পবিত্র কোরআনের আলো-ইহুদিরা নিজেদের পিতৃভূমি ফিরে পেতে সাময়িকভাবে ব্যর্থ হয়েছিল
২২। ক্বালূ ইয়া মূসা ইন্না ফীহা ক্বাওমান জাব্বারীনা; ওয়া ইন্না লান্নাদ্খুলাহা হাত্তা ইয়াখ্রুজূ মিন্হা; ফা-ইঁ ইয়্যাখ্রুজূ মিন্হা ফা-ইন্না দাখিলূন। ২৩। ক্বালা রাজুলানি মিনাল্লাযিনা ইয়াখাফূনা আন্'য়ামাল্লাহু 'আলাইহিমাদ্খুলূ 'আলাইহিমুল বাব; ফা-ইযা দাখাল্তুমূহু ফা-ইন্নাকুম গালিবূন। ওয়া 'আলাল্লাহি ফাতাওয়াক্কালূ ইন কুন্তুম মুমিনীন।
২৪। ক্বালূ ইয়া মূসা ইন্না লান্নাদ্খুলাহা আবাদাম মাদামূ ফীহা ফায্হাব আন্তা ওয়া রাব্বুকা ফাক্বাতিলা ইন্না হাহুনা ক্বায়িদূনা। [সুরা : আল-মায়িদা, আয়াত : ২২-২৪]
অনুবাদ : ২২. তারা বলল, হে মূসা, সেখানে তো এক দোর্দণ্ড প্রতাপশালী জাতি রয়েছে। তারা সেখান থেকে বেরিয়ে না এলে আমরা কিছুতেই সেখানে প্রবেশ করব না। তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসুক, আমরা অবশ্যই প্রবেশ করব।
২৩. যারা আল্লাহকে ভয় করছিল, তাদের মধ্যে দুইজন লোক_যাদের ওপর আল্লাহ তায়ালা অনুগ্রহ করেছিলেন_এগিয়ে এসে বলল, তোমরা সদর দরজা দিয়েই তাদের জনপদে প্রবেশ করো। আর সেখানে প্রবেশ করলেই তোমরা বিজয়ী হবে। তোমরা যদি সত্যিকার অর্থেই মুমিন হও, তাহলে আল্লাহর ওপরই ভরসা করো।
২৪. তারা বলল, হে মূসা, সেসব লোক যতক্ষণ সেখানে থাকবে, ততক্ষণ আমরা সেখানে প্রবেশ করব না। আপনি যান। আপনি এবং আপনার প্রভু দুজনে মিলে যুদ্ধ করুন। আমরা এখানেই বসে রইলাম।
ব্যাখ্যা : উলি্লখিত আয়াতগুলোতে হজরত মূসা (আ.)-এর আমলের বনি ইসরাইলিদের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। বনি ইসরাইলিরা তাদের বংশের নবী হজরত মূসা (আ.)-এর সঙ্গে গোস্তাকি করেছিল। তারা মূসা (আ.)-এর আদেশ অমান্য করে নিজেদের ভাগ্যে দুর্ভোগ টেনে এনেছিল। হজরত মূসা (আ.) বনি ইসরাইলিদের মিসরের সম্রাট ফিরাউনের গোলামি থেকে মুক্ত করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই বনি ইসরাইলিরা লোহিত সাগর পার হয়ে নিরাপদে মিসর ছেড়ে চলে এসেছিল এবং ফিরাউন তার সেনাবাহিনী নিয়ে সাগরে ডুবে মৃত্যুবরণ করেছিল। লোহিত সাগর পার হয়ে এসে হজরত মূসা (আ.) বনি ইসরাইলিদের আদি পিতৃভূমি ফিলিস্তিনে আবাসভূমি গড়ে তোলার চেষ্টা করলেন। সেই এলাকা থেকেই হজরত ইয়াকুব (আ.) তাঁর ১২ জন পুত্র নিয়ে মিসরের অভিবাসী হয়েছিলেন। তাঁর এক পুত্র ইউসুফ মিসরের মন্ত্রী হয়েছিলেন।
বনি ইসরাইলিদের আদি বাসস্থানের এলাকাটিতে তখন 'আমালিকা' নামক একটি জাতি বসতি স্থাপন করেছিল। মূসা (আ.) তখন আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে সেই এলাকা থেকে আমালিকাদের বিতাড়িত করে পিতৃভূমি পুনর্দখল করে নিতে বলেছিলেন তাঁর সম্প্রদায়কে। কথিত আছে, বনি ইসরাইল বংশে তখন ১২টি উপদল ছিল। প্রতিটি উপদলের নেতাদের একত্রিত করে তিনি সেই এলাকা পরিদর্শন করতে পাঠিয়েছিলেন। উপদলের নেতারা এলাকা পরিদর্শন করে খবর নিয়ে গেল, সেই এলাকায় এক জবরদস্ত শক্তিশালী জাতি বসবাস করে। মূসা (আ.)-এর নির্দেশ সত্ত্বেও তারা সেই জাতির ওপর আক্রমণ করতে রাজি হলো না। তারা ভয় পেয়ে গেল। অথচ আল্লাহর পক্ষ থেকে মূসা (আ.) তাদের সাহস জুগিয়ে যাচ্ছিলেন। ইউশা ও কালের নামে দুজন ব্যক্তি ছিলেন, যাঁরা মূসা (আ.)-এর নির্দেশনা পালন করতে প্রস্তুত। বাকি সবাই তাঁর বিরোধিতা করছিল।
এ অবস্থায় বনি ইসরাইলিদের আদি পিতৃভূমি পুনরুদ্ধার আর সম্ভব হলো না। তাদের কপালে নেমে এল দুর্ভোগ। দীর্ঘ ৪০ বছর পর্যন্ত তারা তীহ মরু প্রান্তরে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়িয়েছিল। তখন তাদের কোনো আবাসভূমি বা ঠিকানা ছিল না। এরপর বনি ইসরাইলিদের পরের প্রজন্ম 'ইউশা' ও কালের নেতৃত্বে তাদের পিতৃভূমি ফিলিস্তিন পুনর্দখল করেছিল।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ২২. তারা বলল, হে মূসা, সেখানে তো এক দোর্দণ্ড প্রতাপশালী জাতি রয়েছে। তারা সেখান থেকে বেরিয়ে না এলে আমরা কিছুতেই সেখানে প্রবেশ করব না। তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসুক, আমরা অবশ্যই প্রবেশ করব।
২৩. যারা আল্লাহকে ভয় করছিল, তাদের মধ্যে দুইজন লোক_যাদের ওপর আল্লাহ তায়ালা অনুগ্রহ করেছিলেন_এগিয়ে এসে বলল, তোমরা সদর দরজা দিয়েই তাদের জনপদে প্রবেশ করো। আর সেখানে প্রবেশ করলেই তোমরা বিজয়ী হবে। তোমরা যদি সত্যিকার অর্থেই মুমিন হও, তাহলে আল্লাহর ওপরই ভরসা করো।
২৪. তারা বলল, হে মূসা, সেসব লোক যতক্ষণ সেখানে থাকবে, ততক্ষণ আমরা সেখানে প্রবেশ করব না। আপনি যান। আপনি এবং আপনার প্রভু দুজনে মিলে যুদ্ধ করুন। আমরা এখানেই বসে রইলাম।
ব্যাখ্যা : উলি্লখিত আয়াতগুলোতে হজরত মূসা (আ.)-এর আমলের বনি ইসরাইলিদের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। বনি ইসরাইলিরা তাদের বংশের নবী হজরত মূসা (আ.)-এর সঙ্গে গোস্তাকি করেছিল। তারা মূসা (আ.)-এর আদেশ অমান্য করে নিজেদের ভাগ্যে দুর্ভোগ টেনে এনেছিল। হজরত মূসা (আ.) বনি ইসরাইলিদের মিসরের সম্রাট ফিরাউনের গোলামি থেকে মুক্ত করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই বনি ইসরাইলিরা লোহিত সাগর পার হয়ে নিরাপদে মিসর ছেড়ে চলে এসেছিল এবং ফিরাউন তার সেনাবাহিনী নিয়ে সাগরে ডুবে মৃত্যুবরণ করেছিল। লোহিত সাগর পার হয়ে এসে হজরত মূসা (আ.) বনি ইসরাইলিদের আদি পিতৃভূমি ফিলিস্তিনে আবাসভূমি গড়ে তোলার চেষ্টা করলেন। সেই এলাকা থেকেই হজরত ইয়াকুব (আ.) তাঁর ১২ জন পুত্র নিয়ে মিসরের অভিবাসী হয়েছিলেন। তাঁর এক পুত্র ইউসুফ মিসরের মন্ত্রী হয়েছিলেন।
বনি ইসরাইলিদের আদি বাসস্থানের এলাকাটিতে তখন 'আমালিকা' নামক একটি জাতি বসতি স্থাপন করেছিল। মূসা (আ.) তখন আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে সেই এলাকা থেকে আমালিকাদের বিতাড়িত করে পিতৃভূমি পুনর্দখল করে নিতে বলেছিলেন তাঁর সম্প্রদায়কে। কথিত আছে, বনি ইসরাইল বংশে তখন ১২টি উপদল ছিল। প্রতিটি উপদলের নেতাদের একত্রিত করে তিনি সেই এলাকা পরিদর্শন করতে পাঠিয়েছিলেন। উপদলের নেতারা এলাকা পরিদর্শন করে খবর নিয়ে গেল, সেই এলাকায় এক জবরদস্ত শক্তিশালী জাতি বসবাস করে। মূসা (আ.)-এর নির্দেশ সত্ত্বেও তারা সেই জাতির ওপর আক্রমণ করতে রাজি হলো না। তারা ভয় পেয়ে গেল। অথচ আল্লাহর পক্ষ থেকে মূসা (আ.) তাদের সাহস জুগিয়ে যাচ্ছিলেন। ইউশা ও কালের নামে দুজন ব্যক্তি ছিলেন, যাঁরা মূসা (আ.)-এর নির্দেশনা পালন করতে প্রস্তুত। বাকি সবাই তাঁর বিরোধিতা করছিল।
এ অবস্থায় বনি ইসরাইলিদের আদি পিতৃভূমি পুনরুদ্ধার আর সম্ভব হলো না। তাদের কপালে নেমে এল দুর্ভোগ। দীর্ঘ ৪০ বছর পর্যন্ত তারা তীহ মরু প্রান্তরে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়িয়েছিল। তখন তাদের কোনো আবাসভূমি বা ঠিকানা ছিল না। এরপর বনি ইসরাইলিদের পরের প্রজন্ম 'ইউশা' ও কালের নেতৃত্বে তাদের পিতৃভূমি ফিলিস্তিন পুনর্দখল করেছিল।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments