মুখে ঘা সারাবেন কীভাবে?

মুখের ভেতরে, গালের নরম মাংসপেশিতে, জিহ্বার এক পাশে একধরনের ঘা দেখা যায়। যার নাম অ্যাপথাস আলসার। ছোট্ট একটি গোলাকার অংশ সাদাটে হয়ে ওঠে। আর সাদা অংশটার মধ্যে অনেক সময় পুঁজ জমে থাকে। পুঁজের চারপাশে হালকা একটা সীমানা থাকে। গোলাকার বা ছোট্ট ডিম্বাকৃতির অংশে যা হয়।
কারণ
রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক চিকিৎসক আ ফ ম হেলাল উদ্দীন বলেন, এই ঘা হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা যায়নি। তবু মনে করা হয়, কিছু বিষয়ের কারণে এমনটা হতে পারে।
*রক্তে আয়রন ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাব।
*কিছু রক্তের অসুখ।
*অ্যালার্জিজনিত সমস্যা।
*অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা।
*হঠাৎ গালে বা ঠোঁটের মাংসপেশিতে দাঁতের ধাক্কায় কেটে যাওয়ার পর সংক্রমণ হয়ে এই ঘা হতে পারে।
*মাদকদ্রব্য, অ্যালকোহল গ্রহণকারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার জন্য এই ঘা হতে পারে। তবে এটি কোনো ছোঁয়াচে অসুখ নয়।
*অতিরিক্ত পান, সুপারি, জর্দা থেকে মুখের ভেতরে চামড়া উঠে, মাড়ি বা মুখের নরম মাংসপেশি ক্ষয় হয়েও এই সমস্যা হয়।
*ক্রোমোজোমের সমস্যাজনিত কারণে কিছু কিছু ক্যানসার রোগীর মুখে এই ঘা হয়।
*দাঁতের গোড়ায় সংক্রমণ, আবার অনেকের গর্ভাবস্থায়ও বারবার এই সমস্যা হয়।
উপসর্গ
*অ্যাপথাস আলসারের চারপাশে ব্যথা, জ্বালা, পোড়া, হালকা চুলকানোর (যদি পুঁজ জমে যায়) সমস্যা থাকে।
*অনেক সময় মুখের একাধিক জায়গায় এই ঘা হয়। তখন খাবার গিলতে, কথা বলতে বা মুখ হাঁ করতেও কষ্ট হতে পারে।
*অনেকের এই ঘা থেকে খুব বেশি জ্বালাপোড়ার জন্য একটু লালা ঝরতে পারে।
করণীয়
সহকারী অধ্যাপক আ ফ ম হেলাল উদ্দীনের মতে, মুখের ঘা প্রতিরোধে করণীয়—
*মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। পান, সুপারি, জর্দা, গুল, তামাক পাতা, মাদক, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত চা, কফি বর্জনীয়।
*আয়রন ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খেতে হবে।
*পেটের কোনো অসুখ হলে তার চিকিৎসা জরুরি।
*পানিশূন্যতা, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও দাঁতের ক্যারিজ জাতীয় অসুখ থাকলে তার দ্রুত সমাধান জরুরি।
*মাউথওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। অথবা হালকা গরম পানিতে লবণ দিয়ে কুলি করা দরকার।
*কষ্ট বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
লেখক: চিকিৎসক

No comments

Powered by Blogger.