ডেইলি মেইলে সিলেটের পথশিশুরা
টেলিভিশন
শিশুদের মুখে হাসি আনে। কিন্তু টেলিভিশন দেখার বদলে, ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে
টেলিভিশনের ভাঙা অংশ কুড়িয়ে হাসি ফোটে কয়জনের মুখে? তারা বাংলাদেশের শিশু।
আবর্জনার ভাগাড় থেকে বিভিন্ন ভাঙা জিনিসপত্র কুড়িয়ে তাদের দিন চলে।
সিলেটের এমন শিশুদের গল্প ছাপা হয়েছে যুক্তরাজ্যের ডেইলি মেইলে। তাদের জীবন
চলে দিনভর ফেলে দেয়া জিনিসপত্র কুড়িয়ে তা বিক্রি করে। তাদের হাসির আড়ালে
এক বিপজ্জনক জীবন লুকিয়ে আছে। তাদের কাজ করতে হয় অনেক ঘণ্টা ধরে। দেশের
অন্যতম ধনী শহরে নিজেদের জীবনের চাহিদা মেটাতে তারা বেছে নিয়েছে এ পথ।
প্রায় ৫০ লাখ মানুষ বাস করেন সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত এ শহরে। পশ্চিমা
ধাঁচে শহরটিতে হোটেল, শপিং মল, বিলাসবহুল হাউজিং এস্টেট ও ব্যবসা গড়ে উঠছে এ
শহরে। কিন্তু তবুও এ শহরে এমন কিছু মানুষ রয়ে গেছেন, ফেলে দেয়া জিনিসপত্র
কুড়িয়েই তাদের জীবনযাপন করতে হয়। তারা বিভিন্ন জিনিসপত্রের খোঁজে থাকে,
যেটি হয়তো বাজারে আবারও বিক্রি করা যাবে। এমনকি নিজেদের পরিবারের জন্য
খাবারও জোটে ফেলে দেয়া আবর্জনার স্তূপ থেকে। স্যান্ডেল পরে কিংবা খালি পায়ে
তাদের কাজ চলে। হাত মোজা বাঁধার প্রয়োজনও পড়ে না। বাংলাদেশে ব্যবহৃত
জিনিসপত্রকে পুনর্ব্যবহারোপযোগী করার এক ধরনের শিল্প গড়ে উঠছে। প্লাস্টিক
বোতল ও জিনিসপত্র চীন ও থাইল্যান্ডে রপ্তানি করা হয়। ক্রমেই লাভজনক হয়ে ওঠা
এ শিল্পে জড়িত রয়েছে প্রায় ২০০ কারখানা। এসব কারখানার জন্য অনেক শিশু
দিনভর সংগ্রহ করতে থাকে ফেলে দেয়া জিনিস। তাদের কাজের কোন সময় বেঁধে দেয়া
নেই। ঢাকায় দিনে ১২ ঘণ্টা ধরে এ কাজ করে কেউ হয়তো ১২০ থেকে ১৮০ টাকা
উপার্জন করতে পারে। ধারণা করা হয়, ঢাকায় এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে
প্রায় এক লাখ মানুষ। বাংলাদেশের লাখো শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। প্রায় অর্ধেক
শিশুই কম ওজনের। অনুমান করা হয়, বাংলাদেশের ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৭
শতাংশ শ্রমিক।
No comments