কাশ্মির সমস্যার একমাত্র সমাধান উন্নয়ন: মোদি
ভারত
শাসিত কাশ্মীরের সব সমস্যার ‘একমাত্র সমাধান’ হিসেবে আবারও উন্নয়নের কথা
বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার কাশ্মীরের রাজধানী
শ্রীনগর সফরকালে তিনি এই কথা বলেন। মোদি বলেন, জম্ম ও কাশ্মীরের উন্নয়নের
জন্য আমি সবাইকে শুধু বিদ্যুৎখাতে বিনিয়োগ করতে বলছি। তিনি আরও বলেন, ‘সব
সমস্যা, সব বৈষম্যের একটিই সমাধান আছে, আর তা হলো উন্নয়ন, উন্নয়ন আর
উন্নয়ন’। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
মুসলিমদের ধর্মীয় নেতা উমর ফারুক সে দেশের সংবাদমাধ্যম ওয়ান ইন্ডিয়ার কাছে অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী কাশ্মিরীদের আসল সমস্যাগুলো না দেখে, উন্নয়ন দিয়ে মানুষ কে ভোলাতে চাইছেন। তিনি বলেন, 'রাস্তা, টানেল, বিদ্যুৎ প্রকল্প বা কর্মসংস্থান কাশ্মিরের সমস্যা নয়। এখানকার বিতর্কটা জম্মু ও কাশ্মিরের লাখ লাখ নাগরিকের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে। এই মানুষদের ইচ্ছে-আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দিয়ে তার সমাধান করা প্রয়োজন।' তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদির পূর্বসূরিরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কাশ্মীরের জনগণ চায় তা পূরণ করা হোক।'
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের দিনে উপত্যকায় বনধের ডাক দিয়েছে স্বাধীনতাকামী দলগুলো। তাই প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে রাজ্য জুড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। সিল করে দেওয়া হয় এসকেআইসিসি চত্ত্বর। সেখানে ত্রি-স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের ব্যবস্থা করা হয়। শনিবার শ্রীনগরে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে কর্মকর্তা, রাজনীতিক ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন মোদি। আর সেখানেই কাশ্মিরের জনগণের স্বাধীনতার দাবিকে উপেক্ষা মোদি উন্নয়নের প্রচারণা করেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতবিরোধী বিক্ষোভে তরুণদের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। এমনকি মুক্তিকামী যোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতের যৌথ বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাও অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে অঞ্চলটির দক্ষিণ দিকে সম্প্রতি বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে।
‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’র আর কোনও বিকল্প নেই জানিয়ে মোদি তরুণদের ‘মূলধারা’য় ফিরে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘মূলধারা তাদের বাবা-মা ও পরিবার, মূলধারা জম্মু ও কাশ্মীরের উন্নয়নের তাদের অবদান। বিপথগামী তরুণদের ছোড়া প্রতিটি পাথর কাশ্মিরকে অস্থিতিশীল করে তোলে’।
মোদির সফরের আগের দিনে কাশ্মির সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান গোলাগুলিতে ৯ জন নিহত হয়েছেন। তিন শিশুসহ এদের মধ্যে ৮ জনই বেসামরিক। ইতিহাসবিদ আর রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে কাশ্মির ক্রমেই ভারত-পাকিস্তানের সমরাস্ত্র প্রদর্শনের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারকর্মীদের দাবি অনুযায়ী, ’৪৭-এর পর থেকে অন্তত পাঁচ লাখ কাশ্মিরি নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও ১০ লাখের মতো। খোদ সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রভাবশালী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ১৯৯০ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে কেবল ২১ বছরেই ৪৩ হাজার ৪৬০ জন কাশ্মিরি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। আর মানবাধিকার কর্মীদের দাবি অনুযায়ী, ওই ২১ বছরে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। তবে দুই দিন আগে রমজান মাস উপলক্ষে কাশ্মিরে অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সরকার।
এই বিরতিকে সমর্থন করে এর আগে স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্যে মোদি বলেছিলেন, বুলেট আর নির্যাতনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের সমাধান করা সম্ভব হবে না। বরং তা আরও বাড়বে।
তবে মোদির এমন বক্তব্যে বিশ্লেষকরা তেমন কোনও আশা দেখছেন না। কাশ্মিরভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক নূর আহমেদ বাবা বলেন, ‘জনগণ আগেও এসব বক্তব্য শুনেছে’। উন্নয়নকে গৌণ উল্লেখ করে বাবা বলেন, মোদি সমস্যাটির রাজনৈতিক দিকটি অবহেলা করেছেন। তিনি আরও বলেন, সমস্যা সমাধানে আরও বেশি কিছু করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, কাশ্মিরে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর কেউ কেউ সরাসরি স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত। কেউ কেউ আবার কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে। ইতিহাস পরিক্রমায় ক্রমেই সেখানকার স্বাধীনতা আন্দোলনের ইসলামিকরণ হয়েছে। এখন সেখানকার বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর মধ্যে হিজবুল মুজাহিদিন সবচেয়ে সক্রিয়। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মিরের জাতিমুক্তি আন্দোলনকে বিভিন্ন জঙ্গিবাদী তৎপরতার থেকে আলাদা করে শনাক্ত করে না। সন্দেহভাজন জঙ্গি নাম দিয়ে বহু বিদ্রোহীর পাশাপাশি বেসামরিকদের হত্যার অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে।
