্থা করবে? সরকার কী আমার সন্তানরে আবার আমার কোলে ফিরাই দিতে পারব? আর যাতে কেউ বোমা মারতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে পারব?’
গত পরশু ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হয় নূরজাহান বেগমের। গতকাল সারা দিনই ওর অবস্থা খুব খারাপ ছিল। নূরজাহান বেগম বলেন, ‘আমি ছেলেরে বলছি তুই আমারে হাসপাতালে খুব জ্বালাইতেছিস। তখন ছেলে বলে, “মা, আমরা বাড়ি চলে যাব। চাকরিবাকরি করব না। গ্রাম থেইক্যা তোমার জন্য একটা টুকটুকে বউ আইন্যা দিব।”’
অভি পড়াশোনার পাশাপাশি কম্পিউটার দোকানে কাজ করতেন। নিজের জন্য একটি কম্পিউটারের শখ ছিল। নূরজাহান বেগমের পক্ষে তা কিনে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। তবে বলেছিলেন, যেমন করেই হোক, এটা কিনে দেবেন।
অভির বাবা ডিম বিক্রি করেন। মাত্র তিন মাস আগে প্রসবজনিত জটিলতায় সন্তান রেখে মারা গেছেন অভির বোন। এখন শুধু আছে দেড় বছর বয়সী এক ভাই।
অভির ভগ্নিপতি আফজাল বলেন, ‘রাতে অভিকে আইসিইউতে নিলে হয়তো ও মরত না।’
নূরজাহান বেগমের পাশেই ছিলেন অভির এক খালা। তাঁর ভাষ্য, ‘১০ টাকা দিলেই অভির সারা দিনের খরচ চলে যেত। খরচ কমাতে হেঁটেই বেশির ভাগ জায়গায় যেত। কোনো রাজনীতি করত না। ওর কলেজের প্রায় সবাই হাসপাতালের মর্গে এসেছেন।’
আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে বসে এসব কথা বলেন নূরজাহান বেগম। তাঁর বুকভরা বেদনা থেকে যেন নীল টুকরোর মতো পড়ে হাহাকার ও ক্ষোভে ভরা কথাগুলো।
তিনি সানজিদ হোসেন অভির (১৯) মা। গতকাল বুধবার রাত দেড়টার দিকে অভি মারা যান। মর্গে ছেলের লাশের ময়নাতদন্ত চলছিল। মা কিছুতেই তা চাননি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, মামলার প্রয়োজনে এটা করতে হবে।
নূরজাহান বেগম নর্দমার পাশে একটি সিঁড়িতে বসে আছেন সকাল থেকে। ছেলের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুরে যেতে হবে। এর আগে ছেলের লাশ যাবে কবি নজরুল কলেজে। অভি ওই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাতটার দিকে অবরোধে দুর্বৃত্তদের ককটেল হামলায় রাজধানীর বঙ্গবাজারের এনএক্স টাওয়ারের সামনে আহত হন অভি। ককটেল হামলায় তাঁর মুখের আশপাশের অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত হওয়ার পর থেকে অভির পাশেই ছিলেন মা। আশঙ্কায় তাঁর মনটা দুরুদুরু করছিল। কিন্তু সবাই ভরসা দিচ্ছিল অভি সেরে উঠবেন। কিন্তু অভি এখন সব ভরসা আর আশ্বাসের ঊর্ধ্বে।
নূরজাহান বেগম কাঁদতেও পারছিলেন না। বিলাপ করে বলেন, ‘ও তো বলত, “মা, তুমারে রাইখ্যা আমি কোথাও যাইবো না।” কিন্তু ও তো চইল্যা গেল। ও আমারে কোথায় রাইখ্যা গেল? সরকার বলে এসব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। কী আর ব্যবস্থা করবে? সরকার কী আমার সন্তানরে আবার আমার কোলে ফিরাই দিতে পারব? আর যাতে কেউ বোমা মারতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে পারব?’
গত পরশু ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হয় নূরজাহান বেগমের। গতকাল সারা দিনই ওর অবস্থা খুব খারাপ ছিল। নূরজাহান বেগম বলেন, ‘আমি ছেলেরে বলছি তুই আমারে হাসপাতালে খুব জ্বালাইতেছিস। তখন ছেলে বলে, “মা, আমরা বাড়ি চলে যাব। চাকরিবাকরি করব না। গ্রাম থেইক্যা তোমার জন্য একটা টুকটুকে বউ আইন্যা দিব।”’
অভি পড়াশোনার পাশাপাশি কম্পিউটার দোকানে কাজ করতেন। নিজের জন্য একটি কম্পিউটারের শখ ছিল। নূরজাহান বেগমের পক্ষে তা কিনে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। তবে বলেছিলেন, যেমন করেই হোক, এটা কিনে দেবেন।
অভির বাবা ডিম বিক্রি করেন। মাত্র তিন মাস আগে প্রসবজনিত জটিলতায় সন্তান রেখে মারা গেছেন অভির বোন। এখন শুধু আছে দেড় বছর বয়সী এক ভাই।
অভির ভগ্নিপতি আফজাল বলেন, ‘রাতে অভিকে আইসিইউতে নিলে হয়তো ও মরত না।’
নূরজাহান বেগমের পাশেই ছিলেন অভির এক খালা। তাঁর ভাষ্য, ‘১০ টাকা দিলেই অভির সারা দিনের খরচ চলে যেত। খরচ কমাতে হেঁটেই বেশির ভাগ জায়গায় যেত। কোনো রাজনীতি করত না। ওর কলেজের প্রায় সবাই হাসপাতালের মর্গে এসেছেন।’
No comments