সাদাসিধে কথা-দুঃখ লজ্জা এবং ক্ষোভ by মুহম্মদ জাফর ইকবাল

কয়দিন থেকে মনটা খুব খারাপ_ শুধু আমার নয়, আমার ধারণা পুরো দেশের প্রায় সব মানুষেরই মন খারাপ। একজন নয় দু'জন নয়_ প্রায় আট-দশ হাজার মানুষ এসে শতবর্ষের পুরনো ঐতিহ্যবাহী বারোটি বৌদ্ধবিহার পুড়িয়ে দিয়ে গেল? যার অর্থ এই দেশে অন্তত আট-দশ হাজার মানুষ আছে যারা বিশ্বাস করে ভিন্নধর্মাবলম্বী মানুষের উপাসনালয় পুড়িয়ে দেওয়া যায়।


যারা পুড়িয়েছে তারা নাকি বেশিরভাগই তরুণ, যে বয়সে বুকের ভেতর স্বপ্ন জন্ম নেয়, মানুষের জন্য ভালোবাসা জন্ম নেয়, সেই বয়সে তারা এসে এ রকম ভয়ঙ্কর একটি ঘটনা ঘটিয়ে যেতে পারল? শুধু কি উপাসনালয়_ তারা বেছে বেছে শুধু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বাসাও পুড়িয়ে দিয়ে গেছে। সেই বাসায় যারা ছিল শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী তাদের বুকের ভেতর যে আতঙ্ক আর হতাশার জন্ম দিয়ে গেছে এই দেশ কি কখনও তাদের সেই আতঙ্ক আর হতাশা মুছে দিতে পারবে?
ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পর বহুদিন আমি খবরের কাগজ পড়তে পারিনি, সেগুলো জমিয়ে রেখেছি। আমি না পড়লেই তো সেই ভয়ঙ্কর তথ্যগুলো অদৃশ্য হয়ে যাবে না, তাই সাহস সঞ্চয় করে এক সময় একটু একটু করে পড়েছি। পড়ে হতবুদ্ধি হয়ে যাচ্ছি, কিছুতেই হিসাব মেলাতে পারছি না।
ঘটনাটা শুরু হয়েছে ফেসবুকে পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননার একটি ছবি 'ট্যাগ' করা থেকে। পৃথিবীতে ১০০ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে, আমি সেই ১০০ কোটি মানুষের একজন নই (শুনেছি আমার নামে নাকি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে_ আমার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই), তাই ছবি 'ট্যাগ' করা মানে কী আমি জানতাম না। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, আমাকে দেখানোর জন্য কেউ আমার ফেসবুকে একটা ছবি পাঠাতে পারে এবং সেটা স্বাভাবিক নিয়মে আমি তো দেখতেই পাব, আমার 'ফেসবুক বন্ধু'রাও দেখতে পাবে (মনে রাখতে হবে 'বন্ধু' এবং 'ফেসবুক বন্ধু' অনেকটা গণতন্ত্র এবং আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্রের মতো!)। যারা ফেসবুক করে তাদের সবারই চেষ্টা থাকে 'ফেসবুক বন্ধু'দের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য। তাই তারা সবাই যে সত্যিকার বন্ধু এবং কারও মনে কোনো দুরভিসন্ধি নেই সেটা গ্যারান্টি করা খুব কঠিন। কাজেই কোনো একজন 'ফেসবুক বন্ধু' যদি আমার কাছে খুব একটা আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে বসে থাকে, তাহলে আমার অন্যসব 'ফেসবুক বন্ধুরাও' অবাক বিস্ময়ে দেখবে, আমি একটা আপত্তিকর ছবি আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রচার করে বেড়াচ্ছি_ যদিও সেখানে আসলে আমার বিন্দুমাত্র ভূমিকা নেই। রামুতে ঠিক সেরকম একটা ঘটনা ঘটেছিল, একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী তরুণের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কোনো একজন পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননার একটা ছবি ট্যাগ করিয়ে সেটি অন্যদের দেখার ব্যবস্থা করে দিল। তরুণটির 'ফেসবুক বন্ধু' সেই ছবিটি দেখে শুধু নিজেরাই ক্ষিপ্ত হলো না, সেটি অন্যদের দেখিয়ে তাদেরও ক্ষিপ্ত হওয়ার সুযোগ
