৫৮-র আশঙ্কা তাড়িয়েও বড় হার by সাইদুজ্জামান
যদি আবারও কিছু হয় ভেবে টোয়েন্টি-টোয়েন্টির উইকেটেই ফেলা হলো গতকালের ওয়ানডে। হতে যাচ্ছিলও। তবে ১১ অক্টোবরের উদ্ভাসিত জয় নয়, ফিরে আসছিল ২০১১ বিশ্বকাপে ৫৮-র বিভীষিকা! টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শীর্ষ তিন ব্যাটসম্যান আউট মাত্র ১ রানে। সে আশঙ্কা মুছে সম্ভাবনার আলো অবশ্য জাগিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম, নাসির হোসেন ও আবদুর রাজ্জাক। কিন্তু ধীরগতির এ উইকেটেও অনায়াসে ২২১ রানের টার্গেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেঁৗছে যায় পেশাদারি ব্যাটিংয়ে। ৮ উইকেটের এই জয়ের সঙ্গে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ওয়ানডে সিরিজও এখন ক্যারিবীয়দের।
মিরপুরে ব্যাটসম্যানরা ২২০-২৩০ রান করে দিলে লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা পেয়ে যান বাংলাদেশি বোলাররা। নতুন বলে আবদুর রাজ্জাকের প্রথম ওভারে মেডেন পাওয়ায় সে ইঙ্গিত ছিল।
পাঁচ ওভারে ক্যারিবীয় ইনিংসে মাত্র আট রান যোগ হতে দেখে প্রতিটি ডট বলে গ্যালারিতে বাউন্ডারির উৎসব_আজ বুঝি হয়ে যাবে! সফরকারী দলের ইনিংসের মাঝপথেই অবশ্য সে ধারণা ফেলে রেখে গ্যালারি ছেড়ে বাড়িমুখো দর্শকদের বড় একটি অংশ। প্রথম ওয়ানডেতে চোট পেয়ে সিরিজ থেকেই ছিটকে পড়েছেন অ্যাড্রিয়ান বারাথ। এদিকে পেটের পীড়া সারায় ফিরেছেন নিয়মিত অধিনায়ক ড্যারেন সামি। তবে তিনি অলরাউন্ডার। তাই বারাথের পরিবর্তে এ ম্যাচে লেন্ডল সিমন্সের উদ্বোধনী সঙ্গী ডেনজা হায়াত। উইকেট ও প্রতিপক্ষের বোলিং বুঝে ওঠার জন্য প্রথম পাওয়ার-প্লে অপেক্ষায় কাটিয়ে দেওয়ার পর তাঁরা রাজ্জাককে স্টেপ আউট করে ছক্কা মারতেও দ্বিধা করেননি। বিকল্প ওপেনার হায়াতের কাছে রেহাই পাননি সাকিব আল হাসান ও রুবেল হোসেনও। তাতে ডেনজা হায়াত আউট হওয়ার সময়ই প্রথম ঘণ্টায় ৭১ রান জমা পড়ে ক্যারিবীয় ইনিংসে।
দলের জয়টাই আগে। তবে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি না পাওয়ার আফসোস কি হচ্ছে না লেন্ডল সিমন্সের? সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি ক্যারিবীয় এ ওপেনার। স্টাম্প লাইনে বল প্যাডে আঘাত হানায় এলবিডাবি্লউ হয়ে সিমন্স যখন ফেরেন, তখন দলের সংগ্রহ ১৮২ রান। অন্যপ্রান্তে মারলন স্যামুয়েলস যথারীতি 'চওড়া' ব্যাটে খেলে গেলেও সেঞ্চুরির জন্য আর ২০ রান করার সুযোগ ঠিকই ছিল সিমন্সের সামনে। স্যামুয়েলসের ছোটখাটো একটা ফ্যান ক্লাব গজিয়ে ওঠা বিচিত্র নয়। বাংলাদেশ সফরে নিয়মিত রান করে যাওয়া ক্যারিবীয় অলরাউন্ডারের ওই ভক্তকুলের মনেও আক্ষেপের মৃদু স্রোত বইতে পারে। সেঞ্চুরির কাছে এসে যে থেমে পড়তে হয়েছে স্যামুয়েলসকেও! তবে তিনি আউট হননি কাল। টার্গেটটা ছোট হওয়ায় নাসির হোসেনের বলে জয়সূচক শটটা খেলে সবার সঙ্গে হাত মেলানোর সময় স্যামুয়েলসের পাশে লেখা অপরাজিত ৮৮ রান। একের পর এক লম্বা জুটি ভাঙতে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে আট বোলার ব্যবহার করেছেন মুশফিক। কিন্তু ৩০ রানে ২ উইকেট নেওয়া সাকিব ছাড়া আর কাউকেই বিশেষ আমলে নেননি সিমন্স-স্যামুয়েলসরা।
