প্রতিক্রিয়া-‘ক্ষমা করব কি করব না’ by কল্লোল মোস্তফা
প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক হাসান ফেরদৌস গত ২৯ এপ্রিলের প্রথম আলোয় ‘ক্ষমা করব কি করব না’ শিরোনামের একটি কলামে রুয়ান্ডার গণহত্যাকারীদের কথিত ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণার প্রসঙ্গ ধরে একাত্তরের ঘাতক, দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গে বলেন,
‘আমরা, আমি নিজেও বরাবর ঘাতক ও খুনিদের প্রতি আমাদের অনিঃশেষ ঘৃণার কথাই বলে এসেছি। সারা পৃথিবীও যদি ক্ষমা করে, আমরা তাদের ক্ষমা করব না—এমন কথাও বলেছি। কিন্তু তারপর? তারপর কী?’ সারা পৃথিবী ক্ষমা করলেও একাত্তরের ঘাতকদের ক্ষমা করবেন না বলে যিনি মনস্থির করেছিলেন, কী এমন ঘটল যে তিনি আজকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-পরবর্তী সময়কে অনিশ্চিত জ্ঞান করে প্রশ্ন করছেন, ‘কিন্তু তারপর? তারপর কী?’
১৯৯৪ সালের ৬ এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি—এই মোটামুটি ১০০ দিনে রুয়ান্ডার সংখ্যাগুরু হুটু সম্প্রদায় কর্তৃক সংখ্যালঘু টুটসি সম্প্রদায় এবং শান্তিকামী হুটু জনগণসহ প্রায় আট লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসে এটি রুয়ান্ডা জেনোসাইড বলে পরিচিত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর রুয়ান্ডার সরকার ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে এ গণহত্যার বিচার শুরু করে। গণহত্যায় সরাসরি যুক্ত হুটুদের সংখ্যা ব্যাপক হওয়ায় ক্ষমতাসীন সরকার শুরু থেকেই মুশকিলে পড়ে। ২০০০ সাল নাগাদ জেলে অন্তরীণ হুটুদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় এক লাখ ২০ হাজার। ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ মাত্র ১০ হাজার জনের বিচার সম্পন্ন হয়। এই গতিতে বিচার চললে পুরো বিচারকার্য সম্পন্ন হতে সময় লাগবে আরও ১১০ বছর। এ রকম একটি বাস্তবতায় রুয়ান্ডার সরকার বিভিন্ন এনজিও ও চার্চের সহায়তায় ২০০১ সাল থেকে গাসাসা (Gacaca) নামে এক অংশগ্রহণমূলক বিচারব্যবস্থা চালু করে, যার মাধ্যমে প্রতিটি অঞ্চলে স্থানীয় পর্যায়ের সাধারণ অপরাধীদের ঐতিহ্যবাহী স্থানীয় বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে অপরাধের ভিকটিমের মতামতের ভিত্তিতে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করা হয়। এই কোর্টে অপরাধীরা তাদের অপরাধ স্বীকার করার বিনিময়ে শাস্তির মাত্রা কমিয়ে নেওয়ার সুযোগ পায়। সারা দেশে এ রকম আট হাজার ১৪০টি কোর্ট স্থাপন করা হয়েছে। রুয়ান্ডার সরকারি ওয়েবসাইট অনুসারে এই কোর্টগুলোর উদ্দেশ্য তিনটি। প্রথমত, গণহত্যার সময় কী ঘটেছিল, তা পুনরুদ্ধার করা। দ্বিতীয়ত, যত বেশি সম্ভব আদালত স্থাপনের মাধ্যমে বিচার ত্বরান্বিত করা। তৃতীয়ত, রুয়ান্ডার অধিবাসীদের পুনর্মিলন এবং পারস্পরিক ঐক্যের পুনর্গঠন।
এই কোর্টের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত লরা ওয়াটারসনের প্রামাণ্যচিত্র অ্যাজ উই ফরগিভ-এর সূত্র ধরে হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘ক্ষমতা গ্রহণের পর স্বীকৃত ঘাতকদের ক্ষমা ও সম্প্রীতি-প্রতিক্রিয়ার সিদ্ধান্ত আসে নতুন টুটসি-হুটু যৌথ সরকারের কাছ থেকে। বিচারের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব অপরাধীকে জেলে পুরে রাখা অসম্ভব জেনে সাধারণ ক্ষমার সিদ্ধান্ত হলো। কিন্তু সরকারি ক্ষমাই তো যথেষ্ট নয়। মুক্ত এই হাজার হাজার মানুষকে যদি সমাজে সমন্বয় না করা হয়, রুয়ান্ডার বিভক্তি মিটবে না, রাজনৈতিক বিভক্তিও রয়ে যাবে। পল কাগামে ও তাঁর সমর্থক টুটসিরা চাইলে এ বিভক্তি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে পারতেন। তা করেননি, বরং সে ক্ষত মেটাতে সম্প্রীতি-প্রক্রিয়ার অভিনব প্রস্তাব সমর্থন করেছেন।’
