প্রতিক্রিয়া-‘বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর আস্তাকুঁড়?’ by সাইফুল হক
গত ৩০ এপ্রিল ‘বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর আস্তাকুঁড়?’ শিরোনামে মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের একটি লেখা ছাপা হয়েছে প্রথম আলো পত্রিকায়। জাহাজভাঙা শিল্প নিয়ে লেখাটি পড়ার পর তা নিয়ে দু-চারটি কথা বলার দরকার বোধ করি।
স্যার যে চলচ্চিত্রটির (লোহাখোর) মাধ্যমে তাঁর লেখাটির সূচনা করেছেন, তার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। প্রথমত চলচ্চিত্রকার শাহীন দিল রিয়াজ আমার বন্ধুদের অন্যতম। দ্বিতীয়ত, এই চলচ্চিত্রের সঙ্গে আমি একভাবে যুক্ত হয়ে পড়েছি। আমি পেশায় একজন আলোকচিত্রী। বহুকাল ধরেই জাহাজভাঙা শিল্প নিয়ে কাজ করার আগ্রহ আমার ছিল। অবশেষে শাহীনের সহায়তায় আমি আমার কাজটি শুরু করতে পারি। শাহীন যে ইয়ার্ডে তাঁর চলচ্চিত্রটি বানিয়েছেন, সেই একই ইয়ার্ডে আমি দীর্ঘ দেড় বছর কাজ করেছি।
জাফর স্যারের মূল আলোচনাটি হচ্ছে শ্রমিকদের অসহনীয় জীবন, পরিবেশদূষণ এবং শ্রমিকদের আহত ও নিহত হওয়া, এক দেশের বর্জ্য অন্য দেশে নেওয়া ইত্যাকার প্রসঙ্গ। তিনি মনে করেন, এই শিল্প বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
প্রশ্ন হচ্ছে, এই শিল্প কি বন্ধ করে দেওয়া উচিত? উত্তর—অবশ্যই। কিন্তু এখানে একটা কিন্তু আছে। বন্ধ তখনই করা উচিত, যখন দেখা যাবে জাহাজভাঙা শিল্প মানেই এই! মানে এর উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু বাস্তবে সত্যটি তা নয়। সত্যটি হচ্ছে, এই শিল্পের সংকটগুলো অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। স্যার নিজের লেখায়ও তা স্বীকার করেছেন। তিনি উদাহরণ দিয়েছেন চীনের, যারা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে। আমাদের জানা প্রয়োজন যে একটি আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে শ্রমিকদের স্বার্থ ও পরিবেশ ধ্বংস না করেও এই জাহাজ ভাঙার কাজটি করা সম্ভব।
ইতিমধ্যে সেই প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমরা এমন এক মরার দেশে বসবাস করি, যেখানে সরকার পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষার মধ্য দিয়েই নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে। এই নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করলেই সমস্যাটির একটি বড় অংশের সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু জাহাজভাঙা ইয়ার্ডের মালিকেরা তা করতে নারাজ। এমনিতেই যখন হাজার হাজার কোটি টাকা বানানো যাচ্ছে, তখন নতুন বিনিয়োগের প্রয়োজন কোথায়! স্যারের প্রস্তাবমতো শিল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হবে মাথা ধরলে মাথা কেটে ফেলার শামিল।
আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে সেই শ্রমিকদের কথা, যাঁরা ‘বাধ্য’ হয়ে এই কাজে আসেন। আমরা জানি যে এই শ্রমিকদের বড় অংশই আসেন আমাদের মঙ্গাপীড়িত অঞ্চলগুলো থেকে। আর তাঁরা আসেন বাধ্য হয়েই, না খেতে পেয়ে মরে যাওয়ার আগমুহূর্তে। এই শিল্প বন্ধ করার মানে হচ্ছে অনেক পরিবারকে নিশ্চিত বিপর্যয়ের মুখে ফেলা। আমাদের ভেবে দেখা উচিত সেটা বাস্তবসম্মত হবে কি না।
