ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন : রুশ-মার্কিন আলোচনা আবারও ব্যর্থ
ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মোতায়েনের বিষয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এবারও কোন সমঝোতা হয়নি। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরফ বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকও ছিলো ফলাফলশূন্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যে রাশিয়া কোনোভাবেই একমত নয়, সে বিষয়টি এবারের বৈঠকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র কয়েক ধাপে ইউরোপের কয়েকটি দেশে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তবে রাশিয়া প্রথম থেকেই এর বিরোধিতা করছে।
লাভরফ বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন পরিকল্পনার তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে যেসব অস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র এবং টর্পেডোর জন্য বিপদসৃষ্টি করবে। যুক্তরাষ্ট্র আগামী ২০২০ সালের মধ্যে বিভিন্ন দেশে ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ওই পরিকল্পনার চতুর্থ পর্যায়ে মার্কিন ও ন্যাটোর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে একীভূত করার কথা রয়েছে যা রাশিয়াকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। মস্কো বলছে, রাশিয়াকে দুর্বল করাই এ পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য। রুশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ার জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে, কাজেই তা মেনে নেয়া যায় না। ন্যাটো ও মার্কিন কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত রাশিয়ার জন্য হুমকি সৃষ্টি না করার বিষয়েও কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি এবং এখনই এ বিষয়ে কোনো কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়া হবে না বলে ঘোষণা করেছেন। এ কারণে এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভও লিসবনে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে মার্কিন পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের বিষয়ে তুরস্ক ও রোমানিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সমঝোতা হওয়ার পর রাশিয়া কাজাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। রাশিয়া অবশ্য এর আগেও বেলারুশ ও আর্মেনিয়ার সঙ্গে এ ধরনের যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। রাশিয়ার সীমান্তের অদূরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাডার ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থানের কারণে স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়াও তার প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে আরও বাড়োনোর চিন্তা-ভাবনা করছে। কাজেই দুই দেশই এখন কৌশলগত অস্ত্র ভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ এবং আধুনিকায়নের দিকে এগোচ্ছে। এ অবস্থায় বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আবারও মারাত্মক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হতে পারে। যদিও দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত নয়া স্টার্ট চুক্তি অনুযায়ী উভয়ই তাদের কৌশলগত অস্ত্র সংখ্যা কমানোর বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
No comments