স্যামুয়েলস হয়তো নামারই সুযোগ পেতেন না যদি সেই ৫৮-এর লজ্জা আড়াল করার দায়িত্ব নিজের সরু কাঁধে না নিতেন মুশফিকুর রহিম। তিন নম্বর উইকেটে সিম ব্যবহার করে বল ঘোরানোর সুযোগ নেই। রাতেও সে রকম শিশিরটিশির পড়ছে না ভেবে নিজের শততম ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকবেন মুশফিক। কিন্তু অতি সম্প্রতি পথ হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশি টপ অর্ডারের ব্যর্থতার চোরাবালিতে ডুবে যাওয়ার জন্য বল এদিক-ওদিক ঘোরানোর খুব একটা দরকারও হয় না! ইনিংসের চতুর্থ বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে রবি রামপালকে চালাতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ইমরুল কায়েস। পরের ওভারের প্রথম বলটা শরীরের অনেক দূর থেকে ব্যাটে লাগিয়ে থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম ইকবাল। কেমার রোচের ওই ওভারের চতুর্থ বলে মোহাম্মদ আশরাফুল খোঁচা দিয়ে আউট হওয়ার পর ৫৮-এর পুনর্মঞ্চায়নই দেখতে পাচ্ছিলেন সবাই।
তবে এ দেশের প্রত্যেক দর্শক বড় আশাবাদী। রোচের পরের ওভারে সাকিব আল হাসানের তিন বাউন্ডারি দেখে আনন্দে উন্মাতাল গ্যালারি। সে আনন্দও থেমে যেতে সময় লাগেনি। রামপালের কৌণিক একটি বল সীমানার বাইরে পাঠাতে গিয়ে ফিরে আসেন সাকিব। ১৮ রানে ৪ উইকেট নেই। বিশ্বকাপের ৫৮ পার হতে বাকি ৪১ রান করা নিয়েই তখন সংশয়! এমন পরিস্থিতিতে দুঃসহ অতীত মনে পড়ে যাওয়াকে কি দোষ দেওয়া যায়? ঘুরে-ফিরে সেই ৫৮ আর একবারই এসেছিল গতকালের ম্যাচে। প্রথম ওয়ানডের অনুকরণে যখন রামপালকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অলক কাপালি। তখনো যে বাংলাদেশের রান ৫৮!
ওইটুকুই। এরপর মুশফিকুর রহিম ও নাঈমের ৫৭ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি আশঙ্কার চাদর ঠেলে আশার আলো জ্বালিয়েছে। সে মশাল বয়ে নিয়ে সম্ভাবনার দীর্ঘ পথ আলোকিত করেছেন মুশফিক, নাসির হোসেন ও আবদুর রাজ্জাক। এ তিনজনের কল্যাণেই শেষ ১০ ওভারে ৭৯ রান যোগ করে জয়ের আশা নিয়েই বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। মুশফিকের দশম ফিফটি যদি হয় দীর্ঘ কারাভোগ থেকে মুক্তির আনন্দ তো নাসিরের ৫৪ বলে দ্বিতীয় ওয়ানডে ফিফটিটি ছিল জীবনটাকে আবারও সুন্দরভাবে সাজানোর অঙ্গীকার। মাঝখানে একটি ভুল ধারণা ভেঙে দেন রাজ্জাক। মূলত বাঁহাতি স্পিনার তিনি। তবে স্পিন পেলে নিচের দিনে ব্যাটেও ছোটখাটো ঝড় তুলতে জানেন। কিন্তু সমপ্রতি রাজ্জাকের সেই ব্যাটিং সামর্থ্যের ওপর যেন আস্থা কমে আসছিল। গতকাল গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ১৯ বলে ২৫ রান করে সে আস্থা ফিরিয়ে এনেছেন তিনি। এক বল বাকি থাকতে নাসির আউট না হলে হয়তো আরেকটু দীর্ঘ হতে পারত বাংলাদেশের ইনিংস। আবার বাংলাদেশ ইনিংসের ১৫তম ওভার আম্পায়ার ৫ বলে শেষ না করে দিলেও একই ব্যাপার ঘটতে পারত।
অবশ্য ৭.২ ওভার অব্যবহৃত রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ জিতে নেওয়ার পর ওই এক-দুটো বল নিয়ে আক্ষেপের সুযোগ থাকে কি?
