নগরীতে বেপরোয়া মোটরসাইকেল by মারুফ কিবরিয়া
রাজধানীতে
বেড়েছে যানবাহন। বাস, প্রাইভেট কার এসবের সঙ্গে বেড়েছে মোটরসাইকেলের
সংখ্যাও। ট্রাফিক আইন উপেক্ষা করে শহরের সড়কগুলো নিজেদের দখলে নিয়ে দিন দিন
বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন মোটরসাইকেল চালকরা। আইন অমান্য করায় মামলা দেয়া হলেও
কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না তাদের। সিগন্যাল না মানা, বিকট হর্ন বাজানো ও
যত্রতত্র ফুটপাথে মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয়াসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে
যাচ্ছেন চালকরা।
গত কয়েকদিনে রাজধানীর বিজয় সরণি, শাহবাগ, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, নয়া পল্টন, প্রেস ক্লাব, মিরপুর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, গুলশান, উত্তরা, বাড্ডা, রামপুরা. পুরান ঢাকাসহ বেশকিছু জায়গা ঘুরে দেখা গেছে চালকরা বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তোয়াক্কা না করেই তারা দ্রুত গতিতে চলে যান। কখনো কখনো ফুটপাথে উঠিয়ে দেন। এতে অনেক পথচারী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। মাঝে মাঝে কারো কারো সঙ্গে মোটরসাইকেল আরোহীদের সংঘর্ষও হয়। মোটরসাইকেল যাতে ফুটপাথে না চলাচল করতে পারে সেজন্য অনেক জায়গায় লোহার খুঁটি পুঁতে দেয়া আছে। তারপরও আটকানো যাচ্ছে না মোটরসাইকেল চালকদের। তীব্র হর্ন দিয়ে দ্রুত গতিতে ফুটপাথের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলার দৃশ্য রাজধানীতে যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। পথচারীদের মতে, যেকোনো সভ্য দেশেই ফুটপাথ পথচারীদের হাঁটার জন্য। কিন্তু আমাদের দেশে ফুটপাথ পথচারীদের জন্য নয়। ফুটপাথে হকাররা ব্যবসা করে। যেখানে হকার নেই সেখানে আছে মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্য। পথচারীরা ফুটপাথ ব্যবহারের সুযোগই পায় না। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষ মারা যায়, তার ৫৮ শতাংশই পথচারী। আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে চালক ও আরোহীর মারা যাওয়ার বা পঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
ফুটপাথে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে নানা আলোচনার একপর্যায়ে কয়েক বছর আগে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। আদালত রায় দেন, কোনো অবস্থায়ই পায়ে হাঁটার পথে মোটরবাইক চলবে না। এ আদেশের পরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। প্রথমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। পরে অ্যাকশন-মামলা। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। রাস্তায় জ্যাম হলেই ফুটপাথে মোটরসাইকেল চলতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনও পিছিয়ে নেই। তাদের অনেককেও দেখা যায় ফুটপাথে মোটরসাইকেল উঠিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে রাজধানীতে চলাচল করা একাধিক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধুই সময় বাঁচাতে নয়, কোথাও এক দুই মিনিটের জন্য বসে থাকা তাদের জন্য অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যে কারণে ফুটপাথে উঠিয়ে দ্রুতবেগে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যান। শাহজাদা নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ফুটপাথে চালানো অন্যায়। এতে আইন ভঙ্গ করা হয়। কিন্তু সময় বাঁচাতে মাঝে মাঝে ফুটপাথে উঠিয়ে দিই। আর কিছু সময় এত জরুরি কাজ থাকে যার কারণে আইন ভঙ না করে পারা যায় না। আমি একা করি না তো। আপনি দেখবেন মাঝে মাঝে পুলিশের সদস্যরাও ফুটপাথে মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয়। আইনের লোকজন যদি আইন ভাঙে তখন আমরা কি করবো?
