তবু ইংল্যান্ডের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার প্রত্যয়

ইংলিশ কন্ডিশনে সুইং সামলানো যেমন কঠিন ভারতীয়দের জন্য তেমনি উপমহাদেশের টার্নিং পিচে ঘূর্ণি বল খেলতে মাথা ঘুরে যায় ইংলিশদের। তাই ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ সম্প্রচার করা নিও স্পোর্টসের স্লোগান, 'দেখ লেগা ইন্ডিয়া' বা দেখে নেবে ভারত। কদিন আগে ইংল্যান্ডে বিধ্বস্ত হওয়া দলটা এবার প্রতিশোধ নিতে মরিয়াই ছিল। তবে ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি বদলা নেওয়ার কথাটা সরাসরি বললেন না। স্পিনারদের দাপটে প্রথম ওয়ানডেতে ১২৬ রানে জয়ের পর আপত্তি জানালেন 'বদলা' শব্দটা নিয়েই, 'আমার মনে হয় বদলা শব্দটা অনেক কঠিন।


ইংল্যান্ডে আমাদের পারফরম্যান্স যদি দেখেন বিশেষ করে টেস্টের পর তাহলে বলব আমরা ভালোই খেলেছি। আমরা রান পেয়েছি ঠিকই কিন্তু বৃষ্টির কারণে জিততে পারিনি কোনো কোনো ম্যাচে। আবার কোনো ম্যাচে বৃষ্টিভেজা বল গ্রিপ করতে সমস্যা হয়েছে বোলারদের।'
শচীন টেন্ডুলকার, বীরেন্দর শেবাগ, যুবরাজ সিং, হরভজন সিং, জহির খানদের মতো পারফরমারদের ছাড়াও প্রথম ওয়ানডেতে ভারত জিতেছে ১২৬ রানে। ধোনির দলের ৭ উইকেটে ৩০০ রানের জবাবে ৩৬.১ ওভারে ১৭৪ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রানের হিসাবে এটা ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়। এর আগে ২০০৮ সালে রাজকোটে ধোনিরা জিতেছিল ১৫৮ রানে। পরশু হায়দরাবাদে অশ্বিন আর জাদেজার স্পিন বিষেই মূলত নীল হয়েছে ইংল্যান্ড। এই দুজনই নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। তরুণদের এমন পারফরম্যান্সে খুশি ধোনি, 'এই সিরিজটা আসলে তরুণদের প্রতিষ্ঠা পাওয়ারই মঞ্চ। অনেক দিন পর পাওয়া এই জয়টাও আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। টানা হারতে থাকলে খেলাটা উপভোগ করা কঠিন।'
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি। কোনো রান করার আগেই জীবন পেয়েছিলেন ওপেনার রাহানে। তার পরও ৪১ বলে কোনো বাউন্ডারি ছাড়া তিনি করেন মাত্র ১৫। চ্যাম্পিয়নস লিগে দুর্দান্ত খেলা বিরাট কোহলিও ৩৭ রান করতে খেলেছেন ৬৩ বল, বাউন্ডারি পাননি একটিও! ৩৫ ওভার শেষে তাই ৪ উইকেটে ১৫০-ই করতে পেরেছিল ভারত। তবে রায়না আর ধোনি ঝড়ে শেষ ১৫ ওভারে ১৫০ আর শেষ ১৬ ওভারে তারা করে ১৬১ রান। শেষ ১৬ ওভারে এটা ভারতের পঞ্চম সর্বোচ্চ স্কোর। দক্ষিণ আফ্রিকা আর বারমুডার বিপক্ষে করা ১৮২-ই এ সময়ে তাদের সেরা। রায়না ৫৫ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৬১ করে আউট হয়ে গেলেও ম্যাচসেরা ধোনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৭০ বলে ১০ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৮৭ রান করে। ওয়ানডেতে এ নিয়ে টানা চারটি ফিফটি করলেন ধোনি যার তিনটিতেই আবার অপরাজিত। ধোনির শেষ চারটি ইনিংস ৬৯, ৭৮*, ৫০* ও ৮৭*। পরশু ৬ নম্বরে নেমে করা ৮৭ রানের ইনিংস সম্পর্কে ধোনি বললেন, 'ছয় নম্বর জায়গাটা অনেক কঠিন। এ জন্য যুবরাজকে আমি এত বেশি গুরুত্ব দেই। এই পজিশনে ১৫ ম্যাচ খেলা কোনো ব্যাটসম্যানের গড়টা দেখবেন ২৫ বা ৩০। আমি কভারের ওপর দিয়ে শট খেলার অনুশীলন করেছি নেটে। ম্যাচে সেটা করতে পারায় ভালো লাগছে।'
প্রথম ম্যাচটা এভাবে হেরে যাওয়ায় স্বভাবতই হতাশ ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। তবে মাত্র প্রথম ম্যাচ বলে এখনই আত্মবিশ্বাস হারানোর মতো কিছু দেখছেন না তিনি, 'অবশ্যই আমরা হতাশ। কোনো দলই এভাবে হারতে চায় না। তবে এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মনোবলটা ধরে রাখা। এক ম্যাচ হারাতেই আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকার মতো কিছু হয়নি।' পিটিআই, ক্রিকইনফো

No comments

Powered by Blogger.