ভয়াবহ খাদ্য সংকটের আশঙ্কায় জাতিসংঘ

আগামী বছর বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ খাদ্য সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেনসহ অন্য দেশগুলোতে খাদ্যের উৎপাদন ও মজুদ ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় এমন বিপর্যয়ের কথা ভাবা হচ্ছে। দেশগুলোতে খাদ্য মজুদের পরিমাণ ১৯৭৪ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন অবস্থায় রয়েছে।


তীব্র দাবদাহ ও খরায় যুক্তরাষ্ট্রে এ বছর ফলন কম হয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, দেশটিতে আগামী বছর ভুট্টার উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণ ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ কম হবে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ আবদুল রেজা আব্বাসিয়ান বলেন, 'প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্য ফলাতে পারছি না আমরা। ফলে মজুদ কমছে। সরবরাহেও টানাপড়েন চলছে। সামনের বছরের কোনো অপ্রত্যাশিত দুর্যোগের জন্য খাদ্য মজুদ রাখার সুযোগই থাকছে না।'
গম বা ভুট্টার মতো খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এসব পণ্যের দাম বাড়ায় ২০০৮ সালে ২৫টি দেশে দাঙ্গা বেধে যায়। এখনকার দামও প্রায় ওই সময়ের কাছাকাছি। এর ওপর গত বছরের তুলনায় গমের ফলনও পাঁচ দশমিক দুই শতাংশ কমেছে। ধান ছাড়া উৎপাদন কমেছে প্রায় সব ফসলেরই। এফএওর দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, বিশ্বের প্রায় ৮৭ কোটি লোক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোতে খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ বেশি।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন-ভিত্তিক আর্থ পলিসি রিসার্চ সেন্টারের সভাপতি লেসটার ব্রাউন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, 'বিশ্বের খাদ্য সরবরাহব্যবস্থা যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। কোটি কোটি লোক ক্ষুধার যন্ত্রণায় কষ্ট পাবে, দাঙ্গা বাধবে ও সরকারগুলোর পতন ঘটবে।' তিনি বলেন, আবহাওয়ার স্বাভাবিক নিয়মের ওপর নির্ভর করা যায় না। খাদ্যের চাহিদা এত দ্রুত বাড়ছে যে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী।
গত ১১ বছরের মধ্যে এবার ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বে প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণ খাদ্য উৎপন্ন হয়েছে। চরমভাবাপন্ন আবহাওয়াই এর জন্য দায়ী। ব্রিটেন-ভিত্তিক সাহায্য সংস্থা অঙ্ফাম গত সপ্তাহে জানায়, আগামী ২০ বছরে চাল-আটার মতো প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম অন্তত দ্বিগুণ বাড়বে। যা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ভয়াবহ দুর্ভোগ ডেকে আনবে। সূত্র : গার্ডিয়ান।

No comments

Powered by Blogger.