৫৮ উঁকি মারছে কিন্তু প্রতিজ্ঞা বদলা নেওয়ার by নোমান মোহাম্মদ
ভাগ্যিস, টোয়েন্টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি জিতেছিল বাংলাদেশ। নইলে যে কী হতো আজ! ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে নিশ্চয়ই ৫৮-এর প্রেতাত্মায় আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হতো সবার!৪ মার্চ ২০১১। বাংলাদেশ ক্রিকেটের কলঙ্কিত এক দিন। হিমালয়সম স্বপ্ন দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ার ক্ষণ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে জয়নিনাদ বাজানোর আশা নিয়ে সূর্যোদয় হয়েছিল যে দিনটির, সূর্যাস্তের আগেই শোকের করুণ বিউগলে সমাধিস্থ হয়ে যায়। হারতেই পারে বাংলাদেশ। তাই বলে ৫০ ওভারের ম্যাচে ১৮.৫ ওভারেই অলআউট! মাত্র ৫৮ রানে! রাগে-দুঃখে-ক্ষোভে সে দিন উন্মাদপ্রায় হয়ে গিয়েছিল ক্রিকেটপাগল জাতি।
নইলে কী আর ক্রিস গেইলদের বাসে ঢিল ছোড়ার অমন ঘটনা ঘটে!আরেকবার ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ক্যারিবিয়ানদের মুখোমুখি হওয়ার আগে সিনেমার রিলের মতো এই দৃশ্যগুলো বাংলাদেশের সবার মনে খেলে যাওয়ার কথা। তাতে আশঙ্কায় হয়তো কুঁকড়ে যেত ক্রিকেটাররা, লজ্জার পুনরাবৃত্তির শঙ্কায় গুটিয়ে যেত সমর্থকরা। এবার সেটি হচ্ছে না। সেই দুঃসহ স্মৃতি তো আর ভুলে যাওয়া সম্ভব না। তবে সেই কৃষ্ণগহ্বর থেকে বেরিয়ে আলোকের ঝরনাধারায় স্নান করার আশার ছবিটা আরো বড় হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে পুরোমাত্রায়। টোয়েন্টি-টোয়েন্টি জয়ের টনিক আছে না!
সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান যথার্থই বলেছেন, 'আমার মনে হয় না, প্রথম ওয়ানডেতে ৫৮-এর কোনো প্রভাব আর থাকবে। থাকলে সেটি টোয়েন্টি-টোয়েন্টিতেই থাকত। সেটি থাকেনি। থাকলে কিন্তু আমরা ম্যাচটি জিততে পারতাম না।' কাল ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আগের দিন বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাক। তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, টোয়েন্টি-টোয়েন্টির জয়ে বাংলাদেশের আরেকটি উপকার হলো কি না? কারণ নইলে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে ৫৮-এর কলঙ্কতিলকের কথা সবাই বেশি করে মনে করিয়ে দিত। একটু ঝাঁজালো উত্তরই দিয়েছেন এই অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার, 'আমার মনে হয় আমাদের জয়গুলো সবাই ভুলে গেছে। জেতার কথা কেউ মনে রাখে না। আমরা যত বেশি সেই ম্যাচটা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করি, তত বেশি আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়। এটা আসলে ঠিক না। জেতার কথা কারও মনে নেই। কিন্তু ৫৮ রানের কথা সবার মনে আছে!'
রাজ্জাক বিস্মিত, কিছুটা যেন ক্ষুব্ধও। কিন্তু ইতিহাসের পাতা থেকে ওই দিনটি তো আর মুছে দেওয়ার উপায় নেই। তবে সুযোগ আছে সেটি পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। টোয়েন্টি-টোয়েন্টি জয় দিয়ে যার শুরু। যে ম্যাচ থেকে শুধু জয় নয়, উৎসাহব্যঞ্জক উপকরণ আছে আরো। বিশ্বকাপে ৫৮ রানে অলআউট হওয়া উইকেটেই যে দিন দুয়েক আগে ক্যারিবিয়ানদের হারাল বাংলাদেশ! বিশ্বাসের মন্ত্রটা পুরো দলে তাই ছড়িয়ে পড়ারই কথা।
ক্যারিবীয় ব্যাটিং-দানব কিয়েরন পোলার্ড অবশ্য ৫৮ কাণ্ডের কথা মনে রেখেছেন পুরোমাত্রায়। এটি তাঁদের মানসিকভাবে এগিয়ে রাখবে বলেও করেছেন দাবি। পাশাপাশি বাস্তবতা মনে করিয়ে দিতেও ভোলেননি, 'অবশ্যই ওই ম্যাচ আমাদের মানসিকভাবে খানিকটা এগিয়ে রাখবে। তবে এও বলব, সেটি ছিল বিশ্বকাপ আর সেই টুর্নামেন্টের চাপে যেকোনো কিছুই হতে পারে। এটি সম্পূর্ণ নতুন টুর্নামেন্ট। ১১ জনের সঙ্গে ১১ জনের নতুন যুদ্ধ। দেখা যাক, কী হয়।'
বিশ্বকাপে ওই ম্যাচ দিয়েই দুঃস্বপ্নের চোরাবালিতে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিল বটে, তবে সে আনন্দ ফিকে হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৮ রানে অলআউট হওয়ায়। গ্রহণকালের ফেরে পড়ে এরপর ওই জিম্বাবুয়ে সফর। অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক বদলে একেবারে খোলনলচে পাল্টে যায় এ দেশের ক্রিকেটের। আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেয়ে তাই যেন চক্র পূরণের উপলক্ষ পেল বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে তাদের হারালেই হয়তো মুক্তি মিলবে ৫৮-সূত্রের ওই পাকচক্র থেকে।
ক্রিস গেইল এখন কোথায়? চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ধুন্ধুমার পারফরম্যান্সের পর ভারতেই আনন্দ-ফুর্তিতে মেতে আছেন নাকি ফিরেছেন ক্যারিবিয়ানে? যেখানেই থাকুন, ইন্টারনেটের অন্তর্জালের সীমায় ভেতরেই নিশ্চয়ই আছেন। বাসে ঢিল ছোড়ার পর টুইটারের মাধ্যমে সে ঘটনা বিশ্ববাসীকে জানাতে এতটুকু দেরি কিংবা দ্বিধা করেননি গেইল। আজ কি আফসোসে ভরা আরেকটি টুইট করার উপলক্ষ্য তাঁকে দিতে পারবে মুশফিকুর রহিমের দল? 'ইস্, আমি যদি থাকতাম, তাহলে দল হারত না' জাতীয়!
