মাদারীপুরের ওসি ও এসআইকে প্রত্যাহারের নির্দেশ আপিল বিভাগে বহাল
দুই
শিশুকে বাইরে রেখে তাদের স্তন্যদায়ী দুই মাকে ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখার
ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো.
মাহাতাবকে অবিলম্বে প্রত্যাহারে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছেন
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি
সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের
আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদন খারিজ করে দিয়ে এ আদেশ দেন। আদালতে রিটকারীর
পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু ও রানা কাওসার। পুলিশ কর্মকর্তাদের
পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমীন উদ্দীন। এর আগে গত ২৯ মার্চ মাদারীপুরের
সদর থানার ওসি জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো. মাহাতাবকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের
নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ৮ মে’র মধ্যে
পুলিশের আইজিপিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। পরে এ আদেশ স্থগিত চেয়ে
আবেদন করেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। গত ২১ মার্চ এ ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানার
ওসি জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো. মাহাতাবকে তলব করেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া
অমানবিকভাবে দুই মাকে ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার ঘটনাকে কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা
করা হবে না তা জানতে রুল জারি করা হয়। গত ২০ মার্চ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে
প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ
রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রানা কাওসার।
পরে রিটকারী আইনজীবী
রানা কাওসার সাংবাদিকদের জানান, গত ১২ মার্চ সকাল ১০টার দিকে বিরোধপূর্ণ
একটি জমির তদন্ত কাজে যান মাদারীপুর সদর থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময়
তিনি লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার বিরোধপূর্ণ জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে
পনির হোসেনের কাছে মামলাসংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চান। পনির হোসেন মামলার
বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানান। এতে এসআই মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে পনিরকে থাপ্পড়
দেন। এতে পনির হোসেন পুলিশের সঙ্গে বাগবিতাণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এতে আরো বেশি
ক্ষিপ্ত হন মাহাতাব। পরে ফোন করে সদর থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ নিয়ে
পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালান তিনি। এ সময় পনির ও তার বড় ভাই-বোনের
ঘরের মূল্যবান আসবাব ও নিত্য প্রয়োজনীয় তৈজসপত্র ও চুলা ভেঙে ফেলে পুলিশ।
এক পর্যায়ে পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম ও তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী আকলিমা বেগমকে
টেনে-হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ঝুনু বেগমের তিন মাসের
শিশু ও আকলিমা বেগমের ১৮ মাসের শিশুকে কোল থেকে রেখে যেতে বাধ্য করে
পুলিশ। পরে রাত ১২টার দিকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে
দেওয়া হয়।
No comments