বৌদ্ধপল্লিতে হামলা- অগ্নিসংযোগের অভিযোগে সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কক্সবাজারের রামুর শ্রীকুল গ্রামে আড়াই শ বছরের পুরোনো লালচিং ও সাদাচিং নামের দুটি বৌদ্ধবিহারে অগ্নিসংযোগের দায়ে পুলিশ বেসরকারি টেলিভিশন ‘আরটিভি’র জেলা প্রতিনিধি এস এম জাফরকে (৩৭) শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে।


গতকাল রোববার দুপুরে তাঁকে কক্সবাজার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করে।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রামুর শ্রীকুলের প্রাচীন দুটি বৌদ্ধমন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের দায়ে সাংবাদিক জাফরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগের আগে তিনি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
এস এম জাফর বৌদ্ধমন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর গ্রামে জমিজমা নিয়ে এক বড়ুয়া পরিবারের সঙ্গে বিরোধ ও মামলা-মোকদ্দমা রয়েছে। তা ছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে তাঁর শত্রুতা রয়েছে। তাঁরাই বৌদ্ধমন্দিরে অগ্নিসংযোগকারী হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তার করিয়েছেন। প্রকৃত অর্থে ঘটনার ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত তিনি ( জাফর) বৌদ্ধমন্দির রক্ষার চেষ্টা করেন।
সালামতের লাশ উদ্ধার: রামুর বৌদ্ধমন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে গত ১১ অক্টোবর নিখোঁজ হন সালামত উল্লাহ প্রকাশ সেলিম। গতকাল রোববার সকালে পুলিশ শহরের বাঁকখালী নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। নিহত সেলিম সদর উপজেলার পিএমখালী গ্রামের মৃত মুছা আলীর ছেলে। তিনি পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা।
নিহত সেলিমের স্ত্রী মাদ্রাসাশিক্ষক সফিকা বেগম বলেন, গত ১০ অক্টোবর রাতে গোয়েন্দা পুলিশ মন্দির হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধাওয়া করে তাঁকে নদীতে ফেলে দেয়। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আকতার বলেন, মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ভিডিও ফুটেজ ও ডিজিটাল ছবি দেখে পুলিশ সেলিমকে শনাক্ত করে। গত ১০ অক্টোবর রাতে তিনি পুলিশের গাড়ি দেখে আরেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে বাঁকখালী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন। গতকাল নদীর পাড় থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে।

No comments

Powered by Blogger.