সুমন নামের আরেক মোটরসাইকেল আরোহী জানান, জ্যাম থাকলে মাঝে মাঝে ফুটপাথ দিয়ে চলাচল করি। এতে সময় বাঁচে। কিন্তু আরেকটা কারণ আছে, যখন বাইক চালাই এক জায়গায় বসে থাকতে পারি না। সিগন্যাল পড়লে তো ৫-১০ মিনিট বসে থাকতে হয়। কিন্তু এতক্ষণ বসে থাকে কে?
ফুটপাথে মোটরসাইকেল চালানোয় বিরক্ত পথচারীরাও। সাইফ নামের এক কলেজছাত্র বলেন, প্রায়ই রামপুরা টিভি সেন্টার থেকে বাজার পর্যন্ত হেঁটে কোচিংয়ে যাই। আর এ রাস্তাটি সবসময় যানজট লেগে থাকে। আমরা সাধারণ মানুষ হাঁটতে পারি না। আর জ্যামের সময় ফুটপাথে বাইকওয়ালারা বাইক উঠিয়ে দেয়। বাইক তো উঠায় আবার হর্নও বাজায়। মেজাজ কি তখন ঠিক থাকে? একদিন একজনের সঙ্গে ঝগড়া লাগে। আমাকে মারতে এসেছে। পরে অন্য পথচারীরা প্রতিবাদ করলে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। বাংলামোটর থেকে শাহবাগে অফিসে যেতে হেঁটেই চলাচল করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সুমি। তিনি জানান, এই বাইকওয়ালাদের জন্য রাস্তায় চলাচল করতে পারি না। খুবই বিরক্ত করে। পেছন থেকে এসে হর্ন বাজায়। তাও সেটা ফুটপাথে। কতটা যন্ত্রণাদায়ক। পুলিশও কিছু করতে পারে না। তারা ব্যারিকেড দিয়েছে। কিন্তু তার মধ্য দিয়েই তারা মোটরসাইকেল চালিয়ে যায়।
মোটরসাইকেল চালকদের এই বেপরোয়াভাব নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন? জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ট্রাফিক-উত্তর) জয়েন্ট কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, আমরা প্রতিদিনই মামলা করছি। শাস্তি দিচ্ছি। কিন্তু নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এদের সঙ্গে পুরো নগরবাসী জিম্মি হয়ে আছে। সিগন্যাল মানে না, ফুটপাথে উঠিয়ে দেয়, বিকট হর্ন বাজায়। কোনো আইন মানে না। তারপরও যারা ধরা পড়ছে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।
গত কয়েকদিনে রাজধানীর বিজয় সরণি, শাহবাগ, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, নয়া পল্টন, প্রেস ক্লাব, মিরপুর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, গুলশান, উত্তরা, বাড্ডা, রামপুরা. পুরান ঢাকাসহ বেশকিছু জায়গা ঘুরে দেখা গেছে চালকরা বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তোয়াক্কা না করেই তারা দ্রুত গতিতে চলে যান। কখনো কখনো ফুটপাথে উঠিয়ে দেন। এতে অনেক পথচারী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। মাঝে মাঝে কারো কারো সঙ্গে মোটরসাইকেল আরোহীদের সংঘর্ষও হয়। মোটরসাইকেল যাতে ফুটপাথে না চলাচল করতে পারে সেজন্য অনেক জায়গায় লোহার খুঁটি পুঁতে দেয়া আছে। তারপরও আটকানো যাচ্ছে না মোটরসাইকেল চালকদের। তীব্র হর্ন দিয়ে দ্রুত গতিতে ফুটপাথের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলার দৃশ্য রাজধানীতে যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। পথচারীদের মতে, যেকোনো সভ্য দেশেই ফুটপাথ পথচারীদের হাঁটার জন্য। কিন্তু আমাদের দেশে ফুটপাথ পথচারীদের জন্য নয়। ফুটপাথে হকাররা ব্যবসা করে। যেখানে হকার নেই সেখানে আছে মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্য। পথচারীরা ফুটপাথ ব্যবহারের সুযোগই পায় না। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষ মারা যায়, তার ৫৮ শতাংশই পথচারী। আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে চালক ও আরোহীর মারা যাওয়ার বা পঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
