ভারত সীমান্তে গরু এখন গোপন সুড়ঙ্গে
অবিশ্বাস্য
হলেও সত্য যে, ঈদকে সামনে রেখে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে এখন মাটির নিচে গরু
মিলছে। মাটি ফুঁড়ে বেরুচ্ছে গরু। তবে এই গরু সেই গরু নয়। এই গরু হলো
চোরাই গরু। গতকাল টাইমস অব ইন্ডিয়া খবর দিয়েছে, শিলচরে সীমান্ত রক্ষী
বাহিনীরা মাটির নিচে গরু চোরাচালানের কাজে ব্যবহৃত একটি গোপন সুড়ঙ্গ
আবিষ্কার করেছে। এর একদিন আগে নিউজএইটিন ডটকম বলেছে, বাংলাদেশী গরু
চোরাচালানিরা নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। তারা এখন সীমান্ত রক্ষীদের ফাঁকি
দিতে সীমান্ত সড়কের ওপর থাকা বক্সকালভার্টের মধ্যে গরু ঢুকিয়ে পাচার করছে।
ঈদকে সামনে রেখে দক্ষিণ আসামের বিভিন্ন চোরাই রুট আবার চাঙ্গা হয়ে
উঠেছে। নিলামা বাজার এলকায় প্রায় ২০ ফুট লম্বা একটি কালভার্ট অতিক্রমকালে
পুলিশ গত সোমবার রাতে দু’ব্যক্তিকে আটক করেছে। এরা সিলেটের বড়লেখার আতাউর
রহমান ও শামসুল ইসলাম। করিমগঞ্জের পুলিশ সুপার গৌরব উপাধ্যায় বলেছেন,
বাংলাদেশী গরু চোরাচালানিরা চোরাচালানকে নির্বিঘœ করতে ভারতীয় স্থানীয়দের
নিয়োগ দিয়ে থাকে। গত মাসে করিমগঞ্জের পুলিশ ১০ চোরাচালনিকে গ্রেপ্তার
করেছে। তারা এই গোপন সুড়ঙ্গ দলের নতুন সদস্য বলেই মনে করা হচ্ছে। পুলিশ
সুপার জানান, কালভার্টের পাইপগুলো ১০ থেকে ১৫ ফুট নিচে প্রোথিত। টহল দেয়ার
সড়কগুলো সাধারণত ৩ ফুট ব্যাসের। করিমগঞ্জের এ রকম রাস্তা আছে ১০৬ কিমি। এর
মধ্যে এরকম প্রায় ৬৩টি ‘প্রাকৃতিক শূণ্যতা’ রয়েছে। আর দুটি অংশের বড় দুটি
জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। চোরাচালানি আগের চেয়ে কমেছে। কারণ বিএসএফ
নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। তাই বিএসএফকে ফাঁকি দিতে এখন সুরঙ্গ পথও কাজে
লাগানো হচ্ছে। তারা এটা প্রতিহত করতে সুরঙ্গগুলোতে আলোর ব্যবস্থা করবেন। ওই
রিপোর্টে বলা হয়, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন স্থান থেকে যে গরু মাত্র ৪ থেকে ৫
হাজার রুপিতে কেনা হয়, সেই গরু বাংলাদেশে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি
হয়। গতকাল শুক্রবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়, কথিত ওই সিক্রেট
টানেল বা গোপন সুরঙ্গটি ভারতের করিমগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত
বিস্তৃত। টানেলটি বিএসএফের মদনপুর সীমান্ত ফাঁড়ির কয়েক মিটার দূর থেকে গহীন
অরণ্যের ভূগর্ভে অবস্থিত। পত্রিকার রিপোর্টে করিমগঞ্জের সঙ্গে বাংলাদেশের
সীমান্ত ৯২ কিলোমিটার উল্লেখ করা হলেও গোপন সুরঙ্গের দৈর্ঘ্য কতটা তার
উল্লেখ নেই। করিমগঞ্জ জেলার এসপি সৌরভ উপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, এ সপ্তাহের
গোড়ায় বাংলাদেশী গরু চোর বিরোধী অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশ ওই সুরঙ্গের হদিস
পেয়েছে। দুই গরুচোরকে জিজ্ঞাসাবাদকালে ওই সুরঙ্গে বিষয় পুলিশকে চিনিয়ে
দিয়েছে বলে পুলিশ সুপার দাবি করেন। গত ১৮ই এপ্রিল টাইমএইটিন ডটকম
জানিয়েছিল, করিমগঞ্জের পুলিশ দেলোয়ার হোসেন নামে এক বাংলাদেশী এবং নুরুল
ইসলাম নামে এক ভারতীয় তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরকে সন্দেহভাজন গরু
চোরাচালানি মনে করা হয়। দেলোয়ারের কাছ থেকে পুলিশ এক বাক্স বাংলাদেশী
সিগারেট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে। দেলোয়ারকে নারী চোরাচালানের সঙ্গেও
যুক্ত মনে করা হয়।
No comments