কুয়েতে বাংলাদেশী শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞার কারণ কী?
কুয়েত
আবারো বাংলাদেশে থেকে লোক নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সোমবার
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ আল জারাহ বাংলাদেশী শ্রমিক নিয়োগে এ
নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি আদেশ জারি করেছেন। মাত্র কয়েক মাস আগে নিষেধাজ্ঞা
উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল। এক হিসাবে কুয়েতে এখন দুই লাখেরও বেশি বাংলাদেশী
কাজ করেন। কেন কুয়েত কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন করে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ
করলো?
দুবাইয়ের সাংবাদিক সাইফুর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন,
কুয়েতের সরকার এজন্য কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে। তার মধ্যে একটি সেখানে
বাংলাদেশীদের সংখ্যা বেড়ে গেছে, ফলে ডেমোগ্রাফিক ইমব্যালান্স হচ্ছে।
অর্থাৎ কোন দেশের নাগরিকের সংখ্যা বেড়ে গেলে, বিদেশি শ্রমিকদের সংখ্যায়
ভারসাম্য আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশ নিয়োগ বন্ধ রাখে। দুই, আইনশৃঙ্খলা এবং
কিছু অনিয়মের কথা বলা হয়েছে, বিশেষ করে শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে। সেই
সাথে মানব পাচারের প্রসঙ্গও এসে গেছে। তবে, এগুলোকে শ্রমিক নিয়োগে
নিষেধাজ্ঞার আসল কারণ বলে মনে করেন না মি. রহমান। তার মতে, আসল কারণ
অর্থনৈতিক। তেলের দাম কমে যাওয়ায় উপসাগরীয় দেশগুলোতে কন্সট্রাকশন বা
নির্মাণ কাজে মন্থরগতি এখন। অর্থাৎ আয়ে এবং বাজেটে চাপ পড়ার কারণে
কুয়েতে বিদেশি শ্রমিকের চাহিদা কমছে। মি. রহমান বলছেন, আর এর প্রভাব যতটা
না পুরনো ও দক্ষ শ্রমিকদের ওপর পড়ছে, তার চেয়ে বেশি পড়ছে নতুন ও অদক্ষ
শ্রমিক, বিশেষ করে ভাষার ওপর যাদের দখল ততটা নেই, তাদের ওপর। বাংলাদেশী
শ্রমিকদের এই অংশটি, কাজ হারালে দেশে ফেরত যায় না। অন্য যেকোনো দেশের
শ্রমিক চাকরি হারালে দেশে ফেরত যায়, কিন্তু বাংলাদেশিরা ফেরত না গিয়ে
সংশ্লিষ্ট দেশে থেকে যায়। পরবর্তীতে অনুমতি ছাড়া কাজ করাসহ নানা ধরণের
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনা যায়।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে
বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে শুরু করে কুয়েত। ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ
থেকে প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক নিয়েছে দেশটি। সে বছর বাংলাদেশি শ্রমিক
নিয়োগ বন্ধ করার পর, ২০১৪ সালে আবার চালু হয় নিয়োগ। এরপর ২০১৬ সালে
পুরুষ গৃহকর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কুয়েত সরকার। কয়েক মাস আগে
নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল।
সূত্র: বিবিসি
সূত্র: বিবিসি
No comments