ইরানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়েছে : যুক্তরাষ্ট্র

সৌদি রাষ্ট্রদূত হত্যার ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়েছে বলে আবারও জোর গলায় দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার এক দিন পরই তারা এমন দাবি করেছিল। কিন্তু ইরান এ ধরনের কোনো যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছে। এদিকে এ ঘটনায় প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগকে 'হাস্যকর' অভিহিত করেছেন তিনি।


জাতিসংঘে ইরানি মিশনের মুখপাত্র আলি রেজা মীর ইউসেফি গত শুক্রবার ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলোকে জানান, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি কোনো যোগাযোগ হয়নি। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর খুব দ্রুতই তাঁর ওই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। দপ্তরের মুখপাত্র ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি আবারও নিশ্চিত করতে চাই যে ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হয়েছে। তাঁরাও বিষয়টি ভালো করেই জানেন। কিন্তু এই তথ্য প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি তাঁদের সত্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে।' মার্কির পররাষ্ট্র দপ্তর গত বুধবার দাবি করেছিল, সৌদি রাষ্ট্রদূত হত্যার বিষয়ে আলোচনার জন্য ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়েছে। ওই যোগাযোগ ইরানের বাইরে হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র গত মঙ্গলবার অভিযোগ করে, ইরান ওয়াশিংটনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত। ইরানের এলিট বাহিনী রেভল্যুশনারি গার্ডের সহায়তায় দুই ইরানি মেঙ্েিকার একটি মাদকচক্রের সঙ্গে যোগাযোগও করেছিল ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য। এ ব্যাপারে জবাবদিহি করার পাশাপাশি ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি গতকাল বলেন, 'এটি অত্যন্ত অর্থহীন ও হাস্যকর অভিযোগ। এটি বিশ্বাসযোগ্য নয় এবং তা হবেও না। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বলে, ইরানকে তারা অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে চায়। কিন্তু আসলে তারা নিজেরাই বিচ্ছিন্ন।'
যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করছে, ইরান বা রেভল্যুশনারি গার্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সৌদি রাষ্ট্রদূত হত্যা পরিকল্পনার অনুমতি দিয়েছেন। রেভল্যুশনারি গার্ড যেকোনো তৎপরতার জন্য আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে জবাবদিহি করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র খামেনির সঙ্গে এই হত্যা ষড়যন্ত্রের কোনো সংযোগ বের করতে পারেনি। এমনকি এখন মার্কিন প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাই যুক্তরাষ্ট্রের তোলা অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ইরানের ওপর নতুন করে অভিযোগ তোলার বিষয়টিকে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সরকার পুনর্নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে কাজে লাগাতে চাইছেন কি না_সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.