সুপ্রিম কোর্টে শুনানি-‘সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখা উচিত ছিল গিলানির

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির অবশ্যই উচিত ছিল, প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম নতুন করে শুরু করার জন্য সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখা।
অদালত অবমাননার দায়ে প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি অভিযুক্ত হতে পারেন কি না, এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়েছে।


প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মুহাম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আট সদস্যের বেঞ্চে প্রধানমন্ত্রী গিলানির একটি আবেদনের ওপর ওই শুনানি হয়।
আদালত অবমাননার দায়ে গিলানির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হবে তাঁকে।
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এ মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে কোনো চাপ এলে সরকার দেশে আগাম নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। প্রধানমন্ত্রী গিলানির নেতৃত্বাধীন সরকারের মেয়াদ পূরণের আর মাত্র এক বছর বাকি আছে। পাকিস্তানের ইতিহাসে নির্বাচিত কোনো সরকারই মেয়াদ পূরণ করতে পারেনি।
প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মুহাম্মদ চৌধুরী বলেন, জারদারির বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারের অভিযোগ-সংক্রান্ত মামলাটি নতুন করে শুরু করার জন্য সুইস কর্তৃপক্ষের কাছে প্রধানমন্ত্রী চিঠি লিখলে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা গঠনের কার্যক্রম এখানেই ইতি ঘটবে।
শুনানিতে আট সদস্যের বেঞ্চ বলেন, ৬০ মিলিয়ন ডলার যা পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে, তা পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হবে, যদি সুইস কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়।
বিচারকেরা বলেন, সুইস কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানোর জন্য রায় দেওয়া হলেও সরকার আদালতের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আগ্রহ দেখাননি। ওই রায় দেওয়ার পর থেকে আদালত দুই বছর তিন মাস ধৈর্য ধরেছেন।
সুপ্রিম কোর্ট শুনানিতে বলেছেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠানকে খাটো করার অধিকার প্রধানমন্ত্রীর নেই। ওই টাকা আমাদের পকেটে ঢুকবে না। প্রকৃত অর্থে ওই টাকা চায় দেশের মানুষ।’
পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী গিলানি ভুলপথে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ না জানিয়ে তাঁর উচিত ছিল, ক্ষমা প্রার্থনা করা। একই সঙ্গে আদালতের কাছে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে পুনরায় মামলা চালুর উদ্যোগ গ্রহণের অঙ্গীকার করা।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে সুইস আদালতে অনিষ্পন্ন অবস্থায় থাকা একটি মামলা নতুন করে চালুর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে সরকারকে নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের এ নির্দেশ আমলে নেয়নি সরকার।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী গিলানির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ গঠনের কার্যক্রম শুরু করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন গিলানি। এদিকে, আগামী সোমবার ওই অভিযোগে গিলানিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এএফপি, পিটিআই।

No comments

Powered by Blogger.