১০ সুপারিশ টিআইবির

সংসদ সদস্যদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে ১০টি সুপারিশ করেছে টিআইবি। এগুলোর মধ্যে আছে- সংসদে একটানা সাত দিনের বেশি অনুপস্থিতি নিষিদ্ধ করা, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন, বিতর্কিত সংসদ সদস্যদের দল থেকে বহিষ্কার, পরবর্তী নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার ঘোষণা এবং আর্থিক ও অন্যান্য তথ্য প্রকাশ করা।


সংসদে কার্যকর অংশগ্রহণ বাড়ানোর সুপারিশ করে টিআইবি বলেছে, সংসদ সদস্যদের স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসনিক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন থেকে সরিয়ে আনতে হবে। এতে তাঁরা সাংবিধানিক দায়িত্ব আরো আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করতে পারবেন। এ জন্য প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করে তৃণমূল পর্যায়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সংসদ সদস্যদের সম্পৃক্ততা বন্ধ করতে হবে।
এ ছাড়া সংসদে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া সর্বোচ্চ ৩০ দিন এবং একটানা সাত দিনের বেশি অনুপস্থিতি নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে। টিআইটি বলেছে, বিরোধী দলের কার্যকর ও ন্যায়ভিত্তিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন, দল থেকে ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগ এবং পরবর্তী নির্বাচনে একই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে নির্বাচনের সুযোগ করে দিতে হবে। সরকারি হিসাবসম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিসহ অন্তত ৫০ শতাংশ সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে নির্বাচন করতে হবে। সংশোধন করতে হবে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ। অনাস্থা প্রস্তাব, জাতীয় বাজেট ও জাতীয় নিরাপত্তা-সংক্রান্ত কিছু বিষয় ছাড়া অন্যান্য যেকোনো বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।
সংসদ সদস্যদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার উপায় হিসেবে তাঁদের জন্য জাতীয় সংসদে উত্থাপিত 'আচরণবিধি' বিল আইনে পরিণত করার সুপারিশ করেছে টিআইবি। সংস্থাটি বলেছে, তাঁদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি তাঁদের নিজ রাজনৈতিক দল থেকেও শক্তিশালী ভূমিকা নিতে হবে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সংসদ সদস্যদের দল থেকে বহিষ্কার এবং পরবর্তী নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার ঘোষণা দিতে হবে। প্রত্যাশিত পর্যায়ে কাজ না করার জন্য সংসদ সদস্যকে প্রত্যাহার, গণভোট বা বিশেষ উদ্দেশ্যে সাধারণ সভা করার বিধান করতে হবে। তাঁদের আর্থিক (আয়-ব্যয়, সম্পদ, ঋণ, আয়কর প্রভৃতি) ও অন্যান্য তথ্য (মামলা, নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়ন বরাদ্দ ব্যবহার প্রভৃতি) নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে। তাঁদের কাছ থেকে জনগণ যেন তথ্য পেতে পারে সে জন্য তথ্য অধিকার আইন সংশোধনেরও সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়াও সুপারিশে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্যদের সংসদ অধিবেশন ও সংসদীয় কমিটিতে অংশগ্রহণ-সংক্রান্ত তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে। তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রার্থীদের সম্পর্কে তুলনামূলক তথ্য প্রকাশ ও প্রচার করতে হবে। এ ছাড়া তাঁদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্থানীয় পর্যায়ে 'জনগণের মুখোমুখি' জাতীয় অনুষ্ঠান করা যেতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.