অনার্স কোর্স ও পরীক্ষা কেন্দ্রের দাবি : নাটোরে ট্রেন ও শিক্ষকদের অবরোধ করে ছাত্রছাত্রীরা

নাটোরের লালপুর উপজেলার আবদুলপুর সরকারি কলেজে অনার্স কোর্স চালু, এইচএসসি ও ডিগ্রি পরীক্ষা কেন্দ্রের দাবিতে গতকাল ছাত্রছাত্রীরা কলেজের শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং কলেজের সামনের স্টেশনে ৬টি ট্রেন অবরোধ করে রাখে। এতে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দেশের সব অঞ্চলের রেল যোগাযোগ বিকেল পর্যন্ত বন্ধ থাকে। প্রশাসনের সহায়তায় দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়। ফলে সকল শিক্ষক-কর্মচারী অবরুদ্ধ থাকে। পরে বিকেলে দাবি না মানা পর্যন্ত ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০ অক্টোবর থেকে ডিগ্রি পরীক্ষা শুরু হবে। কিন্তু এখানে কেন্দ্র না থাকায় সকাল সাড়ে ১০টায় বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অধ্যক্ষসহ সব শিক্ষক কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে। সেখান থেকে তারা আবদুলপুর জংশন স্টেশনে এসে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস, নীলফামারীগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস, নীলফামারী থেকে রাজশাহীগামী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, খুলনা থেকে রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, রাজশাহী থেকে সৈয়দপুরগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ও রাজশাহী থেকে সিরাজগঞ্জগামী মেইল ট্রেন অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় আবদুলপুর রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন স্টেশনে হাজার হাজার যাত্রী ভোগান্তির শিকার হন। খবর পেয়ে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাখাওয়াত হোসেন, লালপুরের ইউএনও আবদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিরুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) আমিনুল ইসলাম, লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ প্রত্যাহার করান। পরে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে শিক্ষার্থীরা রেল অবরোধ প্রত্যাহার করলে অবরুদ্ধ ৬টি ট্রেন পর্যায়ক্রমে স্টেশন ছেড়ে যায়।
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদ আহমেদ বিপ্লব জানান, প্রশাসনের মধ্যস্থতায় অবরোধ তুলে নেয়া হলেও দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আবদুলপুর জংশন স্টেশন মাস্টার নূর কুতুব জানান, অবরোধের কারণে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ২টা ৪০ পর্যন্ত সব ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিরুল ইসলাম জানান, র্যাব, পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সাদেক আলী মিয়া অবরুদ্ধ থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাখাওয়াত হোসেন জানান, অনেক আগেই ডিগ্রির পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারণ হয়ে গেছে, এখন এ বিষয়ে আর কিছুই করার নেই। এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র চালুর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। অনার্স কোর্স চালু কলেজ কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এখতিয়ারভুক্ত।

   

No comments

Powered by Blogger.