পাঁচ ওভারে ক্যারিবীয় ইনিংসে মাত্র আট রান যোগ হতে দেখে প্রতিটি ডট বলে গ্যালারিতে বাউন্ডারির উৎসব_আজ বুঝি হয়ে যাবে! সফরকারী দলের ইনিংসের মাঝপথেই অবশ্য সে ধারণা ফেলে রেখে গ্যালারি ছেড়ে বাড়িমুখো দর্শকদের বড় একটি অংশ। প্রথম ওয়ানডেতে চোট পেয়ে সিরিজ থেকেই ছিটকে পড়েছেন অ্যাড্রিয়ান বারাথ। এদিকে পেটের পীড়া সারায় ফিরেছেন নিয়মিত অধিনায়ক ড্যারেন সামি। তবে তিনি অলরাউন্ডার। তাই বারাথের পরিবর্তে এ ম্যাচে লেন্ডল সিমন্সের উদ্বোধনী সঙ্গী ডেনজা হায়াত। উইকেট ও প্রতিপক্ষের বোলিং বুঝে ওঠার জন্য প্রথম পাওয়ার-প্লে অপেক্ষায় কাটিয়ে দেওয়ার পর তাঁরা রাজ্জাককে স্টেপ আউট করে ছক্কা মারতেও দ্বিধা করেননি। বিকল্প ওপেনার হায়াতের কাছে রেহাই পাননি সাকিব আল হাসান ও রুবেল হোসেনও। তাতে ডেনজা হায়াত আউট হওয়ার সময়ই প্রথম ঘণ্টায় ৭১ রান জমা পড়ে ক্যারিবীয় ইনিংসে।
দলের জয়টাই আগে। তবে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি না পাওয়ার আফসোস কি হচ্ছে না লেন্ডল সিমন্সের? সাকিবকে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি ক্যারিবীয় এ ওপেনার। স্টাম্প লাইনে বল প্যাডে আঘাত হানায় এলবিডাবি্লউ হয়ে সিমন্স যখন ফেরেন, তখন দলের সংগ্রহ ১৮২ রান। অন্যপ্রান্তে মারলন স্যামুয়েলস যথারীতি 'চওড়া' ব্যাটে খেলে গেলেও সেঞ্চুরির জন্য আর ২০ রান করার সুযোগ ঠিকই ছিল সিমন্সের সামনে। স্যামুয়েলসের ছোটখাটো একটা ফ্যান ক্লাব গজিয়ে ওঠা বিচিত্র নয়। বাংলাদেশ সফরে নিয়মিত রান করে যাওয়া ক্যারিবীয় অলরাউন্ডারের ওই ভক্তকুলের মনেও আক্ষেপের মৃদু স্রোত বইতে পারে। সেঞ্চুরির কাছে এসে যে থেমে পড়তে হয়েছে স্যামুয়েলসকেও! তবে তিনি আউট হননি কাল। টার্গেটটা ছোট হওয়ায় নাসির হোসেনের বলে জয়সূচক শটটা খেলে সবার সঙ্গে হাত মেলানোর সময় স্যামুয়েলসের পাশে লেখা অপরাজিত ৮৮ রান। একের পর এক লম্বা জুটি ভাঙতে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে আট বোলার ব্যবহার করেছেন মুশফিক। কিন্তু ৩০ রানে ২ উইকেট নেওয়া সাকিব ছাড়া আর কাউকেই বিশেষ আমলে নেননি সিমন্স-স্যামুয়েলসরা।
স্যামুয়েলস হয়তো নামারই সুযোগ পেতেন না যদি সেই ৫৮-এর লজ্জা আড়াল করার দায়িত্ব নিজের সরু কাঁধে না নিতেন মুশফিকুর রহিম। তিন নম্বর উইকেটে সিম ব্যবহার করে বল ঘোরানোর সুযোগ নেই। রাতেও সে রকম শিশিরটিশির পড়ছে না ভেবে নিজের শততম ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকবেন মুশফিক। কিন্তু অতি সম্প্রতি পথ হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশি টপ অর্ডারের