যাঁরা আমাদের অন্যান্য শিল্পের অবস্থা জানেন, তাঁরা জানেন যে অন্যত্রও শ্রমিকদের প্রতি নানা অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। এসব কারণে আমরা আমাদের অনেক গার্মেন্টস, ট্যানারি বা রি-রোলিং মিল বন্ধ করে দিতে পারছি না। আমরা যা পারি তা হচ্ছে শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষার যে কবচ—শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার, ন্যূনতম মজুরি, নিরাপত্তা, চিকিৎসা ইত্যাদি পাওয়ার যেসব অধিকার তার পক্ষে সোচ্চার হতে।
আমরা যারা জাহাজভাঙার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছি, তারা ইয়ার্ডগুলোর মালিকদের বিরুদ্ধে, শ্রমিকদের হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারের দাবি তুলতে পারছি না। ধরা যাক, কালই আমাদের ইয়ার্ডগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলো। আমরা কেউ নিশ্চয়ই আশা করি না আমাদের সরকার পরশুই হত্যার অভিযোগে এসব মালিককে গ্রেপ্তার করবে? আমরা জানি, এই রাষ্ট্র কখনোই পুঁজিপতিদের বিপক্ষে দাঁড়াবে না, তাঁদের বিচারের সামনে দাঁড় করাবে না। তাঁদের বিচার শুধু করতে পারে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলনই। জনতার আদালতে তাঁদের নিয়ে আসতে পারে শ্রমিকেরাই। ভাবা দরকার, যে হাজার কোটি টাকা এই শিল্পে নিয়োজিত, যে রি-রোলিং মিলগুলো শত শত কোটি টাকা ব্যাংক লোনে জাহাজভাঙা শিল্পের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে, তাদের কী হবে? ফলে আমাদের বিকল্প কোনো পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোই যৌক্তিক বলে মনে হয়।
যাঁরা শিল্পায়নের ইতিহাস জানেন, তাঁরা জানেন যে সস্তা শ্রম, ভৌগোলিক অবস্থানসহ বহু কিছু এর সঙ্গে যুক্ত। পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও শিল্পায়ন সম্ভব হয় না, যদি না সেখানে শ্রমের মূল্য অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হয়। বলা হয় যে অন্যরা করে না, আমরা করব কেন? কারণ দুটি। জাহাজ ভাঙার জন্য সাগরের ভৌগোলিক একটি গঠন প্রয়োজন পড়ে। আমাদের সাগরের যে সোপান, তা আমাদের লক্ষাধিক টনের যে জাহাজ তা একদম সমুদ্রতীরে নিয়ে আসতে দেয়। পৃথিবীর বহু দেশ চাইলেও তা পারবে না। প্রকৃতি তাদের সেই সুযোগ দেয়নি! আর দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে সস্তা শ্রম। এখন একটি ‘স্ক্র্যাপ’ জাহাজের যে দাম, তা যদি কিনতে হয়, তারপর শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে চাইলেই একটি উন্নত দেশের পুঁজিপতিরা মুনাফা করতে পারবেন না।
বলা হয় জাহাজের বর্জ্যের কথা। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এক দেশের বর্জ্য অন্য দেশে যেতে পারে না। যে ‘প্রি ক্লিনিং’-এর কথা বলা হয়, কেন আমাদের সরকার তা করতে ইয়ার্ড মালিকদের করতে বাধ্য করে না? আর অন্যান্য যে বর্জ্য আসে জাহাজে, তা সহজেই আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিষ্কার করা যেতে পারে।
আমাদের এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে, আর সবার আগে ভাবতে হবে মানুষের কথা। আর সেই মানুষ কোনো শ্রেণী-পরিচয়হীন, বর্গ আর বর্ণের ঊর্ধ্বের কোনো বায়বীয় ধারণা নয়, সেই মানুষগুলো হচ্ছে শ্রমিক মানুষ। ‘শিল্প বন্ধ’ পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করেনি—ইতিহাস সাক্ষী। পুঁজিপতিরা বড়জোর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় তাঁদের পুঁজি ‘স্থানান্তর’ করেছেন আর শ্রমিকেরা না খেয়ে শুকিয়ে মরে গেছেন—ইতিহাস সাক্ষী। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিকদের জন্য ইয়ার্ড বন্ধ মানে মুনাফা তৈরির রাস্তা আপাতত বন্ধ। তাঁরা যে মুনাফার জন্য অন্য রাস্তা খুঁজে নেবেন, তা কে না জানে!
