এক্সট্রা ভাব

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনগুলোর কথা। গ্রাম থেকে প্রথম শহরে এসেছি বলেই মনে হচ্ছে, একটু বেশিই বোকা টাইপের ছিলাম। শহরের নিয়মকানুন বুঝে উঠতেই অনেক দিন লাগল। কোনো একদিন বাসে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলাম। প্রথম দিকে একাই একটি সিট দখল করে বসে ছিলাম। কিছুক্ষণ পর একটি মেয়ে বাসে উঠল।


তার চেহারা-সুরতের বর্ণনা দিলে হয়তো একটু কমই বলা হবে। তাহলে থাক, না-ই বা বললাম।
যাহোক, আশপাশে দু-চারটি সিট খালি থাকা সত্ত্বেও কেন জানি মেয়েটি আমার পাশে বসল। গ্রাম থেকে আসায় আমি মেয়েটি থেকে ‘সাহারা মরুভূমি’ সমান দূরত্ব বজায় রেখে বসলাম।
‘আরে, ইজি হয়ে বসেন’জাতীয় বাক্যে সংবিৎ ফিরে পেলাম। বুকের মধ্যে একপ্রকার সাহসের সঞ্চার এবং সুন্দরী মেয়ে দেখলে যেমন ভাব প্রকাশ পায়, তেমনি এক্সট্রা ভাব চলে এল আমার মধ্যে।
এক বন্ধুর সঙ্গে ফোনে কথা বলছি এবং বলছিলাম, ‘আরে না না, এই নম্বর ব্যবহার করব না। আমার নতুন নম্বরটা নে। আমি বারকয়েক আমার নম্বরটা উচ্চ স্বরে বললাম এবং ধমকের স্বরে বলছিলাম, ‘তোর কানে কোনো সমস্যা আছে নাকি? এমন সহজ নম্বর মুখস্থ করতে পারিস না!’
মূলত, আমি চাচ্ছিলাম, নম্বরটা মেয়েটিকে মুখস্থ করাতে। ব্যাপারটা এখানেই থেমে থাকলে ভালো হতো। বিপত্তি ঘটল অন্যখানে। হঠাৎ আমার মোবাইলে বিকট শব্দে রিংটোন বেজে উঠল। মেয়েটির বুঝতে একমুহূর্ত বাকি রইল না যে এটা ছিল অভিনয়।
যাহোক, পুরো ভাড়া দেওয়া সত্ত্বেও অর্ধেক রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় খুঁজে পেলাম না। একেই বলে এক্সট্রা ভাব।
 মো. শাহীন
দর্শন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

No comments

Powered by Blogger.