মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও নানা পদের কর্মকর্তারা যে কারণে পদত্যাগ করেন না by সিমু নাসের
বনের নাম সুন্দরবন। যে আমলের কথা বলছি, তখন এই বনে বাঘ, ভালুক, সিংহ, জিরাফ, হাতি, জেব্রা, ঘোড়া, গন্ডার, বনমোরগ, হরিণ—সবই ছিল। আসলে ছিল না এমন কোনো প্রাণী নেই; শুধু শিয়াল ছাড়া। শিয়ালরা তখন সুন্দরবন থেকে বহুদূরের এক বনে বাস করত।
সেটা ছিল শিয়ালরাজ্য। সে রাজ্যে শিয়াল ছাড়া আর থাকত শুধু বনমোরগ। একটি-দুটি নয়, একেবারে হাজার হাজার বনমোরগ। কিন্তু শিয়ালরা সেই বনমোরগ খেয়ে খেয়ে একদিন শেষ করে ফেলল। দুর্ভিক্ষের সূত্র অনুযায়ী খাদ্যের অভাবে সেই বনে দুর্ভিক্ষ নেমে এল। শিয়ালরাজ্যের টেলিভিশনে ‘বাঁচতে হলে খাইতে হবে’ বিজ্ঞাপন দেখে শিয়ালরা খাদ্যের সন্ধানে দলে দলে বন ত্যাগ করা শুরু করল।
তেরো নদী সাঁতরে ওয়ান ফাইন মর্নিং সেই বনের এক শিয়াল এসে পৌঁছাল সুন্দরবনে। সুন্দরবনে তখন নির্বাচনের ডামাডোল। নির্বাচন কমিশনে রাজ্যের বাঘ-সিংহ টাইপের নেতারা নমিনেশন ফরম পূরণ করে দিচ্ছে। শিয়ালও সুযোগ বুঝে একটা ফরম পূরণ করে ফেলল। তারপর মিষ্টি মিষ্টি কথা দিয়ে ভোটারদের মন জয় করে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় চলে এল। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শিয়াল যোগ দিল সিংহ সরকারের পাঁচদলীয় মহাজোটে। মন্ত্রণালয় ভাগের সময় শিয়ালকে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রথম একটা বছর ভালোয় ভালোয় কাটল। দ্বিতীয় বছরে জঙ্গলের ভাও বুঝে নিয়ে শিয়াল শুরু করল তার চালাকি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শিয়াল বনের এ-মাথা থেকে ও-মাথা দিন-রাত ঘুরে বেড়ায়, প্রয়োজনে দৌড়ে বেড়ায়। তিন বছরের মাথায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সে তিন ডজন কুমিরের বাচ্চা, শ দেড়েক বনমোরগ, শ পাঁচেক বুনো হাঁস ও দেড় শ খরগোশ সাবাড় করে ফেলল। চারদিকে শুরু হলো গুঞ্জন। কুমির, বনমোরগ, হাঁস আর খরগোশের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ল দাবানলের মতো। তারা সবাই গিয়ে বিচার চাইল রাজা বাঘের কাছে। বাঘ সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে খুব ক্ষুব্ধ হলেন। শিয়ালকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন এক্ষুনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে।
শিয়াল বাঘের পায়ে উপুড় হয়ে পড়ল। বলল, ‘হুজুর, আমার পদটা আমার থেকে কেড়ে নেবেন না। এই পদ ছাড়া আমি কীভাবে বাঁচব।’ কিন্তু তার কথায় কর্ণপাত না করে রাজা বাঘ নির্দেশ দিলেন শিয়ালের পদ কেড়ে নিতে। সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান এসে শিয়ালের চারটা পদ খুলে নিয়ে চলে গেলেন।
পদহীন অবস্থায় শিয়াল একেবারে অথর্ব হয়ে গেল। একটা গুহায় সে সারা দিন চুপচাপ বসে থাকে। সামনে দিয়ে শিকার চলে গেলেও পায়ের অভাবে সে ছুটতে পারে না, তাকে ধরতে পারে না, খেতে পারে না। না খেয়ে খেয়ে শিয়াল একেবারে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। ঘনিয়ে এল তার মৃত্যুর সময়। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগে আগে শিয়াল দিয়ে গেল এক মহান বাণী, ‘পদ ত্যাগ করলে খাওয়া যায় না।’
তেরো নদী সাঁতরে ওয়ান ফাইন মর্নিং সেই বনের এক শিয়াল এসে পৌঁছাল সুন্দরবনে। সুন্দরবনে তখন নির্বাচনের ডামাডোল। নির্বাচন কমিশনে রাজ্যের বাঘ-সিংহ টাইপের নেতারা নমিনেশন ফরম পূরণ করে দিচ্ছে। শিয়ালও সুযোগ বুঝে একটা ফরম পূরণ করে ফেলল। তারপর মিষ্টি মিষ্টি কথা দিয়ে ভোটারদের মন জয় করে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় চলে এল। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শিয়াল যোগ দিল সিংহ সরকারের পাঁচদলীয় মহাজোটে। মন্ত্রণালয় ভাগের সময় শিয়ালকে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রথম একটা বছর ভালোয় ভালোয় কাটল। দ্বিতীয় বছরে জঙ্গলের ভাও বুঝে নিয়ে শিয়াল শুরু করল তার চালাকি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শিয়াল বনের এ-মাথা থেকে ও-মাথা দিন-রাত ঘুরে বেড়ায়, প্রয়োজনে দৌড়ে বেড়ায়। তিন বছরের মাথায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সে তিন ডজন কুমিরের বাচ্চা, শ দেড়েক বনমোরগ, শ পাঁচেক বুনো হাঁস ও দেড় শ খরগোশ সাবাড় করে ফেলল। চারদিকে শুরু হলো গুঞ্জন। কুমির, বনমোরগ, হাঁস আর খরগোশের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ল দাবানলের মতো। তারা সবাই গিয়ে বিচার চাইল রাজা বাঘের কাছে। বাঘ সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে খুব ক্ষুব্ধ হলেন। শিয়ালকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন এক্ষুনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে।
শিয়াল বাঘের পায়ে উপুড় হয়ে পড়ল। বলল, ‘হুজুর, আমার পদটা আমার থেকে কেড়ে নেবেন না। এই পদ ছাড়া আমি কীভাবে বাঁচব।’ কিন্তু তার কথায় কর্ণপাত না করে রাজা বাঘ নির্দেশ দিলেন শিয়ালের পদ কেড়ে নিতে। সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান এসে শিয়ালের চারটা পদ খুলে নিয়ে চলে গেলেন।
পদহীন অবস্থায় শিয়াল একেবারে অথর্ব হয়ে গেল। একটা গুহায় সে সারা দিন চুপচাপ বসে থাকে। সামনে দিয়ে শিকার চলে গেলেও পায়ের অভাবে সে ছুটতে পারে না, তাকে ধরতে পারে না, খেতে পারে না। না খেয়ে খেয়ে শিয়াল একেবারে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। ঘনিয়ে এল তার মৃত্যুর সময়। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের আগে আগে শিয়াল দিয়ে গেল এক মহান বাণী, ‘পদ ত্যাগ করলে খাওয়া যায় না।’
No comments