যুদ্ধ হলো শুরু- বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করুন

হ্যাঁ ভাই, যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ নয়; ট্রেন, বাস কিংবা লঞ্চের টিকিট পাওয়ার যুদ্ধ। ঈদে বাড়ি যাওয়ার যুদ্ধ। এরই মধ্যে যুদ্ধের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। টিকিটের দাম বাড়িয়ে বিক্রেতারা প্রস্তুত, প্রস্তুত কালোবাজারিরাও।


কঠিন এই যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য বিভিন্ন কাউন্টার, টার্মিনালে গেরিলা যোদ্ধার মতো পজিশন নিয়েছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। টিকিট কেনার লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁরা সতর্ক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছেন যেন লাইনের মাঝখানে বেআইনিভাবে কেউ ঢুকে পড়তে না পারে। ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের চরম ভোগান্তি, টিকিটের জন্য লম্বা লাইন, টার্মিনালগুলোতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়’ টাইপের রিপোর্ট নিয়ে প্রস্তুত ডজনখানেক টিভি চ্যানেলও। অনেকের ধারণা, শিয়াল যেভাবে একই কুমিরের বাচ্চা বারবার দেখায়, টিভি চ্যানেলগুলো বারবার দেখায় এই একই রিপোর্ট। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে মোক্ষম ও কার্যকর অস্ত্র বারবার ব্যবহার ব্যবহার করা যেতেই পারে। এতে দোষের কিছু নেই। যুদ্ধ ঠেকাতে এরই মাঝে অগ্রিম টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন অগ্রিম টিকিট বিক্রি করায় আনন্দ মিছিল ও নিজেদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেছে কালোবাজারির দল। তারা আগেই বিপুলসংখ্যক টিকিট কিনে নিজেদের দখলে নিয়ে কৃত্রিম টিকিট সংকট তৈরি করবে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। তবে কর্তৃপক্ষ চাইলেই টিকিট নিয়ে সৃষ্ট এই যুদ্ধ ঠেকাতে পারত বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তাঁদের ধারণা, বাস, ট্রেন, লঞ্চ প্রভৃতি যানবাহনে কোনো টিকিট না থাকলে টিকিট নিয়ে এত ঝামেলাই হতো না। তা হলে আর কাউকে অগ্রিম টিকিট কিনতে হতো না, বন্ধ হতো টিকিটের কালোবাজারি, দুর্নীতি। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা উল্লেখ করেছেন ঢাকার কিছু বাসের কথা। টিকিট নিয়ে নানা রকম ঝামেলা হওয়ায় টিকিট ব্যাপারটাই উঠিয়ে দিয়েছে এই বাস কোম্পানিগুলো। নো টিকিট, নো কাউন্টার, নো ঝামেলা। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টির প্রতি কড়া নজর দেওয়া। সে পর্যন্ত যাঁরা টিকিটের যুদ্ধে লড়ছেন, তাঁদের সংগ্রামী লাল সালাম। বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করতে থাকুন। তা না হলে কিন্তু ঈদে বাড়ি যাওয়া হবে না। যাই হোক, কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। কথায় টিকিট মেলে না। তা ছাড়া আমাকে আবার বাস টার্মিনালে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে। অতএব, বিদায়।

No comments

Powered by Blogger.