৫৮-এর লজ্জামুক্তির দিনে সেটি হতে পারে আরেকটি বড় প্রাপ্তি!
সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান যথার্থই বলেছেন, 'আমার মনে হয় না, প্রথম ওয়ানডেতে ৫৮-এর কোনো প্রভাব আর থাকবে। থাকলে সেটি টোয়েন্টি-টোয়েন্টিতেই থাকত। সেটি থাকেনি। থাকলে কিন্তু আমরা ম্যাচটি জিততে পারতাম না।' কাল ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আগের দিন বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাক। তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, টোয়েন্টি-টোয়েন্টির জয়ে বাংলাদেশের আরেকটি উপকার হলো কি না? কারণ নইলে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে ৫৮-এর কলঙ্কতিলকের কথা সবাই বেশি করে মনে করিয়ে দিত। একটু ঝাঁজালো উত্তরই দিয়েছেন এই অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার, 'আমার মনে হয় আমাদের জয়গুলো সবাই ভুলে গেছে। জেতার কথা কেউ মনে রাখে না। আমরা যত বেশি সেই ম্যাচটা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করি, তত বেশি আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়। এটা আসলে ঠিক না। জেতার কথা কারও মনে নেই। কিন্তু ৫৮ রানের কথা সবার মনে আছে!'
রাজ্জাক বিস্মিত, কিছুটা যেন ক্ষুব্ধও। কিন্তু ইতিহাসের পাতা থেকে ওই দিনটি তো আর মুছে দেওয়ার উপায় নেই। তবে সুযোগ আছে সেটি পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। টোয়েন্টি-টোয়েন্টি জয় দিয়ে যার শুরু। যে ম্যাচ থেকে শুধু জয় নয়, উৎসাহব্যঞ্জক উপকরণ আছে আরো। বিশ্বকাপে ৫৮ রানে অলআউট হওয়া উইকেটেই যে দিন দুয়েক আগে ক্যারিবিয়ানদের হারাল বাংলাদেশ! বিশ্বাসের মন্ত্রটা পুরো দলে তাই ছড়িয়ে পড়ারই কথা।
ক্যারিবীয় ব্যাটিং-দানব কিয়েরন পোলার্ড অবশ্য ৫৮ কাণ্ডের কথা মনে রেখেছেন পুরোমাত্রায়। এটি তাঁদের মানসিকভাবে এগিয়ে রাখবে বলেও করেছেন দাবি। পাশাপাশি বাস্তবতা মনে করিয়ে দিতেও ভোলেননি, 'অবশ্যই ওই ম্যাচ আমাদের মানসিকভাবে খানিকটা এগিয়ে রাখবে। তবে এও বলব, সেটি ছিল বিশ্বকাপ আর সেই টুর্নামেন্টের চাপে যেকোনো কিছুই হতে পারে। এটি সম্পূর্ণ নতুন টুর্নামেন্ট। ১১ জনের সঙ্গে ১১ জনের নতুন যুদ্ধ। দেখা যাক, কী হয়।'
বিশ্বকাপে ওই ম্যাচ দিয়েই দুঃস্বপ্নের চোরাবালিতে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিল বটে, তবে সে আনন্দ ফিকে হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৮ রানে অলআউট হওয়ায়। গ্রহণকালের ফেরে পড়ে এরপর ওই জিম্বাবুয়ে সফর। অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক বদলে একেবারে খোলনলচে পাল্টে যায় এ দেশের ক্রিকেটের। আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেয়ে তাই যেন চক্র পূরণের উপলক্ষ পেল বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে তাদের হারালেই হয়তো মুক্তি মিলবে ৫৮-সূত্রের ওই পাকচক্র থেকে।
ক্রিস গেইল এখন কোথায়? চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ধুন্ধুমার পারফরম্যান্সের পর ভারতেই আনন্দ-ফুর্তিতে মেতে আছেন নাকি ফিরেছেন ক্যারিবিয়ানে? যেখানেই থাকুন, ইন্টারনেটের অন্তর্জালের সীমায় ভেতরেই নিশ্চয়ই আছেন। বাসে ঢিল ছোড়ার পর টুইটারের মাধ্যমে সে ঘটনা বিশ্ববাসীকে জানাতে এতটুকু দেরি কিংবা দ্বিধা করেননি গেইল। আজ কি আফসোসে ভরা আরেকটি টুইট করার উপলক্ষ্য তাঁকে দিতে পারবে মুশফিকুর রহিমের দল? 'ইস্, আমি যদি থাকতাম, তাহলে দল হারত না' জাতীয়!
৫৮-এর লজ্জামুক্তির দিনে সেটি হতে পারে আরেকটি বড় প্রাপ্তি!
No comments