বিলেতের স্ন্যাপশট-বিলেতে তৃতীয় বাংলার বইমেলা by শামীম আজাদ
দুই দশক আগে যখন দেশান্তরী হয়েছিলাম, লাগেজে এসেছিল পাঁচখানা বই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঞ্চয়িতা, বোদলেয়ারের ক্লেদজ কুসুম, বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত, ঘাতক ও দালালরা কে কোথায় আছে এবং বাংলা চলন্তিকা। ভ্যালেন্টাইন পার্কের পাশে একটি ছোট্ট বাড়িতে থাকতে শুরু করলে বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশ হলো।
এখন পাঁচশ হয়তোবা। কিন্তু যতবারই ওই বইয়ের র্যাকের দিকে হাত বাড়িয়েছি, ঢাকার পরীবাগের লাইব্রেরিতে ফেলে আসা পাঁচ হাজারের জন্য মন হু হু করে উঠছে।
আর প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি আসার আগেই মগজে শুরু হতো মাতম। সেটি অসহ্য হয়ে উঠলে একটা অসুখ হয়ে যেত। একপর্যায়ে প্লেনে উঠে আকাশের ধাতব কেটে দেশে নেমে পড়তাম। তারপর পুরো ফেব্রুয়ারি পাল পাল অক্ষর আর আর্দ্রতা। বাংলা একাডেমীতে চায়ের কামড়ে কামড়ে বই কিনতাম বইখোরের মতো। কিন্তু ফেরার সময় নিজের বই ও কেনা বই মিলিয়ে এত বই হতো যে তা আনা অসম্ভব বিধায় ওই আদি পাঁচখানা নিয়ে ম্লানমুখে ফিরে আসতাম। আর ভাবতাম একদিন এখানে আমরাই নিয়ে আসব বাংলা একাডেমী হয়তো বা।
এখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উৎসব, কবিতা উৎসব, বইলিট ফেস্টিভ্যাল এমনকি বইমেলাও হয়। ফেব্রুয়ারির মাঝরাতের শীতের শূল আমাদের কাবু করতে পারে না। ১২টা ১ মিনিটে আমরা শহীদ আলতাব আলী পার্কে শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়াই। জাগো নারীতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও ব্রাডিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করি। আর একটি পূর্ণাঙ্গ বইমেলার জন্য প্রাণের পাথর ভেঙে যায়। এখানে শতাধিক বাংলা স্কুলে বাংলা ভাষার চর্চা হয়। জিসিএসই ও এ লেভেল বাংলা পরীক্ষা হয়। কিন্তু বাংলা বইয়ের ব্যাপক পসার হয়নি। বাংলা একাডেমীর বইমেলা হয়নি। তৃতীয় বাংলার এ রকম প্রচেষ্টা সেই উন্মেষ কাল থেকে চললেও দেশের কোনো বড় সংস্থা আমাদের পাশে তাদের ভাঁড়ার খুলে ধরেনি। তাই আমাদের বইমেলা, ইচ্ছে হয়ে মনের মাজারেই সমাধিস্থ হয়েছে বারবার।
এবার আমার বাংলাদেশে অবস্থানকালে বাংলা একাডেমীর তরুণ লেখক প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ হয়। একদিন এ নিয়ে কথা হচ্ছিল গবেষক, লেখক ও বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের অফিস কক্ষে। তিনি তখন বলেন, ‘আমার বড় ইচ্ছা বাংলা একাডেমীর বইগুলোকে বিশ্বের বড় কোনো শহরে নিয়ে যাই। তৃতীয় বাংলার কর্মযজ্ঞ ও ধারা নিয়ে আমি যথেষ্ট অবগত এবং লন্ডন থেকেই শুরু হতে পারে তার সে স্থান।’ বাংলা সাহিত্যচর্চা ও বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি যে এখন আর মানচিত্রের সীমারেখায় আবদ্ধ নেই, তা নিয়েও তিনি সঠিক জায়গাতে আলো ফেললেন। এমনকি তারই আগ্রহে বইমেলার মূল আলোচনা-মঞ্চে কানাডা বসবাসকারী কবি ইকবাল হাসান ও বিলেতে বসবাসকারী আমি ডায়াস্পরার ভাবনা সংযোজনের সুযোগও পেলাম। কিন্তু ফিরে এসে ব্যক্তিগতভাবে কোনো কাজ করার উদ্যোগে লিপ্ত হওয়ার সাহস পেলাম না। এত মহা যজ্ঞ, এক অসম্ভব ব্যাপার!
