রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন by শাশ্বতী মজুমদার

বীন্দ্রনাথের সঙ্গে শান্তিনিকেতনের নাম অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কবিগুরুর স্বপ্নের বাস্তবরূপ হলো এই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। রবীন্দ্রনাথ ১৯০১ সালে শান্তিনিকেতনে থাকতে শুরু করেন। পরে তিনি তাঁর পরিবারের সদস্য, বন্ধু, শিল্পী, গবেষক এবং বিশ্বের বহু জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিকে এখানে আমন্ত্রণ জানান। শান্তিনিকেতন তখন থেকেই আন্তর্জাতিক পরিসরে শিক্ষা ও সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন থাকাকালে শান্তিনিকেতনের পরিবেশ ও রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতির ৯৭টি দুর্লভ আলোকচিত্র নিয়ে একটি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে ঢাকার আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ। প্রদর্শনীর শিরোনাম ট্যাগোর, দি ইউনিভার্সাল মেসেজ বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশ্বজনীন বার্তা। ইউরোপীয় আলোকচিত্রী অ্যালেন ড্যানিয়েলু ও রেমন্ড বার্নিয়ের শান্তিনিকেতনে ভ্রমণকালে এ ছবিগুলো ক্যামেরাবন্দী করেন। ধারণা করা হয়, ছবিগুলো ১৯৩২ থেকে ১৯৪০ সালের মধ্যে তোলা হয়েছে। এরপর বহুদিন এ ছবিগুলোর কোনো খোঁজ ছিল না। ড. স্যামুয়েল বার্থেট ছবিগুলো ২০১০ সালে ইতালির জাগারোলোরে থাকা অ্যালেন ড্যানিয়েলু ও রেমন্ড বার্নিয়ের সংগৃহীত ছবিগুলোর মধ্য থেকে পুনরায় আবিষ্কার করেন। অ্যালেন ডানিয়েলু ও রেমন্ড বার্নিয়ের ওই সময় আলোকচিত্রীদের মধ্যে খুব বিখ্যাত ছিলেন। বিশেষ করে রেমন্ড বার্নিয়ের। তাঁর আলোকচিত্র সর্বপ্রথম নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটান জাদুঘরে প্রদর্শিত হয়।
প্রদর্শনীর সাদা-কালো ছবিগুলোতে আলোচিত্রীদের শান্তিনিকেতনের প্রতি গভীর অনুরাগ টের পাওয়া যায়। ছবিগুলোতে দেখা যায়, শান্তিনিকেতনের বিখ্যাত সব ভবন, ভাস্কর্য, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের ঐতিহাসিক ছাতিমতলা। ছবিগুলোতে বেশির ভাগ ওই সময়কার শিক্ষার্থীদের গাছতলায় পাঠদান ব্যবস্থা, তাদের আড্ডা, তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের দৃশ্য ধরা পড়েছে। রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতিসহ রয়েছে বিখ্যাত সব ব্যক্তির প্রতিকৃতির আলোকচিত্র। এর মধ্যে রয়েছেন শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নন্দলাল বসু, ক্ষিতিমোহন সেন এবং রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত সচিব ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু রানী চন্দ। প্রতিটি ছবিতেই আলোকচিত্রী হাস্যোজ্জ্বল মুখভঙ্গিকে ক্যামেরাবন্দী করার চেষ্টা করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.