সাইফুল হক: আলোকচিত্রী।
saifulhuq88@gmail.com
জাফর স্যারের মূল আলোচনাটি হচ্ছে শ্রমিকদের অসহনীয় জীবন, পরিবেশদূষণ এবং শ্রমিকদের আহত ও নিহত হওয়া, এক দেশের বর্জ্য অন্য দেশে নেওয়া ইত্যাকার প্রসঙ্গ। তিনি মনে করেন, এই শিল্প বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
প্রশ্ন হচ্ছে, এই শিল্প কি বন্ধ করে দেওয়া উচিত? উত্তর—অবশ্যই। কিন্তু এখানে একটা কিন্তু আছে। বন্ধ তখনই করা উচিত, যখন দেখা যাবে জাহাজভাঙা শিল্প মানেই এই! মানে এর উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু বাস্তবে সত্যটি তা নয়। সত্যটি হচ্ছে, এই শিল্পের সংকটগুলো অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। স্যার নিজের লেখায়ও তা স্বীকার করেছেন। তিনি উদাহরণ দিয়েছেন চীনের, যারা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে। আমাদের জানা প্রয়োজন যে একটি আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে শ্রমিকদের স্বার্থ ও পরিবেশ ধ্বংস না করেও এই জাহাজ ভাঙার কাজটি করা সম্ভব।
ইতিমধ্যে সেই প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমরা এমন এক মরার দেশে বসবাস করি, যেখানে সরকার পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষার মধ্য দিয়েই নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে। এই নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করলেই সমস্যাটির একটি বড় অংশের সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু জাহাজভাঙা ইয়ার্ডের মালিকেরা তা করতে নারাজ। এমনিতেই যখন হাজার হাজার কোটি টাকা বানানো যাচ্ছে, তখন নতুন বিনিয়োগের প্রয়োজন কোথায়! স্যারের প্রস্তাবমতো শিল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হবে মাথা ধরলে মাথা কেটে ফেলার শামিল।
আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে সেই শ্রমিকদের কথা, যাঁরা ‘বাধ্য’ হয়ে এই কাজে আসেন। আমরা জানি যে এই শ্রমিকদের বড় অংশই আসেন আমাদের মঙ্গাপীড়িত অঞ্চলগুলো থেকে। আর তাঁরা আসেন বাধ্য হয়েই, না খেতে পেয়ে মরে যাওয়ার আগমুহূর্তে। এই শিল্প বন্ধ করার মানে হচ্ছে অনেক পরিবারকে নিশ্চিত বিপর্যয়ের মুখে ফেলা। আমাদের ভেবে দেখা উচিত সেটা বাস্তবসম্মত হবে কি না।
যাঁরা আমাদের অন্যান্য শিল্পের অবস্থা জানেন, তাঁরা জানেন যে অন্যত্রও শ্রমিকদের প্রতি নানা অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। এসব কারণে আমরা আমাদের অনেক গার্মেন্টস, ট্যানারি বা রি-রোলিং মিল বন্ধ করে দিতে পারছি না। আমরা যা পারি তা হচ্ছে শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষার যে কবচ—শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার, ন্যূনতম মজুরি, নিরাপত্তা, চিকিৎসা ইত্যাদি পাওয়ার যেসব অধিকার তার পক্ষে সোচ্চার হতে।
