রামু নিয়ে রাজনীতি-দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে
বিগত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রাতে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের কয়েকটি বৌদ্ধপল্লী ও বৌদ্ধবিহারে দুষ্কৃতকারীদের হামলা ও অগি্নকাণ্ডে বাংলাদেশের জন্য যে লজ্জা ও কলঙ্কের অধ্যায় রচিত হয়েছে, তা থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ আপাতত নেই।
ওই কলঙ্কময় ঘটনার ভেতর দিয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মনে যে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে শুকাবে না। এতে সংখ্যালঘুদের মধ্যে যে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতেও সময় লাগবে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া, নিরাপত্তা বোধ সৃষ্টি রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব। বিশেষ করে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের উপদ্রুত এলাকায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ তৈরির কাজটি রাষ্ট্রীয়ভাবে করতে হবে। এ জন্য সরকার ও বিরোধী দল উভয়েরই সমান দায়িত্ব রয়েছে। অথচ তা না করে ওই ঘটনার জন্য সরকার ও বিরোধী দল পরস্পরকে দোষারোপ করছে। বিরোধী দল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত রিপোর্টও দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। একটি নাগরিক কমিটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। বিএনপির প্রতিবেদনেও এ দাবিটি রয়েছে। অন্যদিকে রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ার ঘটনা নিয়ে বিচারিক কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। একই সঙ্গে সরকার ও বিরোধী দলের নেতাদের দেওয়া বক্তব্য ১৬১ ধারায় জবানবন্দি হিসেবে গ্রহণের আবেদনও করা হয়েছে।
যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে তা পরিকল্পিত বলে এখন নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর এই হামলা যে পূর্বপরিকল্পিতই ছিল, আক্রমণের ধরন দেখে তা বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। যে সম্প্রদায়ের লোকজন সেখানে পুরুষানুক্রমিকভাবে বসবাস করে আসছে, যেখানে সম্প্রীতির এক নিগূঢ় বন্ধন রচিত হয়েছে অনেক আগেই, সেখানে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালানোর নেপথ্যে প্রকৃত কী কারণ থাকতে পারে, স্বাভাবিক বোধসম্পন্ন মানুষ তা বুঝতে অপারগ নয়। ঘটনা ঘটার আগে ব্যবস্থা না নিয়ে পরে সরকার এবং প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা সেখানে ছুটে গেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে ট্রাকে মানুষ বহন করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই ট্রাকচালককে আটক করা হয়েছে। কিন্তু এর পরও কি সেখানকার ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের ভেতর আস্থা ফিরে এসেছে? নতুন আতঙ্ক পেয়ে বসেছে তাদের।
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা এখন সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের প্রধান নাগরিক দায়িত্ব। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, হামলার দায়িত্ব একে অন্যের ওপর চাপিয়ে চলছে দলীয় রাজনীতির নোংরা কাদা ছোড়াছুড়ি। মনে রাখা দরকার, বৌদ্ধপল্লী ও বৌদ্ধবিহারগুলোতে হামলা করে শুধু যে স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তা-ই নয়, বরং আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকেও ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। বৌদ্ধবিহারে আগুন লেগে পুড়ে গেছে ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনেক নিদর্শন, যেগুলো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। কিন্তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে ইতিহাস আমাদের আছে, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তা হয়তো পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর চাপানউতোরই এখন এর প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকার ও বিরোধীনির্বিশেষে রাজনৈতিক দল এবং সব সামাজিক শক্তিকে পরস্পরকে দোষারোপ না করে নিজেদের উদ্যোগে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। যা আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নেই। কিন্তু অতীতের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এটুকু বলা যায়, রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ার ঘটে যাওয়া ঘটনার পর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বৃহত্তর রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা, নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা যাবে না। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে দোষারোপের প্রবণতা পরিহার করে সহনশীলতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সরকারকেও রাজনৈতিক ফায়দা ওঠানোর পরিবর্তে পালন করতে হবে দায়িত্বশীল ভূমিকা। অন্যথায় এ দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়বে।
যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে তা পরিকল্পিত বলে এখন নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর এই হামলা যে পূর্বপরিকল্পিতই ছিল, আক্রমণের ধরন দেখে তা বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। যে সম্প্রদায়ের লোকজন সেখানে পুরুষানুক্রমিকভাবে বসবাস করে আসছে, যেখানে সম্প্রীতির এক নিগূঢ় বন্ধন রচিত হয়েছে অনেক আগেই, সেখানে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালানোর নেপথ্যে প্রকৃত কী কারণ থাকতে পারে, স্বাভাবিক বোধসম্পন্ন মানুষ তা বুঝতে অপারগ নয়। ঘটনা ঘটার আগে ব্যবস্থা না নিয়ে পরে সরকার এবং প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা সেখানে ছুটে গেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে ট্রাকে মানুষ বহন করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই ট্রাকচালককে আটক করা হয়েছে। কিন্তু এর পরও কি সেখানকার ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের ভেতর আস্থা ফিরে এসেছে? নতুন আতঙ্ক পেয়ে বসেছে তাদের।
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা এখন সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের প্রধান নাগরিক দায়িত্ব। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, হামলার দায়িত্ব একে অন্যের ওপর চাপিয়ে চলছে দলীয় রাজনীতির নোংরা কাদা ছোড়াছুড়ি। মনে রাখা দরকার, বৌদ্ধপল্লী ও বৌদ্ধবিহারগুলোতে হামলা করে শুধু যে স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তা-ই নয়, বরং আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকেও ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। বৌদ্ধবিহারে আগুন লেগে পুড়ে গেছে ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনেক নিদর্শন, যেগুলো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। কিন্তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে ইতিহাস আমাদের আছে, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তা হয়তো পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর চাপানউতোরই এখন এর প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকার ও বিরোধীনির্বিশেষে রাজনৈতিক দল এবং সব সামাজিক শক্তিকে পরস্পরকে দোষারোপ না করে নিজেদের উদ্যোগে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। যা আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নেই। কিন্তু অতীতের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এটুকু বলা যায়, রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ার ঘটে যাওয়া ঘটনার পর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বৃহত্তর রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা, নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা যাবে না। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে দোষারোপের প্রবণতা পরিহার করে সহনশীলতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সরকারকেও রাজনৈতিক ফায়দা ওঠানোর পরিবর্তে পালন করতে হবে দায়িত্বশীল ভূমিকা। অন্যথায় এ দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়বে।
No comments