টুটসি প্রেসিডেন্ট পল কাগামে এ প্রক্রিয়া সমর্থন করলেও ক্ষতিগ্রস্ত টুটসি জনগণ এ প্রক্রিয়াকে কতটুকু সমর্থন করেছে আর কতটুকু তাঁদের বাধ্য করা হয়েছে কিংবা এ প্রক্রিয়া আদৌ কোনো সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা কি না, কিংবা রুয়ান্ডার হুটু-টুটসির জাতিগত সংঘর্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার ও তার দোসর রাজাকার-আলবদরের চালানো গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের সঙ্গে তুলনা চলে কি না, সে বিতর্কে না গিয়েও নিশ্চিন্তে বলা যায়, এটা স্রেফ আংশিক চিত্র। (রুয়ান্ডার এই সম্প্রতি প্রচেষ্টাকে অনেকে রাষ্ট্রশক্তির জোর করে সম্প্রীতির চেষ্টা বা ফোর্সড রিকনসিলিয়েশন বলছেন। এ বিষয়ে জ্যঁ হাজফেল্ড তাঁর দ্য অ্যান্টিলোপ স্ট্র্যাটেজি: লিভিং ইন রুয়ান্ডা আফটার দ্য জেনোসাইড-২০০৭ বইতে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। (বইটির অংশবিশেষ এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা পাবেন এখানে: http://crimevictimsmediareport.com/?p=2847)। কারণ গাসাসা যখন স্থানীয় পর্যায়ের অপরাধীদের বিচার চালাচ্ছে, জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ট্রাইব্যুনাল ফর রুয়ান্ডা (আইসিটিআর) ১৯৯৪ সালের নভেম্বর থেকে কাজ করছে গণহত্যার মূল হোতাদের বিচারের লক্ষ্যে। ২০১২ সাল নাগাদ এই বিচারকার্য শেষ হওয়ার কথা।
এই ট্রাইব্যুনাল এখন পর্যন্ত রুয়ান্ডার গণহত্যার বিষয়ে ২১টি ট্রায়াল সম্পন্ন করেছেন এবং ২৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। ২০০৯ সালে ট্রাইব্যুনাল গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে মোট ১১ ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত করে জেনারেল থিওনেস্তে বাগাসোরাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে রুয়ান্ডা ও জাতিসংঘের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল অনেক দিন ধরে। অবশেষে ২০০৭ সালে রুয়ান্ডা মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করলে এ দ্বন্দ্বের আনুষ্ঠানিক মীমাংসা হয়। যদিও দেশের অভ্যন্তরে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে জোরালো জনমত রয়েছে। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনাল প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের মেজর অ্যালোয়স এনতাবুকুজে, গিজনেয়ইয়ের অপারেশনাল কমান্ডার কর্নেল আনাতোলে এনসেনগুইয়ুমুয়া, সাবেক প্রেসিডেন্টের শ্যালক প্রটেনস জিগিরানইরাজোকে গণহত্যার পরিকল্পনা ও সহায়তার অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেন। এ ছাড়া আরও ২৩ জনের বিচার চলছে এবং আটজনের বিচার শুরু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো, হাসান ফেরদৌস কী কারণে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে রুয়ান্ডায় গণহত্যার মূল হোতাদের এ চলমান বিচারপ্রক্রিয়াকে পুরোপুরি চেপে গিয়ে রুয়ান্ডার স্থানীয় সম্প্রদায়ের ছোট ছোট আদালতে চলমান বিচারকার্য এবং কথিত সম্প্রীতি-প্রক্রিয়াকে ‘যিশুর ক্ষমাবোধের’ উদাহরণ হিসেবে পাঠকের সামনে হাজির করলেন বিশেষত এমন একটা সময়, যখন বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার-প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি চলছে।
