সৌদি আরব থেকে কেন ফিরে আসছেন বাংলাদেশে গৃহকর্মী মেয়েরা?
নিরাপদ
অভিবাসনের পক্ষে কাজ করে বাংলাদেশের এমন একটি প্রতিষ্ঠান বলছে, নানা
নির্যাতন, হেনস্থার শিকার হয়ে সৌদি আরব থেকে নারী শ্রমিকদের ফিরে আসার
সংখ্যা সম্প্রতি বেড়ে গেছে।
বেসরকারি সংস্থা ব্রাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বিবিসিকে বলেছেন, শনিবার এরকম ৬৬ জন নারী গৃহকর্মী তাদের চুক্তি শেষ হবার আগেই দেশে ফিরেছেন।
তিনি জানান, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মাসে গড়ে প্রায় দু'শ জন করে নারী কর্মী সৌদি আরব থেকে ফিরে এসেছেন।
তাদের অনেকেই ফিরে যৌন নির্যাতন থেকে শুরু করে নানা ধরণের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন।
দু'বছরের চুক্তিতে গেলেও মাত্র ১১ মাস পরে গত শনিবার খালি হাতে (সৌদি আরব থেকে) দেশে ফিরে এসেছেন সুনামগঞ্জের তাসলিমা আক্তার।
বিবিসি বাংলাকে টেলিফেনে তিনি বলেন, "অনেক আশা নিয়ে ওই দেশে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখলাম তেমন কিছু না। দালাল বলেছিল, সেখানে গেলে ২০ হাজার টাকা দেবে, মোবাইল দেবে, কথা বলতে দেবে, কাপড় চোপড়-সাবান তেল সবকিছু ফ্রি।
"কিন্তু আসলে তেমন কিছু না, ঠিকমত বেতন দেয় না, নিজের গাঁট থেকে টাকা দিয়ে সবকিছু কিনতে হয়।"
তাসলিমা আক্তার বলছিলেন, "আমার প্রায় আট মাসের বেতন বাকি। বেতন চাইলে বলে তোর আকামা হয় নি, আকামা করাতে আড়াই লাখ টাকা লাগবে - এরকম অনেক কিছু বোঝাতো।"
বিবিসি বাংলার শাকিল আনোয়ারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তাসলিমা বলেন, "আমি নিয়োগকর্তা মহিলাকে বলেছিলাম, সাত-আট মাস বাড়িতে টাকা পাঠাই নি, বেতন দে। সে আমার ওপর হাত তুলতে চেয়েছিল। তখন আমি পুলিশকে ফোন করি। পুলিশ আমাকে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিয়ে যায়।"
"সেখানে গিয়ে দেখি হাজার হাজার মেয়ে। অনেককে মেরেছে, কারো হাত ভেঙেছে, কারো পা ভেঙেছে, কারো গায়ে গরম পানি দিয়েছে - অনেক রকম নির্যাতন করেছে।"
"কোন কোন মেয়েকে নিয়োগদাতার ছেলেরা খারাপ নির্যাতন করেছে। কাউকে কাউকে এক দেড় বছর খাটিয়েছে, বেতন দেয় নি।"
"সে তুলনায় আমার কমই হয়েছে - আমি এগারো মাস থেকেছি, পরনের কাপড়টাই ঠিকমত দেয় নি।"
তাসলিমা আক্তার বাংলাদেশ দূতাবাসে ছিলেন চার মাস। তিনি বলেন, এগারো মাস সৌদি আরবে থাকার সময় অন্য মেয়েদের তুলনায় তার কমই দুর্ভোগ হয়েছে।
তিনি বলছিলেন, "আমার নিয়োগদাতা আমাকে আসতে দেয় নি। আমার নামে কেস করেছে, যাতে জীবনেও বাংলাদেশে আসতে না পারি। মামলায় বলেছে, আমাকে আনতে তাদের চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে -সেই টাকা আমাকে ফেরত দিতে হবে। "
"তখন আমি দূতাবাসে অনেক কান্নাকাটি করেছি, হাতে পায়ে ধরেছি আমাকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য। কিন্তু তারা বললেন, তোমার নামে তোমার কফিল (নিয়োগদাতা) মামলা করেছে। "
"আমি বললাম, আমার যে বেতন বকেয়া তাতে প্রায় দুই-আড়াই লাখ টাকা হয় - সেটা আমি আর চাই না, আমি দেশে ফিরে যাবো।"
"তারা আমাকে কোর্টে তুলেছে। আদালতের রায় পাবার পর আমি দেশে ফিরি। কোন টাকাপয়সা নিয়ে ফিরতে পারি নি। বরং আমাকে বাড়ি থেকে আরো লাখখানেক টাকা নিয়েছিল।"
"যে মেয়েরা এখনো আরব দেশে যেতে চায় - তারা বুঝতে পারছে না সৌদি বা অন্য আরব দেশেরও পরিস্থিতি এখন অনেক খারাপ।"