ব্যর্থতার চোরাবালিতে ডুবে যাওয়ার জন্য বল এদিক-ওদিক ঘোরানোর খুব একটা দরকারও হয় না! ইনিংসের চতুর্থ বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে রবি রামপালকে চালাতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ইমরুল কায়েস। পরের ওভারের প্রথম বলটা শরীরের অনেক দূর থেকে ব্যাটে লাগিয়ে থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম ইকবাল। কেমার রোচের ওই ওভারের চতুর্থ বলে মোহাম্মদ আশরাফুল খোঁচা দিয়ে আউট হওয়ার পর ৫৮-এর পুনর্মঞ্চায়নই দেখতে পাচ্ছিলেন সবাই।
তবে এ দেশের প্রত্যেক দর্শক বড় আশাবাদী। রোচের পরের ওভারে সাকিব আল হাসানের তিন বাউন্ডারি দেখে আনন্দে উন্মাতাল গ্যালারি। সে আনন্দও থেমে যেতে সময় লাগেনি। রামপালের কৌণিক একটি বল সীমানার বাইরে পাঠাতে গিয়ে ফিরে আসেন সাকিব। ১৮ রানে ৪ উইকেট নেই। বিশ্বকাপের ৫৮ পার হতে বাকি ৪১ রান করা নিয়েই তখন সংশয়! এমন পরিস্থিতিতে দুঃসহ অতীত মনে পড়ে যাওয়াকে কি দোষ দেওয়া যায়? ঘুরে-ফিরে সেই ৫৮ আর একবারই এসেছিল গতকালের ম্যাচে। প্রথম ওয়ানডের অনুকরণে যখন রামপালকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অলক কাপালি। তখনো যে বাংলাদেশের রান ৫৮!
ওইটুকুই। এরপর মুশফিকুর রহিম ও নাঈমের ৫৭ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি আশঙ্কার চাদর ঠেলে আশার আলো জ্বালিয়েছে। সে মশাল বয়ে নিয়ে সম্ভাবনার দীর্ঘ পথ আলোকিত করেছেন মুশফিক, নাসির হোসেন ও আবদুর রাজ্জাক। এ তিনজনের কল্যাণেই শেষ ১০ ওভারে ৭৯ রান যোগ করে জয়ের আশা নিয়েই বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। মুশফিকের দশম ফিফটি যদি হয় দীর্ঘ কারাভোগ থেকে মুক্তির আনন্দ তো নাসিরের ৫৪ বলে দ্বিতীয় ওয়ানডে ফিফটিটি ছিল জীবনটাকে আবারও সুন্দরভাবে সাজানোর অঙ্গীকার। মাঝখানে একটি ভুল ধারণা ভেঙে দেন রাজ্জাক। মূলত বাঁহাতি স্পিনার তিনি। তবে স্পিন পেলে নিচের দিনে ব্যাটেও ছোটখাটো ঝড় তুলতে জানেন। কিন্তু সমপ্রতি রাজ্জাকের সেই ব্যাটিং সামর্থ্যের ওপর যেন আস্থা কমে আসছিল। গতকাল গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ১৯ বলে ২৫ রান করে সে আস্থা ফিরিয়ে এনেছেন তিনি। এক বল বাকি থাকতে নাসির আউট না হলে হয়তো আরেকটু দীর্ঘ হতে পারত বাংলাদেশের ইনিংস। আবার বাংলাদেশ ইনিংসের ১৫তম ওভার আম্পায়ার ৫ বলে শেষ না করে দিলেও একই ব্যাপার ঘটতে পারত।
অবশ্য ৭.২ ওভার অব্যবহৃত রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ জিতে নেওয়ার পর ওই এক-দুটো বল নিয়ে আক্ষেপের সুযোগ থাকে কি?
No comments