কল্লোল মোস্তফা: প্রকৌশলী ও বিশ্লেষক।
১৯৯৪ সালের ৬ এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি—এই মোটামুটি ১০০ দিনে রুয়ান্ডার সংখ্যাগুরু হুটু সম্প্রদায় কর্তৃক সংখ্যালঘু টুটসি সম্প্রদায় এবং শান্তিকামী হুটু জনগণসহ প্রায় আট লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসে এটি রুয়ান্ডা জেনোসাইড বলে পরিচিত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর রুয়ান্ডার সরকার ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে এ গণহত্যার বিচার শুরু করে। গণহত্যায় সরাসরি যুক্ত হুটুদের সংখ্যা ব্যাপক হওয়ায় ক্ষমতাসীন সরকার শুরু থেকেই মুশকিলে পড়ে। ২০০০ সাল নাগাদ জেলে অন্তরীণ হুটুদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় এক লাখ ২০ হাজার। ১৯৯৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ মাত্র ১০ হাজার জনের বিচার সম্পন্ন হয়। এই গতিতে বিচার চললে পুরো বিচারকার্য সম্পন্ন হতে সময় লাগবে আরও ১১০ বছর। এ রকম একটি বাস্তবতায় রুয়ান্ডার সরকার বিভিন্ন এনজিও ও চার্চের সহায়তায় ২০০১ সাল থেকে গাসাসা (Gacaca) নামে এক অংশগ্রহণমূলক বিচারব্যবস্থা চালু করে, যার মাধ্যমে প্রতিটি অঞ্চলে স্থানীয় পর্যায়ের সাধারণ অপরাধীদের ঐতিহ্যবাহী স্থানীয় বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে অপরাধের ভিকটিমের মতামতের ভিত্তিতে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করা হয়। এই কোর্টে অপরাধীরা তাদের অপরাধ স্বীকার করার বিনিময়ে শাস্তির মাত্রা কমিয়ে নেওয়ার সুযোগ পায়। সারা দেশে এ রকম আট হাজার ১৪০টি কোর্ট স্থাপন করা হয়েছে। রুয়ান্ডার সরকারি ওয়েবসাইট অনুসারে এই কোর্টগুলোর উদ্দেশ্য তিনটি। প্রথমত, গণহত্যার সময় কী ঘটেছিল, তা পুনরুদ্ধার করা। দ্বিতীয়ত, যত বেশি সম্ভব আদালত স্থাপনের মাধ্যমে বিচার ত্বরান্বিত করা। তৃতীয়ত, রুয়ান্ডার অধিবাসীদের পুনর্মিলন এবং পারস্পরিক ঐক্যের পুনর্গঠন।
এই কোর্টের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত লরা ওয়াটারসনের প্রামাণ্যচিত্র অ্যাজ উই ফরগিভ-এর সূত্র ধরে হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘ক্ষমতা গ্রহণের পর স্বীকৃত ঘাতকদের ক্ষমা ও সম্প্রীতি-প্রতিক্রিয়ার সিদ্ধান্ত আসে নতুন টুটসি-হুটু যৌথ সরকারের কাছ থেকে। বিচারের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব অপরাধীকে জেলে পুরে রাখা অসম্ভব জেনে সাধারণ ক্ষমার সিদ্ধান্ত হলো। কিন্তু সরকারি ক্ষমাই তো যথেষ্ট নয়। মুক্ত এই হাজার হাজার মানুষকে যদি সমাজে সমন্বয় না করা হয়, রুয়ান্ডার বিভক্তি মিটবে না, রাজনৈতিক বিভক্তিও রয়ে যাবে। পল কাগামে ও তাঁর সমর্থক টুটসিরা চাইলে এ বিভক্তি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে পারতেন। তা করেননি, বরং সে ক্ষত মেটাতে সম্প্রীতি-প্রক্রিয়ার অভিনব প্রস্তাব সমর্থন করেছেন।’
