বাকসংযমই কাম্য-অহিংস আন্দোলনের ঘোষণা ইতিবাচক
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে যেন জন-আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে। গত বুধবারের গণ-অনশনে তিনি ঘোষণা করেছেন, 'আর জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর-ধ্বংসের রাজনীতি নয়, হরতাল নয়।' জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করার কথা বলেছেন তিনি।
জনগণকে জ্বলে ওঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, দেশ রক্ষার আন্দোলনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিএনপির গণ-অনশনে খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য নানা মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। একটা সময় ছিল, যখন রাজনৈতিক নেতাদের কথা শোনার জন্য মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত। রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যকে দিকনির্দেশনা হিসেবেই ধরে নিত মানুষ। তখনকার দিনে রাজনৈতিক নেতাদের দেওয়া রাজনৈতিক কর্মসূচি স্বতঃস্ফূর্তভাবেই পালিত হতো। নিজেদের দায়িত্বে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করাটা যেন ক্ষেত্রবিশেষে সাধারণ মানুষ নিজেদের কর্তব্য হিসেবেই জ্ঞান করত। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে সেদিনের বাস্তবতা আজকের দিনে উপযোগিতা হারিয়েছে। আদর্শহীন রাজনৈতিক দল আর দিকভ্রান্ত রাজনৈতিক নেতাদের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। সে কারণেই দেখা যায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে কেবল দলের চিহ্নিত নেতা-কর্মীরাই সমবেত হন। সাধারণ মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি এখন আর আগের দিনের মতো আলোড়ন সৃষ্টি করে না। মানুষ রাজনৈতিক দলের দেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিরক্ত হলেও অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই সেটা প্রকাশ করতে পারে না। একসময় যেসব রাজনৈতিক কর্মসূচি সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় পালিত হতো, সেসব কর্মসূচি আজকের দিনে এসে কার্যকারিতা হারিয়েছে। অনেক রাজনৈতিক কর্মসূচিই এখন জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, হারিয়েছে জনপ্রিয়তা। রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের শেষ অস্ত্র বলে স্বীকৃত হরতাল এখন আর কোনো কার্যকর রাজনৈতিক কর্মসূচিও নয়। বিরক্তিকর এই রাজনৈতিক কর্মসূচিটি মানুষের জন্য দুর্ভোগই ডেকে আনে। আক্ষরিক অর্থে হরতালের অর্থ যেটাই হোক, হরতালের ব্যবহারিক অর্থ যেন এখন জনদুর্ভোগ। সেদিকটি যে বিএনপি চেয়ারপারসন উপলব্ধি করতে পেরেছেন_এ জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। সব রাজনীতিবিদেরই উপলব্ধি এমন গণমুখী হওয়া উচিত। রাজনৈতিক কর্মসূচির লক্ষ্য হওয়া উচিত জনকল্যাণ।
পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রেও সংযমী হতে হবে। মনে রাখতে হবে, দেশের মানুষ তাঁদের কাছ থেকে দিকনির্দেশনামূলক কথাই আশা করে। এমন কোনো কথা উচ্চারণ করা তাঁদের উচিত হবে না, যে কথা থেকে দেশের মানুষের বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠার সুযোগ থাকে। গত বুধবারের গণ-অনশনে ' জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর-ধ্বংসের রাজনীতি' পরিহারের প্রশংসনীয় কথার পর সংবিধান নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন যে কথা উচ্চারণ করেছেন, তা রাজনৈতিক শালীনতার পরিপন্থী কি না সেটাও ভেবে দেখা প্রয়োজন। সংবিধান একটি দেশের সর্বোচ্চ আইন। সম্প্রতি সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী হয়েছে। বিএনপি ও বিরোধী দল এই সংশোধনীর বিরোধিতা করেছে সংসদের বাইরে থেকে। দীর্ঘদিন সংসদ বর্জন করে চলেছে বিরোধী দল। গত বুধবার গণ-অনশনে বক্তৃতা করার সময় তিনি বলেছেন, বিএনপি যেদিন ক্ষমতায় আসবে সেদিনই এই সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের এই কথার জবাবে প্রশ্ন করা যেতে পারে, ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি কি অসাংবিধানিক পন্থায় দেশ চালাবে? খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য কেউ এ ধরনের কথা বললে হয়তো তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হতো। এ কারণেই আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের বাকসংযমী হওয়া প্রয়োজন। প্রতিটি কথা বুঝে বলতে হবে। একটি কথার নানা অর্থ হতে পারে। প্রতিটি কথার অন্তর্নিহিত অর্থ পরিষ্কার হওয়া উচিত। অযাচিত কোনো কথা যেন আমাদের দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অর্জনকে নষ্ট করে না দেয়।
পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রেও সংযমী হতে হবে। মনে রাখতে হবে, দেশের মানুষ তাঁদের কাছ থেকে দিকনির্দেশনামূলক কথাই আশা করে। এমন কোনো কথা উচ্চারণ করা তাঁদের উচিত হবে না, যে কথা থেকে দেশের মানুষের বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠার সুযোগ থাকে। গত বুধবারের গণ-অনশনে ' জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর-ধ্বংসের রাজনীতি' পরিহারের প্রশংসনীয় কথার পর সংবিধান নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন যে কথা উচ্চারণ করেছেন, তা রাজনৈতিক শালীনতার পরিপন্থী কি না সেটাও ভেবে দেখা প্রয়োজন। সংবিধান একটি দেশের সর্বোচ্চ আইন। সম্প্রতি সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী হয়েছে। বিএনপি ও বিরোধী দল এই সংশোধনীর বিরোধিতা করেছে সংসদের বাইরে থেকে। দীর্ঘদিন সংসদ বর্জন করে চলেছে বিরোধী দল। গত বুধবার গণ-অনশনে বক্তৃতা করার সময় তিনি বলেছেন, বিএনপি যেদিন ক্ষমতায় আসবে সেদিনই এই সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের এই কথার জবাবে প্রশ্ন করা যেতে পারে, ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি কি অসাংবিধানিক পন্থায় দেশ চালাবে? খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য কেউ এ ধরনের কথা বললে হয়তো তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হতো। এ কারণেই আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের বাকসংযমী হওয়া প্রয়োজন। প্রতিটি কথা বুঝে বলতে হবে। একটি কথার নানা অর্থ হতে পারে। প্রতিটি কথার অন্তর্নিহিত অর্থ পরিষ্কার হওয়া উচিত। অযাচিত কোনো কথা যেন আমাদের দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অর্জনকে নষ্ট করে না দেয়।
No comments