ধর্মপাশায় বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ২৫ হাজর হেক্টর বোরো ফসল
অকাল
বন্যায় ধর্মপাশা উপজেলায় ছোট-বড় ৭৮টি হাওরের মধ্যে ৭৬টি হাওর তলিয়ে গেছে। এ
বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন ছিল ৩১হাজার ৮শত হেক্টর বোরো জমিতে
চাষাবাদ করেছিল কৃষকেরা। ইতিমধ্যে ৭৫ হাজার হেক্টর বোরো জমির কাঁচা ধান
তলিয়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত দন-নদীর পানি বিপদ সিমার
উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অরশিষ্ট ২টি হাওর রয়েছে সেগুলোর বাঁধ
ঝূঁকীপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন মুহুর্তে ঝূঁকীপূর্ণ বড় গুড়াডুবা ও জয়দনা
হাওরের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোতেও বৃষ্টির পানিতে
জলাব্দতা সৃষ্টিহয়ে ৪০ভাগ জমির ধান তলিয়ে গেছে। ৭৮টি হাওরের মধ্যে ৭৬টি
হাওর তলিয়ে গেছে, অবশিষ্ট ২টি হাওর এখন পর্যন্ত সুরক্ষিত থাকলেও যে কোন
মুহুর্তে প্রাবীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। কৃষকরা তাদের গর্বাদি পশু (হালের
বলদ) পানির দামে বিক্রি করছে। অসাধু চাল ব্যবসায়িদের হাত থেকে চালের বাজার
নিয়ন্ত্রনে রাখতে বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে টানা সপ্তাহ
ব্যাপী অভিরাম বৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের ঢলের পানি মুকশেদপুর দিগর ও
সুরমা নদী এবং মাটিয়ান পাহাড়ের ঢলের পানি শুসং দুর্গাপুর হয়ে এর সুমেশ্বরী
নদী দিয়ে বিপদ সীমায় প্রবাহিত হয়ে চলতি বোরো ফসল সহ নি¤œঞ্চল প্রাবিত হয়।
এং নদ-নদী গুলোর নব্বতা সংখটের কারনে ভারতের ঢলের পানিতে নদ-নদী গুলোর
কানায় কানায় ভড়ে গিয়ে বেড়ী বাঁধের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। এতে ডোবাইল হাওর,
চন্দ্র সোনারতাল, ডোবাইল, সুনামড়ল, ধারাম, মরিচাউড়ী, মেঘনা, গনিয়াউড়ী,
বোয়ালা ও টগাসহ নয়টি হাওরের, প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির কাঁচা বোরো ধান
তলিয়ে যায়। আরো মাত্র চারটি হাওর ঝুঁকীপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেমন ধানকুনিয়া
হাওরের সুরমা নদীর তীরবর্তী মহিনিপুরের বাঁধ, পুরাতন সুইজ গেইটের বাঁধ ও
আজরাখালীর বাধ, জয়দনা হাওরের মুক্তারপুর গ্রাম সংলগ্ন বাঁধ ঝুঁকীপূর্ণ
অবস্থায় রয়েছে। কালিয়ানী হাওরের নষিংপুরের জাঙ্গাল, কৈই জোড়ার বাঁধ, বড়
গুড়াডোবার বাঁধসহ এসব বাঁধগুলো গত ৩ ও ৪ এপ্রিল এপ্রিল রবিবার ও সোমবার
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালিব খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ
মামুন খন্দকার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোসাইদ তালুকদার, মধ্যনগর
ইউপি চেয়ারম্যান প্রবীর বিজয় তালুকদার, প্রবীন সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন রানা,
একাউঞ্চ অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, গুড়াডোবা, কাইঞ্জা, বাইনচাপড়া হাওরের
ঝুঁকীপূর্ণ বাঁধ গুলো পরির্দশন করেন। এবং সেচ্ছা শ্রমে বাঁধ নির্মান কাজের
শ্রমিকদের চিড়া, গুড়, বাঁস, বাঁসের চাটাই, ত্রিফাল, সুতলি ইত্যাদি জোগান
দিয়ে সহযোগীতা করেন। সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) তরপ থেকে
উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে খালি বস্থা দেওয়া হচ্ছে। বাঁধগুলো টিকানোর জন্য
খালী বস্থা দিয়ে সহযোগীতা করছেন। এসব ঝুঁকীপূর্ণ বাঁধে এলাকার শত শত কৃষকরা
সেচ্ছা শ্রমে রাত-দিন বাঁেধর উপর মাটি কাটছেন এবং এসব ঝুঁকীপূর্ণ বাঁধ
গুলোতে রাতে জেনারেটারের লাইট জ্বালিয়ে বাঁধগুলো পাহাড়া দিচ্ছেন। গতকাল ৫
এপ্রিল মঙ্গলবার স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন,
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালিব খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ
মামুন খন্দকার,
ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মোসাইদ তালুকদার, সুনামগঞ্জ জেলা
পরিষদের সদস্য শামীম আহমেদ মুরাদ ও মোজাম্মেল হক রোকন প্রমুখরা, ধানকুনিয়া ও
জয়দনা হাওরের ঝুঁকীপূর্ণ বাঁধ গুলো পরির্দষন করেন। এ দিকে গত ১ এপ্রিল
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মোতালিব খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের
সাবেক সভাপতি মনিন্দ্র চন্দ্র তালুকদার, উপজেলা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ
সেলিম আহমেদ, সুখাইড় রাজাপুর (দঃ) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর,
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য
শামীম আহমেদ মুরাদসহ একাধিক নেতা-কর্মীরা সার্বক্ষনিক ঝুঁকীপূর্ণ বাঁধগুলো
পরির্দন করেন। এবং তাদেরকে ছিড়া-গুড় ও আর্থীক সহযোগীতা করে এসব শ্রমীকদের
উৎসাহিত করেন। অসহায় কৃষক-কৃষানীসহ এলাকাবাসীর দাবি, প্রথমেই সুনামগঞ্জ
জেলাকে দুর্গত উপজেলা ঘোষনা এবং চাল-আটা সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের
দাম নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান কৃষকরা। এবং এক
বছরের জন্য কৃষি ও এঞ্জিয়র ঋনের কিস্থি বন্ধ রাখার জন্য দাবি জানান। হাওর
গুলো তলিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে কৃষকদের গর্বাদি পশুলো পানির দামে বাজারে
বিক্রি করছেন তারা। ওই এলাকায় মানুষের খাদ্যই নেই আবা গর্বাদি পশুর খাদ্য
আসবে কোথায় থেকে। এলাকার কৃষকদের দঃখ্য ধুর্দশার ও বিমামহীম থান্দা এবং
তাদের দুঃখ্য দুর্দশার কথা লিখে শেষ করার মতো নয়। দুর্গত উপজেলা ঘোষনার
দাবিতে ধর্মপাশা প্রেসক্লাব, মুক্তিযুদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠনের
মানববন্দন অব্যহত রয়েছে।
No comments