অবিলম্বে খুলে দেওয়া হোক-বুয়েট বন্ধ থাকার দায়ভার কার?

বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার জন্য ক্লাস বন্ধ রাখার পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির জের ধরে ১৯ জুন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় দেশে প্রকৌশলবিদ্যা শিক্ষার শীর্ষ প্রতিষ্ঠান বুয়েট। তারপর প্রায় এক মাস হতে চলল, কিন্তু বুয়েট খুলে দেওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।


এই বিলম্বের কী কারণ থাকতে পারে, তা আমাদের একেবারেই বোধগম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মারামারির ঘটনা তদন্ত করে এটির মূল কারণ উদ্ঘাটন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে চায়। কিন্তু এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে রাখা আবশ্যক হলো কেন?
যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, সেটি ছিল নিতান্ত মামুলি। বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার জন্য ক্লাস বন্ধ রাখার দাবি করছিলেন বুয়েটের একটি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ ২৬ জুন থেকে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ রাখার ঘোষণাও দিয়েছিল। কিন্তু এর পরও দুই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বুয়েট বন্ধ ঘোষণা করে। তখন কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীর মারামারির জন্য অন্য সবার লেখাপড়া বন্ধ করা জরুরি কি না, কর্তৃপক্ষকে তা ভেবে দেখার ব্যাপারে আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম। বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে, অথচ পরিহাসের ব্যাপার হলো, বুয়েট এখনো খোলেনি। এই বন্ধ থাকার দায়ভার তো প্রথমত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওপরই বর্তায়। এর মাধ্যমে দায়িত্ব পালনে তাদের ব্যর্থতারও প্রকাশ ঘটে। এই ব্যর্থতা দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সত্যিই দুঃখজনক।
বুয়েট বন্ধ ঘোষণার পর উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য জানিয়েছিলেন, মারামারির ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে ‘দ্রুততম সময়ে’ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেবেন। এটাই উদ্দেশ্য হলে তদন্ত কমিটির কাজে যে ধীরগতির খবর গত বৃহস্পতিবারের প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া গেছে, তার কী ব্যাখ্যা দেবে কর্তৃপক্ষ। তদন্তে ধীরগতি বুয়েট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই কি স্পষ্ট করে তোলে না?

No comments

Powered by Blogger.