পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহ সন্তান জন্মদানসহ সব রকম সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে এবং মুক্ত
৬৫. ওয়ালা ইয়াহ্যুনকা ক্বাওলুহুম; ইন্নাল ই'য্যাতা লিল্লাহি জামীআ'-; হুওয়া চ্ছামীউ'ল আ'লীম।৬৬. আলা ইন্না লিল্লাহি মান ফিচ্ছামাওয়াতি ওয়া মান ফিল আরদ্ব; ওয়া মা-ইয়াত্তাবিউ'ল্লাযীনা ইয়াদ্ঊ'না মিন দুনিল্লাহি শুরাকা-আ; ইইঁ য়্যাত্তাবিঊ'না ইল্লায্ যান্না ওয়া ইন হুম ইল্লা- ইয়াখ্রুসূন।
৬৭. হুওয়াল্লাযী জাআ'লা লাকুমুল্লাইলা লিতাছ্কুনূ ফীহি ওয়া ন্নাহারা মুব্সিরা-; ইন্না ফী যা-লিকা লাআইয়াতি ল্লাক্বাওমিইঁ য়্যাছ্মাঊন।
৬৮. ক্বা-লু ত্তাখাযাল্লা-হু ওয়ালাদান ছুব্হানাহূ; হুওয়াল গানিয়্যু; লাহূ মা- ফি চ্ছামা-ওয়া-তি ওয়া মা- ফিল আরদ্ব; ইন ই'নদাকুম্ মিন ছুলত্বানিম্ বিহা-যা-; আতাক্বূলূনা আ'লাল্লাহি মা- লা- তা'লামূন।
[সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৬৫-৬৮]
অনুবাদ
৬৫. (হে নবী) আপনি তাদের কথায় কষ্ট নেবেন না। সম্মানের অধিকার সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর। তিনি সব কিছু শোনেন এবং সব কিছু জানেন।
৬৬. জেনে রেখো, যা কিছু আকাশমণ্ডলে আর যা কিছু পৃথিবীতে আছে, সবই আল্লাহর। (অর্থাৎ আল্লাহর আনুগত্যে পরিচালিত) যারা আল্লাহ ছাড়া বানোয়াট শরিকদের ডাকে, তারা সত্যের আনুগত্য করে না; বরং তারা অলীক ধারণার আনুগত্য করে। আর এরা তো অবাস্তবকেই আঁকড়ে আছে।
৬৭. তিনিই আল্লাহ যিনি তোমাদের জন্য রাত সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম গ্রহণ করতে পারো। আর দিনকে তোমাদের জন্য করে দিয়েছেন আলোকময়। নিশ্চয়ই এতে সেসব লোকদের জন্য নিদর্শন রয়েছে, যারা মনোযোগের সঙ্গে শোনে।
৬৮. (কিছু ভ্রান্ত লোক আছে) এরা বলে, আল্লাহর সন্তান আছে। অথচ তাঁর সত্তা (এ ধরনের অবস্থা থেকে) পবিত্র। তিনি সব কিছুর ঊর্ধ্বে। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সব কিছুই তাঁর অধিকারে। (তোমরা যে তাঁর সন্তানের কথা বলছ) তোমাদের কাছে তো এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। তোমরা কি আল্লাহ সম্পর্কে এমন কথা বলছ, যে সম্পর্কে তোমরা কিছু জান না?
ব্যাখ্যা
৬৫ ও ৬৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুলকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। মক্কার স্বগোত্রীয় কাফিররা খোদ রাসুল (সা.) এবং তাঁর সহচর মুসলমানদের কারণে-অকারণে দৈহিকভাবে যেমন কষ্ট দিত, তেমনি তাদের আচরণ মানসিকভাবেও তাঁর জন্য তীব্র কষ্টের কারণ হতো। আল্লাহ তায়ালা এ ব্যাপারে রাসুল (সা.)-কে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। এখানে যে মূল কথাটা বলা হয়েছে তা হলো, কাফিররা তাঁকে অপমানিত করার চেষ্টা করছে, তাঁর সম্মান স্বীকার করছে না, আল্লাহর নবী হওয়ার দরুন তাঁকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সব সম্মানের মালিক একমাত্র আল্লাহ। কাফিরদের সম্মান করা না করার দরুন তাঁর কিছু যায় আসে না, কারণ কাফিরদের নিজেদেরই কোনো সম্মান নেই। ৬৭ নম্বর আয়াতে দিবারাত্র সৃষ্টির ব্যবহারিক রহস্য স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে যারা এগুলো লক্ষ করে, তারা আল্লাহর কুদরত সম্পর্কে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়।
৬৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহর সন্তান আছে বলে যারা ভ্রান্ত চিন্তা প্রচার করে, তাদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। এটা আল্লাহ সম্পর্কে মৌলিক ধারণার এক চূড়ান্ত লঙ্ঘন। আল্লাহ আসলে এ রকম নন। আল্লাহ সব রকম দৈহিক ও মানবিক সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত ও পবিত্র। প্রজননের ধারণা তাঁর ওপর প্রযোজ্য নয়। তিনি অসীম, অনন্ত এবং সর্বময় চৈতন্য ও ক্ষমতার ধারক বিমূর্ত সত্তা। তিনি সৃষ্টিকুলের সব বৈশিষ্ট্য থেকে মুক্ত ও পবিত্র। সৃষ্টিকুলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, সীমাবদ্ধতা ও মুখাপেক্ষিতা। কিন্তু আল্লাহ স্বয়ম্ভূ এবং সব কিছুর ঊর্ধ্বে। তাঁর চিরন্তন অস্তিত্বের জন্য অন্য কিছুর প্রয়োজন নেই। সুতরাং আল্লাহ সম্পর্কে প্রকৃত ধারণার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি থাকলে ইসলামকে ধারণ করা অসম্ভব।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৬৮. ক্বা-লু ত্তাখাযাল্লা-হু ওয়ালাদান ছুব্হানাহূ; হুওয়াল গানিয়্যু; লাহূ মা- ফি চ্ছামা-ওয়া-তি ওয়া মা- ফিল আরদ্ব; ইন ই'নদাকুম্ মিন ছুলত্বানিম্ বিহা-যা-; আতাক্বূলূনা আ'লাল্লাহি মা- লা- তা'লামূন।
[সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৬৫-৬৮]
অনুবাদ
৬৫. (হে নবী) আপনি তাদের কথায় কষ্ট নেবেন না। সম্মানের অধিকার সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর। তিনি সব কিছু শোনেন এবং সব কিছু জানেন।
৬৬. জেনে রেখো, যা কিছু আকাশমণ্ডলে আর যা কিছু পৃথিবীতে আছে, সবই আল্লাহর। (অর্থাৎ আল্লাহর আনুগত্যে পরিচালিত) যারা আল্লাহ ছাড়া বানোয়াট শরিকদের ডাকে, তারা সত্যের আনুগত্য করে না; বরং তারা অলীক ধারণার আনুগত্য করে। আর এরা তো অবাস্তবকেই আঁকড়ে আছে।
৬৭. তিনিই আল্লাহ যিনি তোমাদের জন্য রাত সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম গ্রহণ করতে পারো। আর দিনকে তোমাদের জন্য করে দিয়েছেন আলোকময়। নিশ্চয়ই এতে সেসব লোকদের জন্য নিদর্শন রয়েছে, যারা মনোযোগের সঙ্গে শোনে।
৬৮. (কিছু ভ্রান্ত লোক আছে) এরা বলে, আল্লাহর সন্তান আছে। অথচ তাঁর সত্তা (এ ধরনের অবস্থা থেকে) পবিত্র। তিনি সব কিছুর ঊর্ধ্বে। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সব কিছুই তাঁর অধিকারে। (তোমরা যে তাঁর সন্তানের কথা বলছ) তোমাদের কাছে তো এর সপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। তোমরা কি আল্লাহ সম্পর্কে এমন কথা বলছ, যে সম্পর্কে তোমরা কিছু জান না?
ব্যাখ্যা
৬৫ ও ৬৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুলকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। মক্কার স্বগোত্রীয় কাফিররা খোদ রাসুল (সা.) এবং তাঁর সহচর মুসলমানদের কারণে-অকারণে দৈহিকভাবে যেমন কষ্ট দিত, তেমনি তাদের আচরণ মানসিকভাবেও তাঁর জন্য তীব্র কষ্টের কারণ হতো। আল্লাহ তায়ালা এ ব্যাপারে রাসুল (সা.)-কে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। এখানে যে মূল কথাটা বলা হয়েছে তা হলো, কাফিররা তাঁকে অপমানিত করার চেষ্টা করছে, তাঁর সম্মান স্বীকার করছে না, আল্লাহর নবী হওয়ার দরুন তাঁকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সব সম্মানের মালিক একমাত্র আল্লাহ। কাফিরদের সম্মান করা না করার দরুন তাঁর কিছু যায় আসে না, কারণ কাফিরদের নিজেদেরই কোনো সম্মান নেই। ৬৭ নম্বর আয়াতে দিবারাত্র সৃষ্টির ব্যবহারিক রহস্য স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে যারা এগুলো লক্ষ করে, তারা আল্লাহর কুদরত সম্পর্কে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়।
৬৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহর সন্তান আছে বলে যারা ভ্রান্ত চিন্তা প্রচার করে, তাদের দাবি খণ্ডন করা হয়েছে। এটা আল্লাহ সম্পর্কে মৌলিক ধারণার এক চূড়ান্ত লঙ্ঘন। আল্লাহ আসলে এ রকম নন। আল্লাহ সব রকম দৈহিক ও মানবিক সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত ও পবিত্র। প্রজননের ধারণা তাঁর ওপর প্রযোজ্য নয়। তিনি অসীম, অনন্ত এবং সর্বময় চৈতন্য ও ক্ষমতার ধারক বিমূর্ত সত্তা। তিনি সৃষ্টিকুলের সব বৈশিষ্ট্য থেকে মুক্ত ও পবিত্র। সৃষ্টিকুলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, সীমাবদ্ধতা ও মুখাপেক্ষিতা। কিন্তু আল্লাহ স্বয়ম্ভূ এবং সব কিছুর ঊর্ধ্বে। তাঁর চিরন্তন অস্তিত্বের জন্য অন্য কিছুর প্রয়োজন নেই। সুতরাং আল্লাহ সম্পর্কে প্রকৃত ধারণার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি থাকলে ইসলামকে ধারণ করা অসম্ভব।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments