কর্তৃপক্ষ নির্বিকার, হুমকির মুখে ব্যবসায়ীরা-ফুটবল বিশ্বকাপ শেষ!
কয়েক ঘণ্টা আগে বিশ্বকাপ ফুটবল শেষ হয়ে গেছে। সবারই বেশ মন খারাপ। হওয়ারই কথা। বিশ্বকাপ তো বিটিভির অনুষ্ঠান না যে শেষ হলে সবাই খুশি হবে! ছেলেরা খেললেও বিশ্বকাপ কোনো ছেলেখেলার ব্যাপার না। এটা অনেকটা হ্যালির ধূমকেতুর মতো।
পার্থক্য হলো বছরে; ধূমকেতু ৭২ বছর পরপর দেখা যায়, আর বিশ্বকাপ দেখা যায় চার বছর পরপর। আসলে ভালো জিনিস বেশি দিন থাকে না। তবে বিশ্বকাপ শেষ—এই কথাটা কিন্তু একেবারে শুরু থেকেই শোনা গিয়েছিল। ইনজুরির কারণে বালাকের বিশ্বকাপ শেষ, প্রথম রাউন্ডে হেরে ফ্রান্স-ইতালির বিশ্বকাপ শেষ—এমন আরও কত কি! কিন্তু এবার পুরো বিশ্বকাপটাই শেষ হয়ে গেছে। অনেকে এই বিদায় একেবারেই মেনে নিতে পারছে না। বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। বিশ্বকাপ উপলক্ষে গজিয়ে ওঠা পতাকা-জার্সির রমরমা ব্যবসা মাঠে মারা গেছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রজেক্টরের সাহায্যে বড় পর্দায় খেলা দেখানো হয়েছিল। সুযোগ বুঝে অনেকেই হাঁস-মুরগির ব্যবসার পাশাপাশি প্রজেক্টরের ব্যবসাও শুরু করেছিল। হাঁস-মুরগি তো ডিম দিয়েই যাবে, কিন্তু এই প্রজেক্টরগুলোর কী হবে? অনেকে প্রজেক্টর দিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছবি দেখানোর কথা ভাবলেও অধিকাংশেরই ধারণা, বিশ্বকাপের সঙ্গে সঙ্গে তারাও শেষ। শুধু তারাই না, খেলা দেখাকে কেন্দ্র করে ঘুরঘুর করা ফেরিওয়ালা সম্প্রদায়ও মোটামুটি বেকার হয়ে পড়েছে। ভাত ছিটালে কাকের অভাব হয় না—এই কথায় আগ্রহী হয়ে বাদাম-বুট ছিটিয়েও তারা ক্রেতার দেখা পাচ্ছে না। অথচ কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কিছুই ভাবছে না। কোন দলে টাকমাথার খেলোয়াড় বেশি, কোন রেফারির লাল কার্ড অন্যদের তুলনায় একটু বেশি লাল—এসব নিয়ে ভাবলেও জার্সি-প্রজেক্টরের সুষ্ঠু ব্যবহার, কিংবা বাদাম বিক্রেতাদের পুনর্বাসন নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথাই নেই। আশা করি, কর্তৃপক্ষ সব ভেদাভেদ ভুলে অতি দ্রুত এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করবে। কারণ এই বিশ্বকাপই শেষ নয়, আরও বিশ্বকাপ আছে।
No comments