ফুটপাথে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে নানা আলোচনার একপর্যায়ে কয়েক বছর আগে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। আদালত রায় দেন, কোনো অবস্থায়ই পায়ে হাঁটার পথে মোটরবাইক চলবে না। এ আদেশের পরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। প্রথমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। পরে অ্যাকশন-মামলা। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। রাস্তায় জ্যাম হলেই ফুটপাথে মোটরসাইকেল চলতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনও পিছিয়ে নেই। তাদের অনেককেও দেখা যায় ফুটপাথে মোটরসাইকেল উঠিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে রাজধানীতে চলাচল করা একাধিক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধুই সময় বাঁচাতে নয়, কোথাও এক দুই মিনিটের জন্য বসে থাকা তাদের জন্য অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যে কারণে ফুটপাথে উঠিয়ে দ্রুতবেগে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যান। শাহজাদা নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ফুটপাথে চালানো অন্যায়। এতে আইন ভঙ্গ করা হয়। কিন্তু সময় বাঁচাতে মাঝে মাঝে ফুটপাথে উঠিয়ে দিই। আর কিছু সময় এত জরুরি কাজ থাকে যার কারণে আইন ভঙ না করে পারা যায় না। আমি একা করি না তো। আপনি দেখবেন মাঝে মাঝে পুলিশের সদস্যরাও ফুটপাথে মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেয়। আইনের লোকজন যদি আইন ভাঙে তখন আমরা কি করবো?
সুমন নামের আরেক মোটরসাইকেল আরোহী জানান, জ্যাম থাকলে মাঝে মাঝে ফুটপাথ দিয়ে চলাচল করি। এতে সময় বাঁচে। কিন্তু আরেকটা কারণ আছে, যখন বাইক চালাই এক জায়গায় বসে থাকতে পারি না। সিগন্যাল পড়লে তো ৫-১০ মিনিট বসে থাকতে হয়। কিন্তু এতক্ষণ বসে থাকে কে?
ফুটপাথে মোটরসাইকেল চালানোয় বিরক্ত পথচারীরাও। সাইফ নামের এক কলেজছাত্র বলেন, প্রায়ই রামপুরা টিভি সেন্টার থেকে বাজার পর্যন্ত হেঁটে কোচিংয়ে যাই। আর এ রাস্তাটি সবসময় যানজট লেগে থাকে। আমরা সাধারণ মানুষ হাঁটতে পারি না। আর জ্যামের সময় ফুটপাথে বাইকওয়ালারা বাইক উঠিয়ে দেয়। বাইক তো উঠায় আবার হর্নও বাজায়। মেজাজ কি তখন ঠিক থাকে? একদিন একজনের সঙ্গে ঝগড়া লাগে। আমাকে মারতে এসেছে। পরে অন্য পথচারীরা প্রতিবাদ করলে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়। বাংলামোটর থেকে শাহবাগে অফিসে যেতে হেঁটেই চলাচল করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সুমি। তিনি জানান, এই বাইকওয়ালাদের জন্য রাস্তায় চলাচল করতে পারি না। খুবই বিরক্ত করে। পেছন থেকে এসে হর্ন বাজায়। তাও সেটা ফুটপাথে। কতটা যন্ত্রণাদায়ক। পুলিশও কিছু করতে পারে না। তারা ব্যারিকেড দিয়েছে। কিন্তু তার মধ্য দিয়েই তারা মোটরসাইকেল চালিয়ে যায়।
মোটরসাইকেল চালকদের এই বেপরোয়াভাব নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন? জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ট্রাফিক-উত্তর) জয়েন্ট কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, আমরা প্রতিদিনই মামলা করছি। শাস্তি দিচ্ছি। কিন্তু নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এদের সঙ্গে পুরো নগরবাসী জিম্মি হয়ে আছে। সিগন্যাল মানে না, ফুটপাথে উঠিয়ে দেয়, বিকট হর্ন বাজায়। কোনো আইন মানে না। তারপরও যারা ধরা পড়ছে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।
No comments