এই দায়িত্বহীনতার শাস্তি হওয়া উচিত- সারের মান নিয়ে প্রশ্ন

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) আমদানি করা ৪১ হাজার মেট্রিক টন রাসায়নিক সারের গুণগত মান নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তা একটি গুরুতর বিষয়। এই সার আমদানি করা হয়েছে ১৯৩ কোটি টাকা খরচ করে।


টাকাটা গচ্চা যাবে বললে সব বলা হয় না, নিম্ন মানের সার ব্যবহার করে ভালো ফসল পাওয়া যাবে না, তদন্ত কমিটির লোকজনই এমন কথা বলছেন। অর্থাৎ বিসিআইসি রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয় করে বিদেশ থেকে সার আমদানি করে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর বদলে তার উল্টো আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
সার আমদানির প্রক্রিয়ায় বিসিআইসির দায়িত্বহীনতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে গতকাল প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে। আমদানি চুক্তির শর্তানুযায়ী সারের বস্তার গায়ে ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় লেখা ছিল না। তার পরিবর্তে ছিল চীনা ভাষায় লেখা। বিসিআইসির নিযুক্ত সার পরিবহনকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নবাব অ্যান্ড কোম্পানি ও প্রোটন ট্রেডার্স ওই সার পরিবহনে রাজি না হয়ে সারের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুললে বিসিআইসি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে; তদন্ত কমিটি তদন্ত করে মন্তব্য করে, ওই সার ব্যবহার করে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে না। জাহাজ থেকে খালাস করা সার খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়। তারপর সেগুলো নতুন করে বস্তায় ভরা হয়। আগে থেকেই কিছু সার জমাট বাঁধা ছিল, খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় আরও সার জমাট বাঁধে, সেগুলো চূর্ণ করে নতুন করে বস্তায় ভরা হয়। এভাবে সারের গুণগত মান আরও খারাপ হয়ে যায়।
সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়, আমদানি করা মোট ৪১ হাজার মেট্রিক টন সারের মধ্যে ২১ হাজার মেট্রিক টন ইতিমধ্যে ডিলারদের কাছে বিতরণ করা হয়েছে। আগের আনা ২৪ হাজার মেট্রিক টনের বেশির ভাগই এখনো চট্টগ্রামের গুদামে পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, সার জমাট বাঁধলেও গুণগত মান নষ্ট হয় না। এ জন্য শিল্পমন্ত্রী দায়ী করেছেন বিসিআইসিকে। কিন্তু আমরা মনে করি, মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ জরুরি। এই দায়িত্বহীনতার শাস্তি হওয়া উচিত।

No comments

Powered by Blogger.