টুটসি প্রেসিডেন্ট পল কাগামে এ প্রক্রিয়া সমর্থন করলেও ক্ষতিগ্রস্ত টুটসি জনগণ এ প্রক্রিয়াকে কতটুকু সমর্থন করেছে আর কতটুকু তাঁদের বাধ্য করা হয়েছে কিংবা এ প্রক্রিয়া আদৌ কোনো সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা কি না, কিংবা রুয়ান্ডার হুটু-টুটসির জাতিগত সংঘর্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার ও তার দোসর রাজাকার-আলবদরের চালানো গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের সঙ্গে তুলনা চলে কি না, সে বিতর্কে না গিয়েও নিশ্চিন্তে বলা যায়, এটা স্রেফ আংশিক চিত্র। (রুয়ান্ডার এই সম্প্রতি প্রচেষ্টাকে অনেকে রাষ্ট্রশক্তির জোর করে সম্প্রীতির চেষ্টা বা ফোর্সড রিকনসিলিয়েশন বলছেন। এ বিষয়ে জ্যঁ হাজফেল্ড তাঁর দ্য অ্যান্টিলোপ স্ট্র্যাটেজি: লিভিং ইন রুয়ান্ডা আফটার দ্য জেনোসাইড-২০০৭ বইতে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। (বইটির অংশবিশেষ এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা পাবেন এখানে: http://crimevictimsmediareport.com/?p=2847)। কারণ গাসাসা যখন স্থানীয় পর্যায়ের অপরাধীদের বিচার চালাচ্ছে, জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ট্রাইব্যুনাল ফর রুয়ান্ডা (আইসিটিআর) ১৯৯৪ সালের নভেম্বর থেকে কাজ করছে গণহত্যার মূল হোতাদের বিচারের লক্ষ্যে। ২০১২ সাল নাগাদ এই বিচারকার্য শেষ হওয়ার কথা।
এই ট্রাইব্যুনাল এখন পর্যন্ত রুয়ান্ডার গণহত্যার বিষয়ে ২১টি ট্রায়াল সম্পন্ন করেছেন এবং ২৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। ২০০৯ সালে ট্রাইব্যুনাল গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে মোট ১১ ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত করে জেনারেল থিওনেস্তে বাগাসোরাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে রুয়ান্ডা ও জাতিসংঘের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল অনেক দিন ধরে। অবশেষে ২০০৭ সালে রুয়ান্ডা মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করলে এ দ্বন্দ্বের আনুষ্ঠানিক মীমাংসা হয়। যদিও দেশের অভ্যন্তরে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে জোরালো জনমত রয়েছে। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনাল প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের মেজর অ্যালোয়স এনতাবুকুজে, গিজনেয়ইয়ের অপারেশনাল কমান্ডার কর্নেল আনাতোলে এনসেনগুইয়ুমুয়া, সাবেক প্রেসিডেন্টের শ্যালক প্রটেনস জিগিরানইরাজোকে গণহত্যার পরিকল্পনা ও সহায়তার অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেন। এ ছাড়া আরও ২৩ জনের বিচার চলছে এবং আটজনের বিচার শুরু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো, হাসান ফেরদৌস কী কারণে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে রুয়ান্ডায় গণহত্যার মূল হোতাদের এ চলমান বিচারপ্রক্রিয়াকে পুরোপুরি চেপে গিয়ে রুয়ান্ডার স্থানীয় সম্প্রদায়ের ছোট ছোট আদালতে চলমান বিচারকার্য এবং কথিত সম্প্রীতি-প্রক্রিয়াকে ‘যিশুর ক্ষমাবোধের’ উদাহরণ হিসেবে পাঠকের সামনে হাজির করলেন বিশেষত এমন একটা সময়, যখন বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার-প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি চলছে।
কল্লোল মোস্তফা: প্রকৌশলী ও বিশ্লেষক।
No comments