কিন্তু আজ সে অসম্ভবেরই আলো জ্বলে উঠেছে পূর্ব লন্ডনে। এযাবৎ বিচ্ছিন্ন ও বিভিন্নভাবে কোনো উপলক্ষ কিংবা উপলক্ষ ছাড়াই যেসব সংগঠন একটি সার্থক বাংলা বইমেলা করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল, তাদের অনেকের সম্মিলিত প্রয়াসের ফসল এবারের এই বাংলা একাডেমী বইমেলা। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র লন্ডন, সংহতি সাহিত্য পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ ইউকে, মৌলিক আর্টস, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ইউকে, শব্দপাঠ, বেঙ্গলি কালচারাল হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল, বেতার বাংলা, তানপুরা, মহুয়া, সিতার ফিউশন, উদীচী পারফরমিং স্কুল অব আর্টস এবং আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রচেষ্টার ফল এই তৃতীয় বাংলায় বাংলা একাডেমীর প্রথম বইমেলা। বাংলা একাডেমীকে কেন্দ্র করে এই যে প্রায় দেড় ডজনের মতো সংগঠন একত্র হয়ে তাদের সমমাত্রার অবদান সুনিশ্চিত করেছে, এটাও একটি অর্জন।
মেলার উদ্বোধন হবে পূর্ব লন্ডনে অবস্থিত বহির্বিশ্বের দ্বিতীয় স্থায়ী শহীদ মিনারের পাদদেশে। উদ্বোধন করবেন বিলেতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. সাইদুর রহমান খান। প্রধান অতিথি বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক বিশিষ্ট গবেষক শামসুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার এবং সভাপতি তৃতীয় বাংলার অন্যতম সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি সেন্টারে তিন দিনব্যাপী এ বইমেলায় বাংলা একাডেমী প্রকাশিত বই ছাড়াও আরও থাকবে বিলেতের কবি-সাহিত্যিকদের বইয়ের স্টলও। এ ছাড়া প্রতিদিনই থাকবে আলোচনা, কবিতাপাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক ও নৃত্য।
যাঁরা এবার আসেননি, আমরা তাঁদেরও জানাই স্বাগতম। এবারের বইমেলাকে উপলক্ষ করে এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য এবার যাঁরা যোগ দিতে পারেননি, তাঁরাও যোগ দিলে একদিন এ এক বিশাল আয়োজনে পরিণত হবে হয়তো বা। যেভাবে এক যুগ আগে ব্রিকলেন বাংলা টাউনে আড়াই-তিন হাজার মানুষের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছিল বৈশাখী মেলা। সে দিন আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম, এ মেলা বিশ্ব বাঙালির মিলনমেলা হবে। এবারের মেলায় এক লাখ কুড়ি হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে। মেলার উপকরণ ও পরিমাণে ছিল বহুমাত্রিকতা। আর মেলার দেহ ছড়িয়ে পড়েছিল তিন-চারটি পার্ক ও আর্টস সেন্টারজুড়ে। আজ ভালো লাগছে সেদিনের সে প্রচেষ্টায় আমিও ছিলাম বাংলাদেশের পতাকা হাতে। এ বছর আমার বিলেত বাসের দুই দশক হলো। ইতিমধ্যে টেমসের জল অনেক ঘোলা হয়েছে। যুদ্ধবাজ সাবেক প্রধানমন্ত্রী আফগানি আর ইরাকি আগ্রাসনে এ দেশের সবচেয়ে যা বড় বল সে বহুজাতিক সম্প্রীতি তছনছ করে দিয়েছেন। সাঁড়াশি আক্রমণে অভিবাসী বাঙালিরা বারবার নেতিয়ে পড়েছে। তবু বাঙালির শুভ উদ্যোগের সমাধি হয়নি। আমরা লেগে ছিলাম নাচাড়ের মতো। হয়তো আমাদের এই বইমেলার প্রচেষ্টাই অনুঘটকের কাজ করবে আর প্রকাশক, পাঠক, পরিচালক সবাই মিলে সব সুস্থধারার সংগঠনগুলো এক বিশাল শক্তিতে পরিণত হব। বাংলা সাহিত্যের আলোকে উদ্ভাসিত হবে সে প্রাণের মেলা। যেভাবে একদিন একাত্তরে ... এবং কোনো এক একুশে ...
মাহবুব উল আলম চৌধুরীর ‘একুশের কবিতা’র মতোই উচ্চারণ করতে চাই। যারা
‘... কৃষ্ণচূড়ার তলে প্রাণ দিয়েছে
ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য—বাংলার জন্য...
একটি মহান সংস্কৃতির মর্যাদার জন্য...’
আমরা তাদেরই জ্ঞাতি—তৃতীয় বাংলার সন্তান।’
শামীম আজাদ: কবি ও লেখক।
shetuli@yahoo.com
আর প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি আসার আগেই মগজে শুরু হতো মাতম। সেটি অসহ্য হয়ে উঠলে একটা অসুখ হয়ে যেত। একপর্যায়ে প্লেনে উঠে আকাশের ধাতব কেটে দেশে নেমে পড়তাম। তারপর পুরো ফেব্রুয়ারি পাল পাল অক্ষর আর আর্দ্রতা। বাংলা একাডেমীতে চায়ের কামড়ে কামড়ে বই কিনতাম বইখোরের মতো। কিন্তু ফেরার সময় নিজের বই ও কেনা বই মিলিয়ে এত বই হতো যে তা আনা অসম্ভব বিধায় ওই আদি পাঁচখানা নিয়ে ম্লানমুখে ফিরে আসতাম। আর ভাবতাম একদিন এখানে আমরাই নিয়ে আসব বাংলা একাডেমী হয়তো বা।
এখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উৎসব, কবিতা উৎসব, বইলিট ফেস্টিভ্যাল এমনকি বইমেলাও হয়। ফেব্রুয়ারির মাঝরাতের শীতের শূল আমাদের কাবু করতে পারে না। ১২টা ১ মিনিটে আমরা শহীদ আলতাব আলী পার্কে শহীদ মিনারের পাদদেশে দাঁড়াই। জাগো নারীতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও ব্রাডিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করি। আর একটি পূর্ণাঙ্গ বইমেলার জন্য প্রাণের পাথর ভেঙে যায়। এখানে শতাধিক বাংলা স্কুলে বাংলা ভাষার চর্চা হয়। জিসিএসই ও এ লেভেল বাংলা পরীক্ষা হয়। কিন্তু বাংলা বইয়ের ব্যাপক পসার হয়নি। বাংলা একাডেমীর বইমেলা হয়নি। তৃতীয় বাংলার এ রকম প্রচেষ্টা সেই উন্মেষ কাল থেকে চললেও দেশের কোনো বড় সংস্থা আমাদের পাশে তাদের ভাঁড়ার খুলে ধরেনি। তাই আমাদের বইমেলা, ইচ্ছে হয়ে মনের মাজারেই সমাধিস্থ হয়েছে বারবার।
এবার আমার বাংলাদেশে অবস্থানকালে বাংলা একাডেমীর তরুণ লেখক প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ হয়। একদিন এ নিয়ে কথা হচ্ছিল গবেষক, লেখক ও বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের অফিস কক্ষে। তিনি তখন বলেন, ‘আমার বড় ইচ্ছা বাংলা একাডেমীর বইগুলোকে বিশ্বের বড় কোনো শহরে নিয়ে যাই। তৃতীয় বাংলার কর্মযজ্ঞ ও ধারা নিয়ে আমি যথেষ্ট অবগত এবং লন্ডন থেকেই শুরু হতে পারে তার সে স্থান।’ বাংলা সাহিত্যচর্চা ও বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি যে এখন আর মানচিত্রের সীমারেখায় আবদ্ধ নেই, তা নিয়েও তিনি সঠিক জায়গাতে আলো ফেললেন। এমনকি তারই আগ্রহে বইমেলার মূল আলোচনা-মঞ্চে কানাডা বসবাসকারী কবি ইকবাল হাসান ও বিলেতে বসবাসকারী আমি ডায়াস্পরার ভাবনা সংযোজনের সুযোগও পেলাম। কিন্তু ফিরে এসে ব্যক্তিগতভাবে কোনো কাজ করার উদ্যোগে লিপ্ত হওয়ার সাহস পেলাম না। এত মহা যজ্ঞ, এক অসম্ভব ব্যাপার!