করে দিল।
এরপরের ঘটনাগুলোর মাঝে অনেক রহস্য। ক্ষিপ্ত মানুষজন শুধু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সেই তরুণের ওপর ক্ষিপ্ত হলো না, তারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সকল মানুষের ওপর ক্ষিপ্ত হলো। এ রকম সময় সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পালন করতে হয় রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে, উত্তেজিত মানুষদের শান্ত করে পুরো অবস্থাটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। কিন্তু আমরা খবরের কাগজে অবাক হয়ে দেখলাম, বিএনপিদলীয় সাংসদ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করলেন। আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ দল, তাদের সরকার তাই সবচেয়ে বড় দায়িত্ব তাদের, তারাও সাচ্চা মুসলমান হওয়ার এই সুযোগটা ছাড়লেন না, তাদের অঙ্গ সংগঠন মিছিল বের করে স্লোগান দিল, 'বড়ূয়াদের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে'। তার চেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য পুলিশদের নিয়ে, তারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের রক্ষা করার চেষ্টা দূরে থাকুক বরং উত্তেজিত মানুষদের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
প্রশাসন, সরকারি দল, বিরোধী দল সবাই যদি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হয়ে যায় তাহলে জামায়াতে ইসলামী, ধর্মান্ধ, রোহিঙ্গা জঙ্গি তারা এই সুযোগটি কেন ছেড়ে দেবে? বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলে হাজার হাজার লোক হাজির করে ফেলল, রীতিমতো উৎসব করে তারা একটি নয়, দুটি নয়, বারোটি বৌদ্ধবিহার পুড়িয়ে দিল। ২০০১ সালে তালেবানরা যখন আফগানিস্তানের বামিয়ানে বৌদ্ধ মূর্তিগুলো ধ্বংস করছিল সেই দৃশ্যটি আমার ভেতরে যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছিল, রামুর ঘটনা তার থেকে অনেক বেশি ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অনেক কষ্টে পাওয়া আমাদের এই দেশটিকে নিয়ে আমাদের কত ভালোবাসা, কত স্বপ্ন, মাত্র কয়েক ঘণ্টার মাঝে সারা পৃথিবীর সামনে আমাদের দেশের মুখে যে কালিমা লেপে দেওয়া হলো সেটি কি আমরা এত সহজে মুছে ফেলতে পারব?
ঘটনা সেখানেই শেষ নয়। আমরা ভেবেছিলাম এ রকম ভয়ঙ্কর একটা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সবাই সতর্ক হয়ে যাবে; কিন্তু হতবাক হয়ে দেখলাম এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে লাগল, পরের দিন উখিয়া আর পটিয়াতে একই ঘটনা ঘটতে লাগল। শুধু বৌদ্ধবিহার নয়, হিন্দু মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া শুরু হয়ে গেল। রাজনৈতিক দলগুলো এই উন্মত্ততা থামানোর কোনো চেষ্টা করছে বলে মনে হলো না। কারণ আমরা অবাক বিস্ময়ে আবিষ্কার করলাম, তারা একে অপরকে গালাগাল করার কাজে লেগে গেল। এর চেয়ে বড় হৃদয়হীন ব্যাপার আর কী হতে পারে?
