তবু অনূর্ধ্ব-১৯-এ আস্থা ইলিয়েভস্কির

বার জাতীয় দলের কাছে হার মানল অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল দল। দুই ভাগে ভাগ হয়ে তারা দুটো ম্যাচ খেলেছে এবং হেরেছে দুটোতেই, যদিও এই হার নিকোলা ইলিয়েভস্কিকে এতটুকু টলাতে পারেনি। বাংলাদেশের মেসিডোনিয়ান কোচের দৃঢ় বিশ্বাস, এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টে এদের দিয়েই ভালো কিছু সম্ভব।ঘনিয়ে আসছে টুর্নামেন্ট। ঢাকায় ২৫ অক্টোবর তুলনামূলকভাবে সহজ প্রতিপক্ষ মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের শুরু হলেও পরের তিনটি প্রতিপক্ষ এশিয়ার প্রথম সারির ফুটবল শক্তি ইরাক, সৌদি আরব ও ওমান। টুর্নামেন্ট শুরুর দিন দশেক আগে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল একটিতে হেরে বসেছে ৫-১ গোলে অন্যটিতে ২-১ গোলে।


অথচ কিছুদিন আগেই জাতীয় দলের বিপক্ষে তারা জিতেছিল ৪-০ ব্যবধানে। তাই তাদের গতকালের হার একটু নেতিবাচক বার্তা দিয়ে গেলেও ইলিয়েভস্কি অবিশ্বাস্য রকমের ইতিবাচক, 'তারা দ্বিতীয় ম্যাচ খুব ভালো খেলেছে। যে দলই আসুক, তাদের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা তৈরি হয়েছে এই অনূর্ধ্ব-১৯ দলের।' দ্বিতীয় ম্যাচ মানে ২-১ গোলে হারা ম্যাচটি; পেনাল্টি ও আত্মঘাতী গোলে ম্যাচ হারলেও তাদের সমন্বিত ফুটবল ও আক্রমণে মাঝেমধ্যেই দিশেহারা হয়েছেন জাতীয় দলের ডিফেন্ডাররা। একবার তো অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ফরোয়ার্ড ওয়াহেদের কাছে হেরে সুজন সতীর্থ আরিফুলকে গালাগালি করে লাল কার্ডও দেখেছেন। শুধু ওয়াহেদ নয়, মালেক ও সজীবের মধ্যেও দারুণ সম্ভাবনা দেখছেন কোচ।
তবে ইরাক, সৌদি আরব ও ওমানের সামনে পড়ে তাঁদের পায়ে কতটা সম্ভাবনা ফুটে উঠবে, তা বলা মুশকিল। যদিও কোচ যথারীতি ভয়-ডরহীন, গতকালও সে রকম কথারই পুনরাবৃত্তি তাঁর মুখে, 'ওরা ভালো দল ঠিক আছে কিন্তু আমার এই দলও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে। প্র্যাকটিস ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্সে আমি খুশি।' কোচ আসলে যেটা চাইছেন খেলার আগেই যেন হেরে না বসে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ফুটবলাররা। তাই ইলিয়েভস্কির মুখে দুঃসাহসী সব কথাবার্তা, 'যারা আসবে তারা তো আর বার্সেলোনা নয়, সুতরাং...।' বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কাছে তাঁর বার্তাটা হলো, 'ইরাক- সৌদি আরব অজেয় নয়।' টুর্নামেন্টের আগে বড় দলের ভীতিটুকু কাটিয়ে তুলতেই তিনি চেয়েছিলেন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে ঢাকায় প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে। সেটা হয়নি ভারতের কাতার সফরের জন্য। বাফুফেও চেষ্টা করেনি অন্য কোনো দেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দল জোগাড় করার। তাই বিকল্প হিসেবে জাতীয় দলের সঙ্গে কাল প্র্যাকটিস ম্যাচ হয়েছে, আগামী বুধবার হবে আরেকটি ম্যাচ।
জাতীয় দলের তরফে বড় ঘটনা হলো এনামুল হকের উপস্থিতি। অনেক দিন জাতীয় দলের বাইরে কাটানো এ স্ট্রাইকারকে কোচ ডেকেছেন প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে। সুযোগ পেয়ে তিনি চেষ্টা করেছেন দৌড়ঝাঁপ করে নিজের মান চেনানোর। তাতে ও রকম কিছু চেনা না গেলেও ইলিয়েভস্কি আশাবাদী, 'এনামুল খারাপ নয়। সুঠাম শরীর আছে, দৌড়াতে পারে।' অর্থাৎ গত বছর এশিয়ান গেমসে সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলা এই স্ট্রাইকার আবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ক্যাম্পে ফিরছেন। আগামী ২০ অক্টোবর এই ক্যাম্প শুরুর আগে জাতীয় দলের ফুটবলারদের নিয়ে কোচের ভয় বোধহয় খানিকটা কেটে গেছে, 'জাতীয় দলও আজ (কাল) ভালো খেলেছে। তারা সিরিয়াসলি খেলেছে প্র্যাকটিস ম্যাচ দুটো।' এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে জাতীয় দলের পারফরম্যান্স দেখে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ইলিয়েভস্কি এবং দলে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের হুংকারও দিয়েছিলেন। সেই ভয়েই কিনা তাঁরা কাল প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলেছেন দাঁতে দাঁত চেপে।

No comments

Powered by Blogger.