মিয়ানমারে প্রথম দিন মুক্তি পেল ১৮৪

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক বিবেচনায় আটক বন্দিদের সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দিতে শুরু করেছে। সাংবাদিক, সরকারের সমালোচক ও বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ গতকাল বুধবার ১৮৪ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়। এদের মধ্যে ২০০৭ সালে জান্তা সরকারবিরোধী পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেওয়া বৌদ্ধ ভিক্ষু শিন গাম্বিরাও রয়েছেন। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সরকারবিরোধী ওই পদযাত্রা সেনাবাহিনী কঠোরভাবে দমন করে।গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। মিয়ানমারের ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা আরোপের অন্যমত কারণ এটি। ধারণা করা হয়, মিয়ানমারে অন্তত দুই হাজার লোককে রাজনৈতিক কারণে বন্দি রাখা হয়েছে।


জনপ্রিয় কৌতুকাভিনেতা জারগানারকে মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে বন্দি-মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের ত্রাণ তৎপরতা নিয়ে জনসমক্ষে সরকারের সমালোচনা করায় তাঁকে বন্দি করা হয়েছিল। ওই ঝড়ে এক লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। মুক্তির পর জারগানার বলেন, শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাঁকে, 'ক্ষতিকর কিছু করলে আবারও জেলে ঢোকানো হবে আমাকে।'
মিয়ানমারের কারা কর্মকর্তারা দাবি করেন, ৩০০ ভিন্নমতাবলম্বীকে গতকাল মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির এক সদস্য জানান, ১৮৪ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তাদের দলের আছে ১০০ জন। সু চি এই মুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, 'আমরা আশা করি আরো অনেকেই ছাড়া পাবেন।' রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। মঙ্গলবার সরকার জানায়, রাজনৈতিক কারণে আটক ছয় হাজারেরও বেশি কারাবন্দিকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দেওয়া হবে। তবে যাদের মুক্তি দেওয়া হবে তাদের কোনো তালিকাও প্রকাশ করা হয়নি। এর আগে খোলা চিঠির মাধ্যমে মিয়ানমারের মানবাধিকার কমিশন সরকারের প্রতি রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ও জনগণের শান্তির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয় এ ধরনের বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানায়। সরকারের নিয়োগ দেওয়া মানবাধিকার কমিশনের ওই আহ্বানের পরই ধারণা করা হয়েছিল, কর্তৃপক্ষ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বন্দিদের মুক্তি দেবে। মিয়ানমারের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে দুই হাজার ১০০ রাজবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.