২. একটা দেশ কেমন চলছে সেটা বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে সেই দেশের সংখ্যালঘুদের দেশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা। তারা যদি মনে করে তারা নিরাপদে আছে, দেশের অন্য দশজন মানুষের মতো তারাও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারছে, তাহলে বুঝতে হবে দেশটা ভালো চলছে। যদি দেখা যায় তাদের ভেতর এক ধরনের হতাশা, অনিশ্চয়তা আর আতঙ্ক তাহলে প্রতি মাসে একটা করে পদ্মা সেতু তৈরি করলেও বুঝতে হবে দেশটি ভালো নেই। আমি নিজে কোনো জরিপ করিনি, কিন্তু তারপরও আমি জানি এই দেশের সংখ্যালঘুরা ভালো নেই। জাতিসংঘে চাকরি করে সেনাবাহিনীর লাখ লাখ টাকা কামাই করতে যেন কোনো অসুবিধা না হয় সেটা নিশ্চিত করার জন্য সরকার যেদিন ঘোষণা দিল এই দেশে আদিবাসী বলে কেউ নেই, সেদিন শুধু আদিবাসীরা নয়, সংখ্যালঘুরাও হতাশায় দীর্ঘশ্বাস ফেলেছে। যে রাজনৈতিক নেতারা আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে বলতে একসময় মুখে ফেনা তুলে ফেলেছেন এখন তারাই যখন চোখের পাতি না ফেলে অম্লান বদলে বলেন, এই দেশে কোনো আদিবাসী নেই, তখন আমি হতবাক হয়ে তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি (যারা এখনও জানে না তাদের মনে করিয়ে দিই, আদিবাসী মানে নয় যারা আদি থেকে বাস করছে, ইংরেজি ওহফবমবহবড়ঁং শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে আদিবাসী শব্দটা ব্যবহার করা হয়, যার অর্থ মূলধারা থেকে আলাদাভাবে থেকে যারা তাদের আদি ঐতিহ্যকে ধরে বেঁচে থাকে)।
এ দেশে সংখ্যালঘুরা যে ভালো নেই তার খুব বড় একটা প্রমাণ কয়দিন আগে পত্রিকায় বের হয়েছিল। সেখানে লেখা হয়েছিল, এই দেশে হিন্দুদের সংখ্যা খুব দ্রুত কমে যাচ্ছে। আমরা সবাই সেই রিপোর্টটি দেখেও না দেখার ভান করেছি, পত্রপত্রিকার কোথাও সেটা নিয়ে কারও আলোচনা বা মন্তব্য চোখে পড়েনি। মনে হয় সবাই ধরে নিয়েছে এরকমই তো হওয়ার কথা। এই দেশে আহমদিয়াদের ওপর নিয়মিত হামলা হয়। গত নির্বাচনে চারদলীয় জোট বিজয়ী হয়ে হিন্দুদের ওপর একটা পৈশাচিক নিপীড়ন চালিয়েছিল, এবারে প্রথমবারের মতো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা হলো, তাহলে কি তাদেরও এই দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কূটকৌশল শুরু হয়েছে? মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর যে নিপীড়ন চলছে, এই দেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ওপর অত্যাচার করে তার একটা বদলা নেব, সেটাই কি উদ্দেশ্য? একটা জিনিস কি কেউ লক্ষ্য করেছে, মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মহান নেতা সারা পৃথিবীতে সম্মানিত, নোবেল বিজয়ী আং সান সু চি কিন্তু তাদের দেশে রোহিঙ্গাদের ওপর যে অত্যাচার হচ্ছে সেই বিষয়ে কখনও মুখ খোলেন না?
৩. আমি আমার সারা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে যে কয়টি সত্য আবিষ্কার করেছি তার একটি মাত্র দুটি শব্দ ব্যবহার করে লিখে ফেলা যায়, সেটি হচ্ছে 'বৈচিত্র্যেই সৌন্দর্য'। আমি এটা প্রথম স্পষ্টভাবে টের পেয়েছিলাম যুক্তরাষ্ট্রে। আমি বেল কমিউনিকেশন্স রিসার্চের যে গ্রুপে কাজ করতাম সেখানে প্রায় সব দেশেরই এক-দু'জন করে লোক ছিল। পৃথিবীর নানা প্রান্তের নানা দেশের মানুষ সবাই যুক্তরাষ্ট্রকে নিজের দেশ হিসেবে গ্রহণ করে মহানন্দে পাশাপাশি বাস করছে। (শুধু আমার মনে হয় কোনো সমস্যা আছে, তা না হলে দেশের আকাশ কালো করে আসা মেঘ, ঝমঝম বৃষ্টি আর ব্যাঙের ডাক শোনার জন্য কেন এত মন কেমন কেমন করত কে জানে!) যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বড় বড় সমস্যা আছে (যেমন সেই দেশের কালো