বিএনপি-জামায়াত জোটের নীতি ছিল মানুষকে ভিক্ষুক করে রাখা : প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি-জামায়াত
জোট দেশটিকে ভিক্ষুকের সর্দারের মতই পরিচালনা করেছে উল্লেখ করে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, তাদের নীতিটাই ছিল নিজেদের স্বার্থে
দেশের মানুষকে আজীবন ভিক্ষুক বানিয়ে রাখা। তারা কখনও চাইতো না যে বাংলাদেশ
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হোক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে তাদের
(বিএনপি-জামায়াত) নীতিটাই আলাদা ছিল। বিএনপি-জামায়াত কখনই চায়নি বাংলাদেশকে
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে। কারণ, তাদের সবসময় লক্ষ্য ছিল ব্যবসা-বাণিজ্য।
চাল আমদানি করে দু পয়সা কামাই করবে এটাই তাদের লক্ষ্য ছিল।’ প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে
ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের (কেআইবি) উদ্যোগে আয়োজিত ‘ডিপ্লোমা কৃষিবিদ
মহাসম্মেলন-২০১৭’ তে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন,
বিএনপি-জামায়াত জোট দেশটিকে ভিক্ষুকের সর্দারের মতই পরিচালনা করেছে। দেশের
মানুষ যত গরীব থাকবে, জীর্ণশীর্ণ থাকবে ততই লাভ। তাদের দেখিয়ে বিদেশ থেকে
টাকা এনে ভাগাভাগিটা করা যাবে। দেশ খাদ্যে স্বনির্ভর হলেতো আর টাকা আসবে
না। এজন্য দেশবাসীকে ভিক্ষুক বানিয়ে রাখাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।’ এ প্রসংগে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দল আওয়ামী লীগ বিএনপি’র মত ভিক্ষুকের সর্দার হয়ে
থাকতে চায় না। তিনি বলেন, আমরা শাসক নয়, সেবক হয়ে দেশ পরিচালনা করেই দেশের
মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই। আর এখানেই আওয়ামী লীগ এবং
বিএনপি’র মধ্যে পার্থক্য। ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া নাকি ভাল নয়, তাহলে
বিদেশের সাহায্য পাওয়া যাবে না,’ ক্ষমতায় থাকাকালীন এটাই ছিল বিএনপি নেতা,
মন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অভিমত, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন কৃষিমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী
লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের
সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সাবেক মহাসচিব আফম বাহাউদ্দিন
নাছিম এমপি। ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সভাপতি এটিএম আবুল কাশেম
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের
মহাসচিব মো. আব্দুর রাশেদ খান।
অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের উচ্চ
পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, উন্নয়ন সহযোগী
সংস্থার সদস্যবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, বিভিন্ন গবেষণাগারের
কর্মকর্তাবৃন্দ, বিজ্ঞানীবৃন্দ, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং
ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরআগে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা উড়িয়ে ডিপ্লোমা কৃষিবিদ মহাসম্মেলন ২০১৭ এর
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন, এ সময়
সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন,
পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারগুলো এদেশের উন্নয়নে কোন কাজ না করে শুধু নিজেদের
ভাগ্য গড়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, যেহেতু অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন
করে তারা ক্ষমতায় এসেছিল তাই ক্ষমতাকে কিভাবে ধরে রাখবে এই কাজেই তারা
ব্যস্ত ছিল। দেশের মানুষের দিকে তাকোনোর কোন ফুরসৎ ছিল না। সাথে সাথে যেসব
শিল্প করকারখানা ছিল, এমনকি আমাদের কৃষিভিত্তিক শিল্প যেগুলো পাকিস্তানীরা
ফেলে যাওয়ার পরে জাতির পিতা জাতীয়করণের মাধ্যমে স্বাধীনতার পর চালু করেন,
সেগুলো একে একে সেই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেয়। অর্থাৎ আমাদের
দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে রাখাই তাদের লক্ষ্য ছিল। শুধু তাই নয়, ওয়ার্ল্ড
ব্যাংকের পরামর্শ অনুযায়ী বিএডিসি বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি
সরকার। সূত্র : বাসস
No comments