আমি কাউকে নো বল করতে বলিনি

ঘুষের টাকা নিয়ে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে লন্ডনের আদালতে বিচার হচ্ছে তাঁদের। তবে সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান বাট আর মোহাম্মদ আসিফ সে অভিযোগ স্বীকার করেননি মোটেই। শুক্রবার এ মামলার শুনানির অষ্টম দিনে আদালতের সামনে বাজিয়ে শোনানো হয়েছে এক বছর আগের আলোচিত ওই ঘটনার পর পরই পুলিশকে দেওয়া সালমান-আসিফের জবানবন্দি, আর তাতে সালমান যেমন আসিফ কিংবা অপর অভিযুক্ত মোহাম্মদ আমিরকে ইচ্ছে করে নো বল করতে বলার কথা অস্বীকার করেছেন, তেমনি আসিফও দাবি করেছেন সালমান বা অন্য কেউ তাঁকে ইচ্ছে করে নো বল করতে বলেননি!


গত বছরের আগস্টে অনুষ্ঠিত ওভাল টেস্টের আগে সদ্য বিলুপ্ত ট্যাবলয়েড পত্রিকা নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের এক ছদ্মবেশী রিপোর্টার আসিফ-সালমানদের এজেন্ট মাজহার মাজিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দেয়। ম্যাচের নির্দিষ্ট ওভারের নির্দিষ্ট সময়ে নো বল করার জন্য অগ্রিম টাকা দেওয়া হয় মাজিদকে, ছদ্মবেশী ওই রিপোর্টারকে যিনি এ রকম অনেক ম্যাচ পাতানোর কথা জানান। ম্যাচের ওই নির্দিষ্ট সময়ে মোহাম্মদ আসিফ আর মোহাম্মদ আমিরের বল নো বল হওয়ার পর এ নিয়ে তোলপাড় ওঠে। পরে পুলিশ সালমান এবং আমিরের হোটেল রুম থেকে উদ্ধার করে ওই ছদ্মবেশী রিপোর্টারের দেওয়া চিহ্নিত ব্যাংক নোট। এরই সূত্র ধরে লন্ডনের সাউথওয়ার্ক ক্রাউন করে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে মামলা চলছে ওই তিনজনের বিপক্ষে। কিন্তু ঘটনার পর পরই পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দিতে সালমান দাবি করেছিলেন, ওই নো বলগুলো নিতান্তই ঘটনাচক্রে হয়েছে ওই সময়ে। তিনি এ জন্য কারো কাছ থেকে টাকা নেননি বা কাউকে নো বল করতেও বলেননি, 'আসিফ আর আমির আমাদের দলের সেরা দুই বোলার। দল নির্বাচন করতে বসলে সবার আগে আমরা ওদের নাম লিখি। ওদের আমি কী করে এমন প্রস্তাব দিতে পারি? কোনো উপায় নেই।' শুধু তা-ই নয়, তিনি দাবি করেছেন, কেউই তাঁকে দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করতে পারবে না, 'পৃথিবীতে দুজনই মাত্র লোক আছেন, যাঁদের আমি কখনোই না বলি না_আমার বাবা ও মা। কিন্তু এমনকি তাঁরা বললেও আমি এটা করতাম না। দেশের সঙ্গে প্রতারণা করতে কেউই আমাকে রাজি করাতে পারবে না। আমি ক্রিকেট খেলি এ খেলাটির প্রতি আর দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই।'
এর আগে আদালতে আসিফের জবানবন্দিও বাজিয়ে শোনানো হয় এবং তাতে আসিফও দাবি করেন ওই নো বলগুলো ছিল অনিচ্ছাকৃত এবং কেউই তাঁকে নো বল করতে বলেননি। আসিফ নিজে অবশ্য অসুস্থতার কারণে এ সময় উপস্থিত ছিলেন না, তবে পরে তিনি ঠিকই হাজির হয়েছেন আদালতে। জবানবন্দিতে আসিফ বলেছেন, ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ শুনে তিনি রীতিমতো অবাক হয়েছেন। তাঁর কক্ষ থেকে নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ডের টাকা উদ্ধার করা হয়নি জানিয়ে জবানবন্দি গ্রহণকারী স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সার্জেন্ট জন ম্যাসি বলেন, দেখেশুনে মনে হচ্ছে এ ষড়যন্ত্রে অংশ নিতে ইচ্ছুক ছিলেন না আসিফ। তাহলে কি কেউ তাঁকে এ ব্যাপারে চাপ দিয়েছে? এমন প্রশ্নে আসিফের জবাব ছিল, 'কেউ আমাকে কোনো চাপ দেয়নি। কিভাবে দেবে? অনেক দিন ধরে পাকিস্তান দলে খেলছি, কেউই আমাকে কোনো ব্যাপারে চাপ দিতে পারে না।' অধিনায়ককে বাঁচানোর চেষ্টা করার অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি, 'কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি না। আমি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি, খেলার মাঠে এবং ব্যক্তিগত জীবনেও সব সময় আমি সেই চেষ্টাই করি।' ওয়েবসাইট

No comments

Powered by Blogger.