পুরুষ মানুষের বেশিরভাগ জেলে থাকে) তারপরও বলতে হবে এই দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে পাশাপাশি ভিন্ন ভিন্ন (ফরাবৎংরঃু) ধরনের মানুষের বেঁচে থাকা। তারা নিজের দেশের ঐতিহ্য বা কালচারকে ছুড়ে ফেলেনি, সেগুলোকে ধরে রেখেই সবাই মিলে পাশাপাশি বাস করেছে। যারা আমার কথা বিশ্বাস করতে চায় না তাদের বলব সেখানকার চায়না টাউন ঘুরে আসতে। আমার খুব মজা লাগে, যখন দেখি সেখানে আজকাল বাংলা টাউনও তৈরি হতে শুরু করেছে। আমার বুকটা ভেঙে যায় যখন দেখি এই দেশে আমরা আমাদের শিশুদের পুরোপুরি উল্টো জিনিস শিখিয়ে বড় করি, তাদের আমরা শেখাই, 'আমার থেকে ভিন্ন মানে আমার থেকে খারাপ' অথচ সত্যি কথাটি হচ্ছে আমার থেকে ভিন্ন কাউকে পাওয়ার অর্থ হচ্ছে পৃথিবীটাকে আরেকটু সুন্দর করে দেখার একটা সুযোগ।
আমার সবসময় মনে হয়, আমাদের দেশে মানুষের মাঝে বৈচিত্র্য (ফরাবৎংরঃু) বলতে গেলে নেই। আমাদের খুব দুর্ভাগ্য, আমাদের দেশে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন ভিন্ন কালচার, ভিন্ন ভিন্ন গায়ের রঙ, ভিন্ন ভিন্ন চেহারা, ভিন্ন ভিন্ন ভাষার মানুষ খুব কম। তাই যে কয়জন আছে তাদের আমাদের বুক আগলে রাখার কথা, আমাদের লক্ষ্য রাখার কথা তারা যেন তাদের ভাষার চর্চা করতে পারে, তাদের সংস্কৃতিটাকে ধরে রাখতে পারে ও তাদের ধর্ম নির্ভয়ে পালন করতে পারে। আগের প্রজন্মের অনেকেই বড় ধরনের ভুল ধারণা নিয়ে বড় হয়েছে। আমাদের বাচ্চাদের পাঠ্যবইয়ে কিছুদিন আগেও আদিবাসী বা সংখ্যালঘু এমনকি মেয়েদের নিয়ে কী অসম্মানজনক কথা লিখে রাখা হতো, সেটা কি কেউ লক্ষ্য করেছে? আস্তে আস্তে সেগুলো পাল্টানো হচ্ছে, আমার খুব বিশ্বাস করার ইচ্ছা যে আমাদের নতুন প্রজন্ম বড় হবে অনেক উদার মনের, আমরা পৃথিবীর যে সৌন্দর্য দেখতে পারিনি। ভিন্ন ভিন্ন মানুষের মাঝে তারা সেই সৌন্দর্য দেখতে পাবে। রামু, উখিয়া, পটিয়ায় যে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে সেটা যেন এই দেশের মানুষদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, আমাদের আরও অনেক সতর্ক হতে হবে। নতুন প্রজন্মকে একেবারে শৈশব থেকে ভিন্ন ভিন্ন কালচার, ভিন্ন ঐতিহ্যকে সম্মান করা শেখাতে হবে ।
এই দেশে যারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী তারা নিশ্চয়ই তাদের মনের ভেতর একটি গভীর বেদনা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আমি তাদের বলতে চাই, তারা যেন হতাশাগ্রস্ত না হন, রামুর সেই ভয়ঙ্কর রাতেও এমন কিছু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই উন্মত্ত ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। এই দেশে এ রকম অসংখ্য মানুষ আছে, তারাই হচ্ছে এই দেশের শক্তি। এই দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক নয়, আমি নিশ্চিত ছাই হয়ে যাওয়া ফিনিক্স পাখি যেরকম আবার নতুন জন্ম নিয়ে পাখা মেলে দাঁড়ায়, এই দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনাও সেভাবে পাখা মেলে দাঁড়াবে।
মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান যেভাবে পাশাপাশি যুদ্ধ করে বুকের রক্ত দিয়ে দেশটাকে স্বাধীন করেছে, ঠিক সেভাবে আবার সবাই মিলে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে এই দেশ থেকে চিরদিনের জন্য সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে টেনে উপড়ে তুলে ফেলতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশ নামের দেশটিই তো অর্থহীন হয়ে যাবে।
সাদাসিধে কথা ডটকম থেকে লেখাটি নেওয়া।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল : লেখক
অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.