কিন্তু আজ সে অসম্ভবেরই আলো জ্বলে উঠেছে পূর্ব লন্ডনে। এযাবৎ বিচ্ছিন্ন ও বিভিন্নভাবে কোনো উপলক্ষ কিংবা উপলক্ষ ছাড়াই যেসব সংগঠন একটি সার্থক বাংলা বইমেলা করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল, তাদের অনেকের সম্মিলিত প্রয়াসের ফসল এবারের এই বাংলা একাডেমী বইমেলা। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র লন্ডন, সংহতি সাহিত্য পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ ইউকে, মৌলিক আর্টস, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ইউকে, শব্দপাঠ, বেঙ্গলি কালচারাল হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল, বেতার বাংলা, তানপুরা, মহুয়া, সিতার ফিউশন, উদীচী পারফরমিং স্কুল অব আর্টস এবং আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রচেষ্টার ফল এই তৃতীয় বাংলায় বাংলা একাডেমীর প্রথম বইমেলা। বাংলা একাডেমীকে কেন্দ্র করে এই যে প্রায় দেড় ডজনের মতো সংগঠন একত্র হয়ে তাদের সমমাত্রার অবদান সুনিশ্চিত করেছে, এটাও একটি অর্জন।
মেলার উদ্বোধন হবে পূর্ব লন্ডনে অবস্থিত বহির্বিশ্বের দ্বিতীয় স্থায়ী শহীদ মিনারের পাদদেশে। উদ্বোধন করবেন বিলেতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. সাইদুর রহমান খান। প্রধান অতিথি বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক বিশিষ্ট গবেষক শামসুজ্জামান খান। বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার এবং সভাপতি তৃতীয় বাংলার অন্যতম সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি সেন্টারে তিন দিনব্যাপী এ বইমেলায় বাংলা একাডেমী প্রকাশিত বই ছাড়াও আরও থাকবে বিলেতের কবি-সাহিত্যিকদের বইয়ের স্টলও। এ ছাড়া প্রতিদিনই থাকবে আলোচনা, কবিতাপাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক ও নৃত্য।
যাঁরা এবার আসেননি, আমরা তাঁদেরও জানাই স্বাগতম। এবারের বইমেলাকে উপলক্ষ করে এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য এবার যাঁরা যোগ দিতে পারেননি, তাঁরাও যোগ দিলে একদিন এ এক বিশাল আয়োজনে পরিণত হবে হয়তো বা। যেভাবে এক যুগ আগে ব্রিকলেন বাংলা টাউনে আড়াই-তিন হাজার মানুষের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছিল বৈশাখী মেলা। সে দিন আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম, এ মেলা বিশ্ব বাঙালির মিলনমেলা হবে। এবারের মেলায় এক লাখ কুড়ি হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে। মেলার উপকরণ ও পরিমাণে ছিল বহুমাত্রিকতা। আর মেলার দেহ ছড়িয়ে পড়েছিল তিন-চারটি পার্ক ও আর্টস সেন্টারজুড়ে। আজ ভালো লাগছে সেদিনের সে প্রচেষ্টায় আমিও ছিলাম বাংলাদেশের পতাকা হাতে। এ বছর আমার বিলেত বাসের দুই দশক হলো। ইতিমধ্যে টেমসের জল অনেক ঘোলা হয়েছে। যুদ্ধবাজ সাবেক প্রধানমন্ত্রী আফগানি আর ইরাকি আগ্রাসনে এ দেশের সবচেয়ে যা বড় বল সে বহুজাতিক সম্প্রীতি তছনছ করে দিয়েছেন। সাঁড়াশি আক্রমণে অভিবাসী বাঙালিরা বারবার নেতিয়ে পড়েছে। তবু বাঙালির শুভ উদ্যোগের সমাধি হয়নি। আমরা লেগে ছিলাম নাচাড়ের মতো। হয়তো আমাদের এই বইমেলার প্রচেষ্টাই অনুঘটকের কাজ করবে আর প্রকাশক, পাঠক, পরিচালক সবাই মিলে সব সুস্থধারার সংগঠনগুলো এক বিশাল শক্তিতে পরিণত হব। বাংলা সাহিত্যের আলোকে উদ্ভাসিত হবে সে প্রাণের মেলা। যেভাবে একদিন একাত্তরে ... এবং কোনো এক একুশে ...
মাহবুব উল আলম চৌধুরীর ‘একুশের কবিতা’র মতোই উচ্চারণ করতে চাই। যারা
‘... কৃষ্ণচূড়ার তলে প্রাণ দিয়েছে
ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য—বাংলার জন্য...
একটি মহান সংস্কৃতির মর্যাদার জন্য...’
আমরা তাদেরই জ্ঞাতি—তৃতীয় বাংলার সন্তান।’
শামীম আজাদ: কবি ও লেখক।
shetuli@yahoo.com
No comments