মুসলিমদের ধর্মীয় নেতা উমর ফারুক সে দেশের সংবাদমাধ্যম ওয়ান ইন্ডিয়ার কাছে অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী কাশ্মিরীদের আসল সমস্যাগুলো না দেখে, উন্নয়ন দিয়ে মানুষ কে ভোলাতে চাইছেন। তিনি বলেন, 'রাস্তা, টানেল, বিদ্যুৎ প্রকল্প বা কর্মসংস্থান কাশ্মিরের সমস্যা নয়। এখানকার বিতর্কটা জম্মু ও কাশ্মিরের লাখ লাখ নাগরিকের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে। এই মানুষদের ইচ্ছে-আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দিয়ে তার সমাধান করা প্রয়োজন।' তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদির পূর্বসূরিরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কাশ্মীরের জনগণ চায় তা পূরণ করা হোক।'
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের দিনে উপত্যকায় বনধের ডাক দিয়েছে স্বাধীনতাকামী দলগুলো। তাই প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে রাজ্য জুড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। সিল করে দেওয়া হয় এসকেআইসিসি চত্ত্বর। সেখানে ত্রি-স্তরের নিরাপত্তা বলয়ের ব্যবস্থা করা হয়। শনিবার শ্রীনগরে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে কর্মকর্তা, রাজনীতিক ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে ভাষণ দেন মোদি। আর সেখানেই কাশ্মিরের জনগণের স্বাধীনতার দাবিকে উপেক্ষা মোদি উন্নয়নের প্রচারণা করেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতবিরোধী বিক্ষোভে তরুণদের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। এমনকি মুক্তিকামী যোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতের যৌথ বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাও অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে অঞ্চলটির দক্ষিণ দিকে সম্প্রতি বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে।
‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’র আর কোনও বিকল্প নেই জানিয়ে মোদি তরুণদের ‘মূলধারা’য় ফিরে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘মূলধারা তাদের বাবা-মা ও পরিবার, মূলধারা জম্মু ও কাশ্মীরের উন্নয়নের তাদের অবদান। বিপথগামী তরুণদের ছোড়া প্রতিটি পাথর কাশ্মিরকে অস্থিতিশীল করে তোলে’।
মোদির সফরের আগের দিনে কাশ্মির সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান গোলাগুলিতে ৯ জন নিহত হয়েছেন। তিন শিশুসহ এদের মধ্যে ৮ জনই বেসামরিক। ইতিহাসবিদ আর রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে কাশ্মির ক্রমেই ভারত-পাকিস্তানের সমরাস্ত্র প্রদর্শনের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারকর্মীদের দাবি অনুযায়ী, ’৪৭-এর পর থেকে অন্তত পাঁচ লাখ কাশ্মিরি নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও ১০ লাখের মতো। খোদ সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রভাবশালী ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ১৯৯০ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে কেবল ২১ বছরেই ৪৩ হাজার ৪৬০ জন কাশ্মিরি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। আর মানবাধিকার কর্মীদের দাবি অনুযায়ী, ওই ২১ বছরে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। তবে দুই দিন আগে রমজান মাস উপলক্ষে কাশ্মিরে অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সরকার।
এই বিরতিকে সমর্থন করে এর আগে স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্যে মোদি বলেছিলেন, বুলেট আর নির্যাতনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের সমাধান করা সম্ভব হবে না। বরং তা আরও বাড়বে।
তবে মোদির এমন বক্তব্যে বিশ্লেষকরা তেমন কোনও আশা দেখছেন না। কাশ্মিরভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক নূর আহমেদ বাবা বলেন, ‘জনগণ আগেও এসব বক্তব্য শুনেছে’। উন্নয়নকে গৌণ উল্লেখ করে বাবা বলেন, মোদি সমস্যাটির রাজনৈতিক দিকটি অবহেলা করেছেন। তিনি আরও বলেন, সমস্যা সমাধানে আরও বেশি কিছু করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, কাশ্মিরে সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর কেউ কেউ সরাসরি স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত। কেউ কেউ আবার কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে। ইতিহাস পরিক্রমায় ক্রমেই সেখানকার স্বাধীনতা আন্দোলনের ইসলামিকরণ হয়েছে। এখন সেখানকার বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর মধ্যে হিজবুল মুজাহিদিন সবচেয়ে সক্রিয়। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাশ্মিরের জাতিমুক্তি আন্দোলনকে বিভিন্ন জঙ্গিবাদী তৎপরতার থেকে আলাদা করে শনাক্ত করে না। সন্দেহভাজন জঙ্গি নাম দিয়ে বহু বিদ্রোহীর পাশাপাশি বেসামরিকদের হত্যার অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে।
No comments