হলমার্ক কেলেঙ্কারি- সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার ব্যবস্থাপক গ্রেপ্তার

হলমার্ক কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার বরখাস্ত হওয়া ব্যবস্থাপক এ কে এম আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গতকাল রোববার রমনা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। হলমার্ক গ্রুপকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করার দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।


এদিকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির অর্থ আদায়ে একাধিক আইনজ্ঞের মতামত নিচ্ছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে যেসব জামানত ব্যাংকের হাতে রয়েছে, তার যাচাই-বাছাই চলছে। এ জন্য ১২টি ভূমি জরিপ প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ গত ৩০ সেপ্টেম্বর হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদ ব্যাংকের এমডিকে চিঠি দিয়ে দুই হাজার ৬৫৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকার দায় স্বীকার করেন, যার মধ্যে এলসি-জাতীয় অর্থাৎ নন-ফান্ডেড দায় হচ্ছে দুই হাজার ১৩৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা আর ঋণ বা ফান্ডেড দায় হচ্ছে ৫৩১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। চিঠিতে তানভীর মাহমুদ বলেন, ব্যাংকের কাছে তাঁদের বন্ধক দেওয়া জমির পরিমাণ পাঁচ হাজার ৯৯৬ শতাংশ বা প্রায় ৬০ একর। এই জমির বাজারমূল্য দুই হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। আর জমির ওপর যেসব স্থাপনা অর্থাৎ হলমার্ক গ্রুপের দালান ও যন্ত্রপাতি রয়েছে, সব মিলিয়ে বন্ধকি সম্পত্তির মূল্য দাঁড়াবে তিন হাজার ৯১ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
সোনালী ব্যাংক সূত্র জানায়, তারা আগে ফান্ডেড দায়গুলো আদায়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করতে চাইছে। তবে সবই নির্ভর করছে তাদের আইনজীবীদের পরামর্শের ওপর।
এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রদীপ কুমার দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘টাকা আদায়ের জন্য করণীয় নির্ধারণে আমরা আইনজ্ঞের মতামত নিচ্ছি। আর আমাদের ভূমি জরিপকাজও চলছে। এসবের ভিত্তিতে কী প্রক্রিয়ায় এগোনো যায়, তা ঠিক করা হবে।’
হলমার্কের এমডি তানভীর মাহমুদ ও মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদকে ৭ অক্টোবর র‌্যাব গ্রেপ্তার করে। এর আগে ১ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখায় এক বৈঠকে আরও পাঁচ কোম্পানির সঙ্গে হলমার্ক প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকেন।
সেখানেও সব কোম্পানিকেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, সহায়ক জামানত, ব্যাংকের কাছে নেওয়া অর্থের অন্তত ২৫ শতাংশ শিগগিরই জমা করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়, যদি কোম্পানিগুলো দুদকের মামলার আগেই ২৫ শতাংশ অর্থ জমা করে এবং কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় জামানত নিশ্চিত করে তবে সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে কথা বলে বাকি অর্থ পরিশোধের একটা নতুন তফসিল করে দেওয়ার চেষ্টা করবে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

No comments

Powered by Blogger.