পঞ্চম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ-বাংলাদেশকে রক্ষায় এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে
প্রাকৃতিক দুর্যোগের দিক থেকে বিশ্বে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশই ঝুঁকিপূর্ণ শীর্ষ দশের মধ্যে নেই। বাংলাদেশের চেয়ে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশ চারটি হলো- প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতু, টোঙ্গা, ফিলিপাইন ও গুয়াতেমালা।
'দ্য নেচার কনজারভেন্সি' (টিএনসি) ও 'জার্মান অ্যালায়েন্স ফর ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কার্স'-এর সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান 'ইউনাইটেড ন্যাশনস ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান সিকিউরিটি' (ইউএনইউআইইএইচএস)। গত বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে ঝড়ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগকে বিবেচনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে দেশগুলোর ঝুঁকি কাটিয়ে ওঠার উপায় বা করণীয় সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের নীতিনির্ধারকদের এই প্রতিবেদনের বক্তব্যগুলো সহৃদয় বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।
শুধু আলোচ্য প্রতিবেদনই নয়, বিগত প্রায় এক দশক ধরেই অনেক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে একই রকম ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। জার্মান ওয়াচ, ম্যাপলক্রফটের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় শীর্ষস্থানীয় দেখানো হয়েছে। কোনো কোনো তালিকায় শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। আর জনসংখ্যা বিবেচনা করা হলে দেখা যাবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ এখানেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার মানুষই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু উপকূলীয় এলাকার মানুষকে রক্ষায় আমরা কী করেছি অথবা করছি? নতুন করে উপকূল রক্ষাবাঁধ নির্মাণ তো দূরের কথা, ছয় দশক আগে নির্মিত বাঁধকেও আমরা রক্ষা করতে পারছি না। অথচ দুই দশক আগে বিশেষজ্ঞ কমিটি বাঁধটিকে আরো উঁচু ও শক্ত করে নির্মাণ করার পরামর্শ দিয়েছিল। উপরন্তু সিডর ও আইলাসহ বিভিন্ন সময়ের জলোচ্ছ্বাসে বাঁধের ক্ষতিই হয়েছে বেশি। বিশেষজ্ঞ কমিটি মানুষ ও গবাদিপশুর জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কথা বলেছিল। তাও আমরা করতে পারিনি। নদীগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রতিবছর নদী পার্শ্ববর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দেয় এবং এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। শুধু ফসল নয়, রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এর পরেও নদীখননকে কি যথেষ্ট অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে? নদী, জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষার পানি সব কিছু ভাসিয়ে দেয়। অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ফলে ভূগর্ভের পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। এই শূন্যস্থান পূরণ করতে সাগরের নোনা পানি অব্যাহতভাবে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই দেশের কৃষি ব্যবস্থায় রীতিমতো বিপর্যয় নেমে আসবে। প্রকৃতিতে এমনি আরো অনেক ক্ষতিই হবে, যার পুরোটা এখনো দৃশ্যমান নয়। তাই এসব বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে এই মহাবিপর্যয় মোকাবিলার কোনো উপায়ই থাকবে না। আমাদের রাজনীতিবিদ ও পরিকল্পনাবিদদের প্রতি অনুরোধ, দেশ ও দেশের মানুষের কথা ভাবুন। দূরদর্শী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করুন। চমক দেখানো নয়, স্থায়ী উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলুন। বিপদ মাথার ওপরে নেমে আসার আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
শুধু আলোচ্য প্রতিবেদনই নয়, বিগত প্রায় এক দশক ধরেই অনেক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে একই রকম ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। জার্মান ওয়াচ, ম্যাপলক্রফটের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় শীর্ষস্থানীয় দেখানো হয়েছে। কোনো কোনো তালিকায় শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। আর জনসংখ্যা বিবেচনা করা হলে দেখা যাবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ এখানেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার মানুষই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু উপকূলীয় এলাকার মানুষকে রক্ষায় আমরা কী করেছি অথবা করছি? নতুন করে উপকূল রক্ষাবাঁধ নির্মাণ তো দূরের কথা, ছয় দশক আগে নির্মিত বাঁধকেও আমরা রক্ষা করতে পারছি না। অথচ দুই দশক আগে বিশেষজ্ঞ কমিটি বাঁধটিকে আরো উঁচু ও শক্ত করে নির্মাণ করার পরামর্শ দিয়েছিল। উপরন্তু সিডর ও আইলাসহ বিভিন্ন সময়ের জলোচ্ছ্বাসে বাঁধের ক্ষতিই হয়েছে বেশি। বিশেষজ্ঞ কমিটি মানুষ ও গবাদিপশুর জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কথা বলেছিল। তাও আমরা করতে পারিনি। নদীগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রতিবছর নদী পার্শ্ববর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দেয় এবং এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। শুধু ফসল নয়, রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এর পরেও নদীখননকে কি যথেষ্ট অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে? নদী, জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষার পানি সব কিছু ভাসিয়ে দেয়। অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ফলে ভূগর্ভের পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। এই শূন্যস্থান পূরণ করতে সাগরের নোনা পানি অব্যাহতভাবে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই দেশের কৃষি ব্যবস্থায় রীতিমতো বিপর্যয় নেমে আসবে। প্রকৃতিতে এমনি আরো অনেক ক্ষতিই হবে, যার পুরোটা এখনো দৃশ্যমান নয়। তাই এসব বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে এই মহাবিপর্যয় মোকাবিলার কোনো উপায়ই থাকবে না। আমাদের রাজনীতিবিদ ও পরিকল্পনাবিদদের প্রতি অনুরোধ, দেশ ও দেশের মানুষের কথা ভাবুন। দূরদর্শী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করুন। চমক দেখানো নয়, স্থায়ী উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলুন। বিপদ মাথার ওপরে নেমে আসার আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
No comments