এ সরকারের আমলেই কাজ শুরু হবে : যোগাযোগমন্ত্রী

দ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়নি দাবি করে যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছেন, বতর্মান সরকারের আমলেই এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে। গতকাল বুধবার দুপুরে নিজ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের কাছে যোগাযোগমন্ত্রী এ কথা বলেন।গত মঙ্গলবার সিলেটে অনুষ্ঠিত জনসভায় বিএনপির চেয়ারপারসন পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন স্থগিতের কথা তুলে ধরে বলেছিলেন, এ সরকারের দুর্নীতির কারণে পদ্মা সেতু হচ্ছে না। তাঁর দল ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতিমুক্ত পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। বিএনপির চেয়ারপারসনের এমন বক্তব্যের জবাবে যোগাযোগমন্ত্রী গতকাল বলেন, বিএনপি বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে পারে।


যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, 'আমার কাছেও প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ দুর্নীতির অভিযোগ আসে। এর মধ্যে নাম-ঠিকানা ছাড়া অভিযোগগুলো ডাস্টবিনে ফেলা হয়। বাকিগুলো তদন্ত করে দেখা হয়। যারা পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন চায় না, তারাই এ নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। যারা অভিযোগ করেছে, আমরা চাই তারা অভিযোগের সামনে দাঁড়াক, সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ প্রমাণ করুক।'
যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, 'পদ্মা সেতু প্রকল্পে সরকারের তরফে কোনো দুর্নীতি হয়নি। কারণ এটির পরামর্শক নিয়োগের দরপত্রের ভিত্তিতে যোগ্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করে কারিগরি ও মূল্যায়ন কমিটি বিশ্বব্যাংকের কাছে মতামতের জন্য পাঠিয়েছে। এ ক্ষেত্রে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশন ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছি। দুর্নীতি বা স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার আশঙ্কায় মূল্যায়ন কমিটিতে মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা রাখা হয়নি। কমিটিতে থাকা সদস্যদের যোগ্যতা ও সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।'
অতীতেও ঋণ চুক্তি বিলম্বিত করার চেষ্টা করা হয়েছে অভিযোগ করে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, 'বিশ্বব্যাংকের সাময়িক স্থগিতাদেশের কারণে সেতুর নির্মাণকাজ কিছুটা বিলম্বিত হবে হয়তো, তবে এ সরকারের আমলেই সেতুর কাজ শুরু হবে। যাদের সঙ্গে ঋণ চুক্তি হয়েছে, তাদের অর্থায়নেই এ কাজ হবে বলে আশা করছি।'
বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন না করলে বিকল্প উদ্যোগ কী হতে পারে জানতে চাইলে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সরকার প্রতিবছর দেড় লাখ কোটি টাকার বাজেট দেয়। তা থেকে দুই হাজার কোটি টাকা খুব বেশি কিছু নয়। সরকার ইচ্ছা করলে চার বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেও এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে।
পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে যমুনা সেতুর মতো সারচার্জ আরোপ করার পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে সেতু বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেন, এখনো এমন কোনো পরিকল্পনা সরকার নেয়নি। এ নিয়ে এখনো ভাবা হচ্ছে না। তবে এটা করতে পারলে ভালো হতো।
প্রসঙ্গত, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯০ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংক ছাড়া এডিবি ৬১ কোটি, জাইকা ৪০ কোটি ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ১৪ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এতে। আর সবচেয়ে বেশি ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা বিশ্বব্যাংকের।
বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি ও অর্থমন্ত্রীর বৈঠক : বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি অ্যালেন গোল্ডস্টেইন গতকাল বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন। সচিবালয়ে এ বৈঠক হয়। বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আশা প্রকাশ করে বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান ঘটবে। তবে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা বলতে চাননি অর্থমন্ত্রী। গত রাতে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'হ্যাঁ, আমরা বসেছিলাম।'
দুর্নীতি জানতে বিশ্বব্যাংককে দুদকের চিঠি

No comments

Powered by Blogger.