আমরা যারা জাহাজভাঙার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছি, তারা ইয়ার্ডগুলোর মালিকদের বিরুদ্ধে, শ্রমিকদের হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারের দাবি তুলতে পারছি না। ধরা যাক, কালই আমাদের ইয়ার্ডগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলো। আমরা কেউ নিশ্চয়ই আশা করি না আমাদের সরকার পরশুই হত্যার অভিযোগে এসব মালিককে গ্রেপ্তার করবে? আমরা জানি, এই রাষ্ট্র কখনোই পুঁজিপতিদের বিপক্ষে দাঁড়াবে না, তাঁদের বিচারের সামনে দাঁড় করাবে না। তাঁদের বিচার শুধু করতে পারে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলনই। জনতার আদালতে তাঁদের নিয়ে আসতে পারে শ্রমিকেরাই। ভাবা দরকার, যে হাজার কোটি টাকা এই শিল্পে নিয়োজিত, যে রি-রোলিং মিলগুলো শত শত কোটি টাকা ব্যাংক লোনে জাহাজভাঙা শিল্পের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে, তাদের কী হবে? ফলে আমাদের বিকল্প কোনো পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোই যৌক্তিক বলে মনে হয়।
যাঁরা শিল্পায়নের ইতিহাস জানেন, তাঁরা জানেন যে সস্তা শ্রম, ভৌগোলিক অবস্থানসহ বহু কিছু এর সঙ্গে যুক্ত। পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও শিল্পায়ন সম্ভব হয় না, যদি না সেখানে শ্রমের মূল্য অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হয়। বলা হয় যে অন্যরা করে না, আমরা করব কেন? কারণ দুটি। জাহাজ ভাঙার জন্য সাগরের ভৌগোলিক একটি গঠন প্রয়োজন পড়ে। আমাদের সাগরের যে সোপান, তা আমাদের লক্ষাধিক টনের যে জাহাজ তা একদম সমুদ্রতীরে নিয়ে আসতে দেয়। পৃথিবীর বহু দেশ চাইলেও তা পারবে না। প্রকৃতি তাদের সেই সুযোগ দেয়নি! আর দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে সস্তা শ্রম। এখন একটি ‘স্ক্র্যাপ’ জাহাজের যে দাম, তা যদি কিনতে হয়, তারপর শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে চাইলেই একটি উন্নত দেশের পুঁজিপতিরা মুনাফা করতে পারবেন না।
বলা হয় জাহাজের বর্জ্যের কথা। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এক দেশের বর্জ্য অন্য দেশে যেতে পারে না। যে ‘প্রি ক্লিনিং’-এর কথা বলা হয়, কেন আমাদের সরকার তা করতে ইয়ার্ড মালিকদের করতে বাধ্য করে না? আর অন্যান্য যে বর্জ্য আসে জাহাজে, তা সহজেই আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিষ্কার করা যেতে পারে।
আমাদের এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে, আর সবার আগে ভাবতে হবে মানুষের কথা। আর সেই মানুষ কোনো শ্রেণী-পরিচয়হীন, বর্গ আর বর্ণের ঊর্ধ্বের কোনো বায়বীয় ধারণা নয়, সেই মানুষগুলো হচ্ছে শ্রমিক মানুষ। ‘শিল্প বন্ধ’ পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করেনি—ইতিহাস সাক্ষী। পুঁজিপতিরা বড়জোর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় তাঁদের পুঁজি ‘স্থানান্তর’ করেছেন আর শ্রমিকেরা না খেয়ে শুকিয়ে মরে গেছেন—ইতিহাস সাক্ষী। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিকদের জন্য ইয়ার্ড বন্ধ মানে মুনাফা তৈরির রাস্তা আপাতত বন্ধ। তাঁরা যে মুনাফার জন্য অন্য রাস্তা খুঁজে নেবেন, তা কে না জানে!
সাইফুল হক: আলোকচিত্রী।
saifulhuq88@gmail.com
No comments