৩ ডিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ব্যবস্থা নিতে চিঠি by দীন ইসলাম
নোয়াখালী,
চাঁপাই নবাবগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক (ডিসি)-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও
অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে নোয়াখালীর ডিসি মো. মাহবুবুল আলম
তালুকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক
সুবিধা নিয়েছেন। এছাড়া টাঙ্গাইলের ডিসি খান মো. নূরুল আমিনের বিরুদ্ধে পাট
দিবসের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। চাঁপাই নবাবগঞ্জের ডিসি মো. মাহমুদুল
হাসানের বিরুদ্ধে ওই জেলার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মইনুদ্দীন মণ্ডল
অভিযোগ দিয়েছেন। যদিও পরে আরেকটি চিঠি দিয়ে তা প্রত্যাহার করে নিয়ে জেলা
পরিষদ চেয়ারম্যান বলেছেন, তার প্যাড ও সই স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। তিন
ডিসি’র বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অনুরোধ করেছে
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা শাখা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা
গেছে, গত এপ্রিলে টাঙ্গাইলের আরমান নামে এক ব্যক্তি তার জেলার ডিসি খান মো.
নূরুল আমিনের বিরুদ্ধে পাট দিবসের চেক জালিয়াতির অভিযোগ করেন। অভিযোগে
তিনি জানান, ৬ই মার্চ পাট দিবস পালিত হয়েছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে
সরকার জেলা প্রশাসক বরাবর ২৫ হাজার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ১৫
হাজার টাকার চেক দেয়। কিন্তু টাঙ্গাইলের ডিসি ১১টি উপজেলার ইউএনও’র চেক
আটকে দেন। এরপর ইউএনওদের কাছ থেকে নগদ ১৫ হাজার টাকা নেন। অভিযোগে বলা হয়,
ইউএনওদের চেকগুলো ডিসি’র নির্দেশে টাঙ্গাইলের মুখ্য পাট পরিদর্শক
শহিদুল্লাহ ও উপ-সহকারী পাট পরিদর্শক রায়হান ডিসি অফিসের নাজির জয়নাল
আবেদীনের মাধ্যমে ডিসির কাছে পৌঁছায়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের নামে আসা ২৫
হাজার টাকার চেকটি নাজির জয়নাল আবেদীন নিজ নামে উত্তোলন করেন। সংশ্লিষ্ট
সূত্রে জানা গেছে, আরমানের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩০শে এপ্রিল জনপ্রশাসন
মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা-১ (১) অধিশাখার উপসচিব চৌধুরী সামিয়া ইয়াসমীন-এর
স্বাক্ষরে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে
অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়। এদিকে নোয়াখালীর
ডিসি মো. মাহবুবুল আলম তালুকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আবদুল জলিল নামের
এক ব্যক্তি। অভিযোগে তিনি বলেন, ডিসি হিসেবে মাহবুবুল যোগদানের পর থেকে
মাইজদী শহরের বিভিন্ন ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা
নিয়ে সরকারি সম্পত্তি হরিলুটে ইন্ধন যোগাচ্ছেন। মোটা অঙ্কের সুবিধার
বিনিময়ে মাইজদী নিশাত প্লাজার উত্তর পাশে হেলাল, মানিক ও হায়দার
ইলেকট্রিককে গণপূর্তের কোটি কোটি টাকা মূল্যের জায়গা দখলে সহযোগিতা করেছেন।
এ অভিযোগটিও খতিয়ে দেখতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া
চাঁপাই নবাবগঞ্জের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মইনুদ্দীন মণ্ডলের ডিও লেটারে
অভিযোগের ভিত্তিতে ওই জেলার ডিসি মো. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে। যদিও গত ৩রা এপ্রিল আরেক ডিও
লেটারে চাঁপাই নবাবগঞ্জের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মইনুদ্দীন মণ্ডল
জানান, চাঁপাই নবাবগঞ্জের ডিসি একজন সৎ, যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তা। তিনি
সুনামের সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা
গেছে, তিন ডিসি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন তারা। এরপরই প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেয়া হবে।
No comments