"যারা ফিরে এসেছে তারা কেউ আর সেখানে ফেরত যেতে চায় না। আমি গারমেন্টসে চাকরি করে খাবো, তবু বিদেশে যাবার নাম আর করবো না।"
সূত্র: বিবিসি বাংলা
বেসরকারি সংস্থা ব্রাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বিবিসিকে বলেছেন, শনিবার এরকম ৬৬ জন নারী গৃহকর্মী তাদের চুক্তি শেষ হবার আগেই দেশে ফিরেছেন।
তিনি জানান, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মাসে গড়ে প্রায় দু'শ জন করে নারী কর্মী সৌদি আরব থেকে ফিরে এসেছেন।
তাদের অনেকেই ফিরে যৌন নির্যাতন থেকে শুরু করে নানা ধরণের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন।
দু'বছরের চুক্তিতে গেলেও মাত্র ১১ মাস পরে গত শনিবার খালি হাতে (সৌদি আরব থেকে) দেশে ফিরে এসেছেন সুনামগঞ্জের তাসলিমা আক্তার।
বিবিসি বাংলাকে টেলিফেনে তিনি বলেন, "অনেক আশা নিয়ে ওই দেশে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখলাম তেমন কিছু না। দালাল বলেছিল, সেখানে গেলে ২০ হাজার টাকা দেবে, মোবাইল দেবে, কথা বলতে দেবে, কাপড় চোপড়-সাবান তেল সবকিছু ফ্রি।
"কিন্তু আসলে তেমন কিছু না, ঠিকমত বেতন দেয় না, নিজের গাঁট থেকে টাকা দিয়ে সবকিছু কিনতে হয়।"
তাসলিমা আক্তার বলছিলেন, "আমার প্রায় আট মাসের বেতন বাকি। বেতন চাইলে বলে তোর আকামা হয় নি, আকামা করাতে আড়াই লাখ টাকা লাগবে - এরকম অনেক কিছু বোঝাতো।"
বিবিসি বাংলার শাকিল আনোয়ারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তাসলিমা বলেন, "আমি নিয়োগকর্তা মহিলাকে বলেছিলাম, সাত-আট মাস বাড়িতে টাকা পাঠাই নি, বেতন দে। সে আমার ওপর হাত তুলতে চেয়েছিল। তখন আমি পুলিশকে ফোন করি। পুলিশ আমাকে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিয়ে যায়।"
"সেখানে গিয়ে দেখি হাজার হাজার মেয়ে। অনেককে মেরেছে, কারো হাত ভেঙেছে, কারো পা ভেঙেছে, কারো গায়ে গরম পানি দিয়েছে - অনেক রকম নির্যাতন করেছে।"
"কোন কোন মেয়েকে নিয়োগদাতার ছেলেরা খারাপ নির্যাতন করেছে। কাউকে কাউকে এক দেড় বছর খাটিয়েছে, বেতন দেয় নি।"
"সে তুলনায় আমার কমই হয়েছে - আমি এগারো মাস থেকেছি, পরনের কাপড়টাই ঠিকমত দেয় নি।"
তাসলিমা আক্তার বাংলাদেশ দূতাবাসে ছিলেন চার মাস। তিনি বলেন, এগারো মাস সৌদি আরবে থাকার সময় অন্য মেয়েদের তুলনায় তার কমই দুর্ভোগ হয়েছে।
তিনি বলছিলেন, "আমার নিয়োগদাতা আমাকে আসতে দেয় নি। আমার নামে কেস করেছে, যাতে জীবনেও বাংলাদেশে আসতে না পারি। মামলায় বলেছে, আমাকে আনতে তাদের চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে -সেই টাকা আমাকে ফেরত দিতে হবে। "
"তখন আমি দূতাবাসে অনেক কান্নাকাটি করেছি, হাতে পায়ে ধরেছি আমাকে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য। কিন্তু তারা বললেন, তোমার নামে তোমার কফিল (নিয়োগদাতা) মামলা করেছে। "
"আমি বললাম, আমার যে বেতন বকেয়া তাতে প্রায় দুই-আড়াই লাখ টাকা হয় - সেটা আমি আর চাই না, আমি দেশে ফিরে যাবো।"
"তারা আমাকে কোর্টে তুলেছে। আদালতের রায় পাবার পর আমি দেশে ফিরি। কোন টাকাপয়সা নিয়ে ফিরতে পারি নি। বরং আমাকে বাড়ি থেকে আরো লাখখানেক টাকা নিয়েছিল।"
"যে মেয়েরা এখনো আরব দেশে যেতে চায় - তারা বুঝতে পারছে না সৌদি বা অন্য আরব দেশেরও পরিস্থিতি এখন অনেক খারাপ।"
"যারা ফিরে এসেছে তারা কেউ আর সেখানে ফেরত যেতে চায় না। আমি গারমেন্টসে চাকরি করে খাবো, তবু বিদেশে যাবার নাম আর করবো না।"
সূত্র: বিবিসি বাংলা
No comments